এজন্য মাহে রমজানে বাংলানিউজের বিশেষ আয়োজন ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। এই আয়োজনের মাধ্যমে ([email protected] ঠিকানায় ইমেইল করে) পাঠক তার রমজান বিষয়ক প্রশ্ন করে জেনে নিতে পারেন উত্তর।
মোছা. মায়া আক্তার, রামপুরা, ঢাকা।
প্রশ্ন: অসুস্থ ব্যক্তির রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ কি-না?
উত্তর: রোজার কারণে যে রোগ বৃদ্ধি পায় কিংবা আরোগ্য লাভে বিলম্ব হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে, সে রোগে রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ।
উল্লেখ্য, ওই আশঙ্কা বাস্তবসম্মত হওয়া যদি একেবারেই সুস্পষ্ট হয় তবে তো কথা নেই, নতুবা একজন অভিজ্ঞ দ্বীনদার চিকিৎসকের মতামতের প্রয়োজন হবে। (আলমুহিতুল বুরহানি ৩/৩৫৯; আদদুররুল মুখতার ২/৪২২)
মো. সুমন, ধলপুর, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
প্রশ্ন: দুর্বল বৃদ্ধ ব্যক্তির রোজা না রখতে পারলে তার ফিদয়া দিতে হবে কি-না?
উত্তর: বার্ধক্যের কারণে রোজা রাখতে সক্ষম না হলে রোজা রাখবে না। এরূপ ব্যক্তির জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদয়া দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৭)
মো. আনোয়ার হোসেন, পাবনা।
প্রশ্ন: রোজা রেখে চোখে সুরমা ব্যবহার করা যাবে কি?
উত্তর: রোজা রেখে চোখে সুরমা ব্যবহার করা, শরীরে তেল মাখা অথবা আতর ইত্যাদির সুঘ্রাণ নেওয়া বৈধ। (সূত্র: বেহেশতি জেওর, খ-৩, পৃষ্ঠা ১০)
আনিসুর রহমান, খুলনা।
প্রশ্ন: রাতে গোসল ফরজ হলে করণীয়?
উত্তর: রাতে গোসল ফরজ হলে সুবহে সাদিকের আগেই গোসল করে নেওয়া উচিত। এরপরও কেউ গোসল না করলে এমনকি সারা দিনও যদি গোসল না করে, তাতে রোজা নষ্ট হবে না। ফরজ গোসলে দেরি করার জন্য পৃথক গোনাহ হবে। (সূত্র: ইলমুল ফিকাহ, খ- ৩, পৃষ্ঠা ৩১)
আসিফ, জুরাইন, ঢাকা।
প্রশ্ন: গলার ভেতরে মশা-মাছি চলে গেলে রোজা নষ্ট হবে না কি-না?
উত্তর: এমনিতেই যদি হঠাৎ করে গলার ভেতরে মশা-মাছি, ধোঁয়া বা ধুলোবালি চলে যায়, তাতে রোজা নষ্ট হবে না। ইচ্ছাকৃতভাবে এমন করলে রোজা ভেঙে যাবে। (সূত্র: ফাতাওয়া আলমগিরি, খ- ১, পৃষ্ঠা ২৯৮)
মো. নজরুল ইসলাম, ফেনী।
প্রশ্ন: নাকের পথ দিয়ে পানি ঢুকলে তাতে কি রোজা নষ্ট হবে?
উত্তর: নাকের পথ দিয়ে পানি ঢুকলে এতে রোজা নষ্ট হবে না। তবে যদি পানি নাক থেকে গলার মধ্যে চলে আসে, তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। (সূত্র: ইমদাদুল ফাতাওয়া, খ- ১, পৃষ্ঠা ১৭২)
মো. রুবেল, বাবুগঞ্জ, বরিশাল।
প্রশ্ন: কুলির পর পানি গিলে ফেললে রোজা ভেঙে কি-না?
উত্তর: কুলি করার পর পানির যে আর্দ্রতা মুখের মধ্যে থেকে যায় তা গিলে ফেলার দ্বারা রোজা নষ্ট হয় না। শর্ত হলো, কুলি করার পর দুয়েকবার মুখের থুথু ফেলে দিতে হবে।
কারণ কুলি করার পরও মুখের ভেতর কিছু পানি থেকে যায়। এভাবে থু থু ফেলে দেওয়ার পরও মুখে পানি অথবা ভেজা কিছু থেকে গেলে তাতে কোনো ক্ষতি নেই। (সূত্র: ইলমুল ফিকাহ, খ- ৩, পৃষ্ঠা ৩২)
মো. ইকবাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ।
প্রশ্ন: জমাকৃত থু থু ও লালা গিলে ফেললে রোজার কোনো ক্ষতি হবে কি?
উত্তর: রোজা অবস্থায় মুখের জমাকৃত থুথু ও লালা গিলে ফেলার কারণে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। দাঁতের ফাঁকে কোনো খাদ্যদ্রব্য আটকে থাকলে তা যদি খিলাল বা জিহ্বা দিয়ে বের করে ফেলা হয়, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না। কিন্তু ওই খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণ যদি একটি বুট অথবা এর চেয়ে বেশি পরিমাণের হয়, তাহলে তাতে রোজা ভেঙে যাবে। (সূত্র: কিতাবুল ফিকহি, খ- ১, পৃষ্ঠা ৯২০)
জবাব প্রদানে: মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী
লেখক: বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৮
এমএ/