ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তারার ফুল

তিন দন্ত্যন সুন্দরী

কামরুজ্জামান মিলু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৪
তিন দন্ত্যন সুন্দরী (বাঁ থেকে) নীলাঞ্জলা নীলা, নাদিয়া আফরিন ও নাজিফা আনজুম / ছবি: নূর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

তিনজনের নামের শুরু ব্যঞ্জনবর্ণের ‘ন’ দিয়ে। তিনজনই ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০১৪’ প্রতিযোগিতার শীর্ষ তিন সুন্দরী।

বলছি নাদিয়া আফরিন, নাজিফা আনজুম এবং নীলাঞ্জলা নীলার কথা। তবে তারা জানতেন না চূড়ান্ত লড়াইয়ে টিকে যাবেন। পুরস্কারজয়ের পর রূপের ঝলক দেখানো এই তিন তরুণী জানালেন নানা গল্প।  

 

বনানীর একটি রিসোর্টে কেটেছে নাদিয়া, নাজিফা এবং নীলার কয়েকমাস। সেখানেই আড্ডা বসেছিল এই তিন সুন্দরীর সঙ্গে। প্রথমেই কথা হলো এবারের আসরের সেরা সুন্দরী ও ‘ফেস অব লাক্স’ মুকুট বিজয়ী নাদিয়ার সঙ্গে। সেরার সুবাদে ১০ লাখ টাকা ও গাড়ি জিতেছেন তিনি। কেমন লাগছে শুনে উত্তরে নাদিয়ার মুখে ছড়িয়ে পড়লো সেই ‘বিউটিফুল স্মাইল’। তিনি হেসে বললেন, ‘এটা আমার কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। তবে আমার আত্মবিশ্বাসের কমতি ছিল না। ঢাকার মিরপুরে বেড়ে উঠেছি আমি। মায়ের অনুপ্রেরণায় এতদূর আসা। তাই প্রতিযোগিতা থেকে পাওয়া অর্থ মাকে দিয়েছি। ’

প্রথমে অবশ্য নাদিয়া ভেবেছিলেন, আর বুঝি এবার সেরা সুন্দরীর মুকুট মাথায় পরা হলো না। কারণ চূড়ান্ত পর্বের দিন প্রথমেই সেরা বিউটিফুল স্মাইল পুরস্কার ওঠে তার হাতে। এরপর যখন ফেস অব লাক্স হিসেবে তার নাম ঘোষণা করতেই অবাক হয়ে যান। নাদিয়ার ভাষ্য, ‘বিউটিফুল স্মাইল খেতাব জেতার পর তো মনে হলো আর হয়তো চ্যাম্পিয়ন হবো না। মনে শঙ্কা জেগেছিল! কিন্তু পরে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি। কারণ চ্যাম্পিয়নের পাশাপাশি অন্য বিভাগে পুরস্কার সম্ভবত এর আগে কেউ পাননি। ’

 

পুরস্কার জেতার পর বিনোদন অঙ্গনে নতুন কাজের পালা শুরু হচ্ছে নাদিয়ার। অনেক প্রস্তাব আসছে। তবে বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করার আগ্রহ আপাতত নেই তার। তিনি কাজ করতে চান বিজ্ঞাপন, নাটক ও গল্পনির্ভর ছবিতে। তার ভাষ্য, ‘আমি এইচএসসির ফল পাওয়ার পর ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়ার চিন্তা বাদ দিয়েছি। কারণ পড়াশোনার পাশাপাশি সমানতালে কাজও করার ইচ্ছা আছে। তাই কাজের চাপে যেন পড়াশোনার কোনো ব্যাঘাত না ঘটে এমন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। ’

 

নাদিয়ার প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী কারা? তার চটপট উত্তর, ‘অপি করিম আপু আর তাহসান ভাইয়ের ভক্ত আমি। এ ছাড়া সুবর্ণা মোস্তফা ম্যাডাম, তিশা আপু, নোবেল ভাইয়ের কাজ ভালো লাগে। তাদের সঙ্গে অভিনয়ের ইচ্ছে আছে। ’

 

‘মনপুরা’ বা ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’- এমন গল্পের ছবিতে কাজের আগ্রহ নাদিয়ার বেশি। সেরা এই সুন্দরী পাকা রাঁধুনিও। রান্না করা তার শখ। মাঝে মাঝে নিজে রান্না করে মা- বাবাকে খাওয়ান। এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ।  

 

