মা-বাবার কাছে এখনও অনেক আদরের ছেলেটা। বড় হয়ে যাওয়ার পরেও তাদের কাছে তাদের কাছে সন্তান এখনও ছোট।
এখন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সাতটি ধারাবাহিক নাটকের কাজ করছেন অ্যালেন। প্রচার চলতি নাটকের তালিকায় আছে ‘দোস্ত দুশমন’ (মাছরাঙা), ‘ধন্যি মেয়ে’ (চ্যানেল নাইন) এবং ‘বিন্দু বিসর্গ’। সামনে শুরু হবে ‘থ্রিজি’, ‘কলিং বেল’, ‘পাল্টা হাওয়া’, ‘অভিনয়’ এবং ‘ঝালমুড়ি’।
অ্যালেনের টার্নিং পয়েন্ট অমিতাভ রেজার ‘ইচ্ছে হলো’। তবে তার শুরুটা মঞ্চ দিয়ে। প্রাচ্যনাটের সদস্য তিনি। এতে তার যুক্ত হওয়ার গল্পটা জানতে চান? একদিন বেইলি রোড দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। মহিলা সমিতিতে প্রাচ্যনাটের ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটকের প্রদর্শনী হচ্ছিলো। ৫০ টাকা দিয়ে একটি টিকিট কিনে ঢুকে পড়েন মিলনায়তনে। এরপর জানতে পারেন মঞ্চনাটক সম্পর্কে। প্রদর্শনী শেষে বের হওয়ার সময় লিফলেট পান দলে ভর্তি হওয়ার। তার বাসার কাছেই প্রাচ্যনাটের অফিস, তাই প্রাচ্যনাট স্কুলে ভর্তি হয়ে গেলেন। তারপর যোগ দেন মূল দলে।
যদিও ছেলের নাটক করার ব্যাপারটা পছন্দ করেননি বাবা। এতে অবশ্য দমে যাননি অ্যালেন। ঠিকই এগিয়েছেন। অভিনয়ের মজা কোথায়? ‘অভিনয়ের মজা নাকি জানি না, প্রতিদিন সবকিছু ভুলে হাসি, আবার কাঁদি। আজ ছাত্র, কাল হোটেল বয়, পরদিন বস্তির ছেলে কিংবা আলোকচিত্রী। বিভিন্ন কাল্পনিক চরিত্রে ঢুকে যাচ্ছি কেমন করে যেন! দিন শেষে আমাকে বের হয়ে আসতে হয় কাল্পনিক থেকে বাস্তবে। ’
নানা নাটক-টেলিছবির কাজ করতে গিয়ে ভীতিকর এক স্মৃতি আছে অ্যালেনের। পুরান ঢাকার এক বস্তিতে ‘হলুদ’ নামের একটি নাটকের কাজ করছিলেন। হঠাৎ লক্ষ্য করলেন কয়েকজন না বুঝে কোপাতে আসছে! পরে সামনে এসে ক্যামেরা দেখে নাটকের কাজ হচ্ছে বুঝে থেমে যান তারা। অ্যালেনের প্রিয় কাজের তালিকায় ‘হলুদ’ অন্যতম। অন্যগুলো হলো ‘ইচ্ছে হলো’, ‘অ্যাট এইটিন অলটাইম দৌড়ের ওপর’, ‘মেঘলা’, ‘কেবলই রাত হয়ে যায়’ এবং ‘মেয়েটি বাড়ি যাবে না’। চলচ্চিত্র? ‘চলচ্চিত্রে কাজ করতে চাই। আসলেই চাই। ’
অ্যালেনকে দেখলে মনে হবে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা করছেন। তিনি আসলেই ভাবেন। তাই মাঝে মধ্যে চঞ্চল, আবার তিনি শান্ত। ‘মন এবং শরীর যদি খুব ভালো থাকে তাহলে আমার চঞ্চলতা প্রকাশ পায়। ’ শৈশবে বাসায় একা থাকতেন প্রচুর। তার ছোটবেলা কেটেছে রাজধানীর মগবাজারে। ‘ছোটবেলা থেকেই একা একা কথা বলি। এটা অনেক বাতিকগ্রস্ত একটা বিষয়। এটা আমি এখনও করি। ’
অ্যালেন স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। অভিনয় চালিয়ে যেতে পড়াশোনা করেন। পড়তে ভালোবাসেন তিনি। সামনে এমবিএ করবেন। ডাক পড়েছে ক্যামেরার সামনে ফিরে যাওয়ার। আড্ডার যবনিকাপাত টানার আগে বলে দিলেন, ‘যে কোনো সময় বিয়ে করে ফেলতে পারি। কাছের মানুষকে কাছে রাখতে চাই। ’
বাংলাদেশ সময় : ১৯২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৫