রাজধানীর গুলশানে আছে ‘লক্ষীকুঞ্জ’। বাপ্পারাজ ও সম্রাট এখানেই থাকেন।
আড্ডার শুরুতেই বাপ্পারাজ জানিয়ে দিলেন, ‘সম্রাট কিন্তু আমার প্রায় ১৮ বছরের ছোট!’ এমন তথ্য পেলে যে কারও চমকে যাওয়ার কথা। কারণ দেখে এটা বোঝার উপায় কই! বয়সের বিস্তর ফারাক থাকলেও তারা বন্ধুর মতোই। দু’জনের মাঝে আছে অনেক মিল। নেই মনোমালিন্য।
বড় ভাই বাপ্পারাজের সঙ্গে সম্রাট এরই মধ্যে তিনটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘কোটি টাকার ফকির’ (২০০৮), ‘মা আমার চোখের মনি’ (২০১১) এবং ‘কার্তুজ‘। এর আগে অন্য দুটি ছবিতে বাপ্পারাজকে সহশিল্পী হিসেবে পেলেও এবারের হিসেব একটু ভিন্ন। কারণ বড়ভাইয়ের পরিচালনায় অভিনয় করতে হয়েছে প্রথমবার। সে অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো? জানতে চাইলে সম্রাট বাংলানিউজকে বলেন, ‘এটা একটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা। তবে ভাই বলে অভিনয়ে বা পরিশ্রমে কোনো ছাড় দেয়নি ভাইয়া। এটা আমি বেশ উপভোগ করেছি। ছবিতে আমার চরিত্রের নাম আসিফ খান। আমাকে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখতে পাবেন দর্শকরা। ’
এবার ‘কার্তুজ’ প্রসঙ্গ। কার্তুজ মানে কার্টিজ। যেখানে বুলেট স্টোর থাকে একটি পিস্তলে। গল্পটা অ্যাকশন ধাঁচের বলেই এই নাম রেখেছেন বাপ্পারাজ। তবে নামটার প্রস্তাব করেন সম্রাট। তিনি বলেন, ‘এ ছবিতে মুল আর্কষন হিসেবে থাকছে গাড়ি নিয়ে তাড়া। যা বাংলাদেশী কোনো ছবিতে একদমই নতুন। দৃশ্যের প্রয়োজনে অ্যাকশন দৃশ্যগুলো রাখা হয়েছে। তাই সবকিছুতে একটু আলাদা স্বাদ থাকছে। আর মে দিবসে ঢাকার রাস্তা ফাঁকা থাকায় আমরা কার রেস এর দৃশ্য সহজে করতে পেরেছি। বড় পর্দায় দর্শকরা পছন্দ করবেন বলে আশা করছি। ’
এছাড়া বিমানবন্দরে শেষদিকের কাহিনীতেও নানা ক্লাইমেক্স থাকছে। যা বাংলাদেশেল প্রথম কোনো ছবিতে দেখা যাবে বলে মনে হয়। কার্তুজে বাপ্পারাজ পরিচালনার পাশাপাশি সুলতান খান নামে ভিন্ন এক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যেখানে তার লুক ও চরিত্র থাকছে অন্য সকল ছবি থেকে ভিন্ন।
আড্ডার মাঝে এ প্রসঙ্গে বাপ্পারাজ বলেন, ‘পুরো গল্পে আমি রয়েছি। তবে একটা সাসপেন্স কাজ করবে দর্শকদের। কারণ সবার মুখে আমার নাম থাকবে। তবে পর্দায় উপস্থিতি কতটুকু থাকছে, তা এখন বলতে চাই না। আর এ ছবিতে গাড়ি তাড়া করার দৃশ্যে বেশকিছু মডেলের গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে, যা আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রে একদমই নতুন। ’
তিন ক্যামেরায় পুরো কয়েক দিন নিয়ে গাড়ি নিয়ে তাড়ার দৃশ্যধারন করেছেন বাপ্পা। ছবির লোকেশন ছিল ঢাকা, রাঙ্গামাটির পাহাড়ি রাস্তা। পেশাদার কিছু গাড়ীচালকের সঙ্গে এ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যাবে বাপ্পারাজকে। পাশাপাশি সম্রাটকে স্ট্যান্ট ড্রাইভ করতে দেখা যাবে। কাহিনীর উত্তেজনাপূর্ন পরিস্থিতিতে পুরো কার চেইজ করবেন দুই ভাই।
ছবিতে নিজের ভাই কেমন পারফর্ম করেছেন ? এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাপ্পারাজ বলেন, ‘পরিচালক হিসেবে আমি কোনো ছাড় দেয়নি সম্রাটকে। ভালো কাজ করেছে, তবে তাকে আরো ভালো করতে হবে। শুধু এটুকু বলার আছে। ’
ছবিতে নিপুণ (আঁচল), রিক্তা (বুবলি), শিমুল খান (সুনীল সাহা) এবং রাজ্জাক (প্রফেসর আসাদ চৌধুরী) চরিত্রে আরো বিভিন্ন দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। গল্পে কি ধরনের চমক থাকছে ? এ প্রসঙ্গে বাপ্পারাজ বলেন, ‘পুলিশ ফোর্সকে নিয়ে পুরো ছবি কেনো বাংলাছবিতে এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। এখানে নীতিবান পুলিশের পাশাপাশি কাহিনীতে নেতিবাচক চরিত্রেও দেখা যাবে তাদের। আর ছবিতে উল্লেখযোগ্য কিছু ড্রামা দৃশ্য আছে, যেগুলো আজকাল দেখা যায় না। এছাড়া কোন চরিত্র কখন পজিটিভ আবার কখন নেগেটিভ হচ্ছে দর্শক বুঝতে পারবে না সহজে। ’
এ ছবিতে মোট গান থাকছে পাঁচটি। কবির বকুলের লেখা গানগুলোতে কন্ঠ দিয়েছেন মমতাজ, কনা, রন্টি, কিশোর, প্রতীক, রুপম ও আর্শিনা প্রিয়া। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন সাহা। এ ছবির কথা শেষ করতেই বাপ্পারাজ বলে ওঠলেন এরপর নতুন একটি ছবিতে হাত দিবো। নাম ‘তারছেঁড়া’। আমার নির্দেশনায় এ ছবির গল্প আবদুল্লাহ জহির বাবুর থাকলেও সংলাপ থাকবে ছটকু আহমেদ ও আমার।
এ ছবিতে এরইমধ্যে সম্রাটকে অভিনয়ের জন্য নির্বাচন করেছেন বাপ্পারাজ। তবে চিত্রনায়িকার বেলায় দেখা যাবে নতুন মুখ। সবেশেষে আবারো ‘কার্তুজ’ প্রসঙ্গ। কারণ একই দিনে ঢাকার কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে বলিউডের ‘ডন ২‘ ছবিটি।
এ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন সম্রাট, ‘হিন্দি ছবি আমাদের দেশের এ অবস্থায় বাংলা ছবির জন্য অবশ্যই ক্ষতি। কার্তুজ এখন পর্যন্ত হিসেব করা ৬০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে রাজধানীসহ আমরা ঢাকার বাইরে বেশকিছু প্রেক্ষাগৃহ পেয়েছি। আশা করছি, দর্শক গ্রহণ করবে ছবিটি। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৫