‘ফেস অব লাক্স’ অর্থাৎ বাংলাদেশে লাক্সের শুভেচ্ছাদূত হতে যাচ্ছেন নাদিয়া। এর অংশ হিসেবে শিগগিরই একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে দেখা যাবে তাকে। সেই কাজ করার অপেক্ষায় দিন গুনছেন তিনি।  

 

নাদিয়ার কথা শেষ হতেই পাশে এসে দাঁড়ালেন প্রতিযোগিতার প্রথম রানারআপ নাজিফা আনজুম তুষি। সবার কাছে তিনি নাজিফা নামেই পরিচিত। তিনি শুরুতেই বললেন, ‘সবার আগে আমার বাবার (শামসুল হুদার) কাছে কৃতজ্ঞ। তার অনুপ্রেরণা না থাকলে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া হতো না। প্রথম রানারআপ হওয়ায়ও আমি বেশ আনন্দিত। ’

চার বোনের মধ্যে সবার বড় নাজিফা ধানমন্ডি রাইফেলস কলেজের ব্যবসায় শাখা থেকে এবার এইচএসসি দিয়েছেন। মা শিরিন আক্তার ও চার বোনকে নিয়ে ধানমন্ডিতেই শৈশব কেটেছে তার। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে থেকেই ভালো অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন।  

 

নাজিফা বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছোটবেলায় দেখতাম টিভিতে সুন্দরী প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম, আমিও যদি কোনোদিন ওই মঞ্চে উঠতে পারি। তাই নিজের আগ্রহে প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিলাম। নিজের চেষ্টায় আজ এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। ’

বিজ্ঞাপন, নাটক না চলচ্চিত্র কোনটাকে বেশি প্রাধান্য দেবেন? ‘অভিনয় কওে ভালো অভিনেত্রী হতে চাই। বাইরের উৎসবে আমার অভিনীত কোনো চলচ্চিত্র গেছে, এমন স্বপ্ন দেখি। ভবিষ্যতে বিনোদন অঙ্গনে যুক্ত থাকবো। ’

 

এইচএসসি পরীক্ষার ফল বের হলে মিডিয়া স্টাডিজ নিয়ে পড়াশোনা করতে চান নাজিফা। তার ইচ্ছে দেশের বাইরে গিয়ে অভিনয় নিয়ে পড়বেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি অনেক ইতিবাচক, ধৈর্যশীল ও আবেগপ্রবণ। নাদিয়ার মতো তিনিও রান্না করতে পারেন।

সবশেষ কথা হলো এ আসরের সবচেয়ে কম বয়সী প্রতিযোগী ও দ্বিতীয় রানারআপ নীলাঞ্জলা নীলার সঙ্গে। শুরুতেই নিজের সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য দিতে গিয়ে তিনি হাসিমুখে বললেন, ‘আমার অনেক ইচ্ছে বা শখ পূরণ হয়েছে এ প্রতিযোগিতায় এসে। এই যেমন সাঁতার শিখতে পেরেছি। এ ছাড়া নাচ ও অভিনয়ের খুঁটিনাটি বিষয় জেনেছি। ’

 

সিলেটের মেয়ে নীলা এখন উত্তরা ট্রাস্ট কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে মানবিক বিভাগে পড়ছেন। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে তিনিই সবার বড়। বাবা নূরুল আমিন একজন ব্যবসায়ী। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে নীলা বললেন, ‘মায়ের (স্বপ্না) ইচ্ছায় এখানে আসা। স্বপ্ন ছিল বিজয় মুকুট জেতার। তবে যে অবস্থান পেয়েছি, তাতে আমি অনেক খুশি। ’ 

 

নাদিয়ার মতো নীলার হাসিও অনেক সুন্দর। তিনিও ধৈর্যশীল। সবকিছুই ইতিবাচকভাবে নিতে পারেন তিনি। সবশেষে তার মুখ থেকে বেরিয়ে এলো, ‘আমি চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চাই। তবে সেটা হতে হবে ভালো গল্পের ছবি। ’

নাদিয়া, নাজিফা ও নীলার রূপের ঝলক পাখা মেলে জোনাক হয়ে জ্বলেছে। বিনোদনের স্বপ্নিল দুনিয়ায় তাদের উড়ে বেড়ানোর চঞ্চল বাসনা সেরার হাসি এনে দিয়েছে তাদের মুখে। এবার বিজ্ঞাপনচিত্র, নাটক ও চলচ্চিত্রের তাদের মোহনীয়তায় মুগ্ধ হওয়ার পালা।  

 

বাংলাদেশ সময় : ১৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