বাবা শুধু একটি শব্দই নয়, নিজের অস্বস্তি, বেদনা, ব্যর্থতা সবকিছু চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যম, একটা বটবৃক্ষ। তবু পৃথিবীর সবচেয়ে অনুচ্চারিত বাক্যটা হলো ‘বাবা তোমাকে ভালোবাসি’।
বাবাই সন্তানের কাছে হিরো, কাছের বন্ধু। বাবার দেওয়া নানান উপদেশ সন্তানদের চলার পথের সঙ্গী। কয়েকজন তারকা জানিয়েছেন বাবার সঙ্গে তাদের স্মৃতি ও বাবার কাছ থেকে পাওয়া উপদেশ।
বাবা আমাকে ডাকতেন ‘বাংলার বাঘ’
আরিফিন শুভ
বাবার সঙ্গে আমার স্মৃতি খুব অল্প। ঝাপসা হলেও সেই সময়গুলো খুব মিস করি। বাবা সবসময় শরীরচর্চা করতে বলতেন। নিয়মিত হাঁটাহাঁটিও করতেন। বেড়ে ওঠার পর থেকে বাবার যেসব কথা মনে আছে সেগুলো মেনে চলি। ছোটবেলা থেকে পড়া খুব ভালো মুখস্ত করতে পারতাম। বাবা আমাকে ‘বাংলার বাঘ’ বলে ডাকতেন।
‘দুঃখ পেলেও ভালো ব্যবহার করা উচিত’
নাদিয়া
বাবাই আমার কাছে হিরো। ছোটবেলা থেকেই তিনি আমাকে বোঝাতেন, পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য যেমন পড়াশোনা করা দরকার, তেমনি বড় হওয়ার জন্য আগে ভালো মানুষ হতে হয়। বাবা সবসময় বলতেন, ‘ভালো মানুষ হও, সৎ থাকো আর সব কাজই মন দিয়ে করা উচিত। ’ বাবা চাইতেন আমি ইঞ্জিনিয়ার হই। আমারও ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু পরে নাচ আর অভিনয়ে ঢুকে পড়ায় হয়ে ওঠেনি। বাবার কাছ থেকে শিখেছি- মানুষের কাছে দুঃখ পেলেও তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা উচিত। তার এই শিক্ষাটা আমার সারাজীবন মনে থাকবে।
এখনও বাবার কথা মেনে চলি
সজল
আমার দেখা সবচেয়ে আধুনিক বাবা আমার বাবা। এমনও হয় অনেক বিষয় হয়তো আমি জানি না, কিন্তু বাবা ঠিকই জানেন। শুধু আমি না, আমরা তিন ভাইবোন ছোটবেলা থেকেই বাবার কথা মেনে চলি। বাবা চাইতেন পড়াশোনা শেষে চাকরি করি। আমি তার চাওয়া পূরণ করেছি। আমি অভিনয়েও ভালোই করছি দেখে বাবা খুশি হয়েছেন। প্রযুক্তিগত যে কোনো সমস্যা হোক বাবার কাছে গেলে তিনি আমার জন্য সঠিক সমাধান খুঁজে দেন।
‘দেশ ছেড়ে কোথাও যাবা না’
বাধঁন
বাবা আমার কাছে আইডল। তিনি কীভাবে খেতেন, কীভাবে মানুষের সঙ্গে কথা বলতেন, ছোটবেলা থেকে এসব বিষয় খুব খেয়াল করতাম। বড় হতে হতে নিজেকে খেয়াল করতেই দেখতাম বাবার মতোই তো হয়েছি! বাবা চাইতেন আমি ডাক্তার হই, আমি তা-ই হয়েছি। ছোটবেলা থেকে বাবা এখনও আমাকে বলেন- ‘ডালভাত খেয়ে থাকবা তবুও দেশ ছেড়ে কোথাও যাবা না। ’ এই কথাটা সবসময় নিজের মধ্যে ধারণ করে চলবো।
বাবা চাইতেন ইঞ্জিনিয়ার হই
এফএস নাঈম
ছোটবেলা থেকে আমি খুব দুষ্ট ছিলাম। এমন দুষ্ট ছেলেকে বাবা-মা শাসন না করে থাকতে পারেন না! তবে বাবা বলতেন, 'আমার এই দুষ্ট ছেলেই একদিন খুব শান্ত হবে, খুব বড় হবে। ' এই কথাটা আমার খুব মনে পড়ে। বাবার কথামতো বড় হয়েছি কি-না জানি না, তবে অনেক শান্ত হয়েছি। বাবা সরকারি চাকরি করতেন তো, তাই প্রতি মাসের ১ তারিখে তিনি আমাদেরকে ভালো রেস্তোরাঁয় খেতে নিয়ে যেতেন। এখন চেষ্টা করি বাবাকে সেভাবে করে খুশি রাখতে। বাবা চাইতেন আমি ইঞ্জিনিয়ার হই। কিন্তু তার এই ইচ্ছা পূর্ণ করতে পারিনি। এই আক্ষেপ রয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০১ ঘন্টা, জুন ১৯, ২০১৬
টিএস/জেএইচ