চাকরির ব্যস্ততা থাকলেও বিশেষ দিন উপলক্ষে নাটক-টেলিছবিতে অভিনয় করেন রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা। গেলো রোজার ঈদের কয়েকটি নাটকে দেখা গেছে তাকে।
নাটকগুলো হলো শিহাব শাহীনের ‘প্রেম কেবলই একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া’, তানিম রহমান অংশুর ‘ফ্লিপার’, মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘কথোপকথন’ ও মাবরুর রশীদ বান্নাহ পরিচালনায় ধারাবাহিক নাটক ‘এ জার্নি টু চিটাগাং’।
অতিথি শিল্পী হিসেবে ছিলেন শিহাব শাহীনের টেলিছবি ‘এক্স ফ্যাক্টর দ্য গেম ওভার’-এ। ঈদের নাটক, বর্তমান ব্যস্ততা ও সংসার নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
বাংলানিউজ: অফিসে ব্যস্ত হয়ে গেছেন আবার?
মিথিলা: হ্যাঁ। ঈদের আগে নাটকের জন্য বেশ কিছুদিন অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিলাম। তার ওপর ঈদে লম্বা ছুটি পেয়েছি। এ কারণে অনেক কাজ জমে গেছে। তাই এখন অফিসের কাজেই ডুবে থাকতে হচ্ছে। আর সব কাজই ভালোবেসে মনোযোগ দিয়ে করি। ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালে কনসালট্যান্ট হিসেবে কর্মরত আছি। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্সে মাস্টার্স করছি। আর মেয়েকে দেখাশোনার দায়িত্ব তো সামলাতেই হয়।
বাংলানিউজ: ঈদে মেয়েকে নিয়ে ঘুরেছেন?
মিথিলা: ইচ্ছে না থাকলেও ওকে নিয়ে কয়েক জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম আমি আর তাহসান। তবে গুলশান ট্র্যাজেডিতে দেশের অবস্থা ভেবে ভালো লাগছিলো না। এ কারণে এবার রান্নাও করিনি। কিন্তু আমাদের মেয়ে আয়রা তো আর এসব বোঝে না। ও এখনও ছোট।
বাংলানিউজ: আয়রা বেশি আবদার করে কার কাছে?
মিথিলা: আয়রা বেশি সময় কাছে পায় আমাকে। ও বোঝে আমার কাছে কখন বায়না ধরবে। বাবার কাছেও আবদার করে সে। মেয়েদের আবদার বাবার কাছেই বেশি থাকে। আয়রাও ব্যতিক্রম নয়।
বাংলানিউজ: আপনি আর তাহসান দাম্পত্য জীবনের দশ বছর পেরিয়েছেন। সুখের সংসারের সূত্রটা কী?
মিথিলা: আসলে ভালো থাকার সূত্র নানারকম হয়। আমি মনে করি, ধৈর্য হলো দাম্পত্য জীবনে সুখের চাবিকাঠি। আমি অনেক ধৈর্যশীল মেয়ে। কিছু ঘটনা থাকে যে ধৈর্য ধরে রাখা মুশকিল মনে হয় সবার কাছে। কিন্তু আমি ধৈর্য ধরতে পারি। আমি হুট করে যেমন রেগে যাই, তেমনি আবার তাড়াতাড়ি রাগ দমেও যায় আমার। এমন করেই আসলে ভালো আছি।
বাংলানিউজ: দশ বছর আগের আর এখনকার ঈদের মধ্যে পার্থক্য কী?
মিথিলা: এখন তো মনে হয় ঈদ পুরোটাই আয়রার জন্য। আগে নিজের জন্য জামা-কাপড় কেনা, সারাদিন কোথায় কোথায় যাবো, এসব ভেবে সময় যেতো। কিন্তু এখন ভাবি আয়রা কি পরবে, ও ঈদে কি করবে। আয়রা প্রচুর ঈদি পায়, তাই এগুলো রাখার জন্য এবার ওকে ছোট একটা ব্যাগ কিনে দিয়েছি। সব মিলিয়ে এখন আমার কল্পনাজুড়ে শুধু আয়রা।
বাংলানিউজ: ঈদে প্রচারিত নিজের নাটকগুলোর মধ্যে কোনটি আপনার কাছে উল্লেখযোগ্য?
মিথিলা: সব নাটকের জন্য পরিশ্রম করেছি। সব কাজই আমার কাছে উল্লেখযোগ্য। তবে তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ‘ফ্লিপার’ নাটকে আমার ভূমিকাটা একটু চ্যালেঞ্জিং ছিলো। কারণ আমার চরিত্রটির চুরির বাতিক থাকে। সে কেনাকাটা করতে গেলে হঠাৎ ক্লিপ ব্যাগে ভরে ফেলে, ফলের দোকানে দোকানির চোখ ফাঁকি দিয়ে ফল নিয়ে চলে যায়। তবে মনের অজান্তে চুরি করে মেয়েটি। বাস্তবে এ ধরনের কাজ কোনোদিন সম্ভব নয় আমাকে দিয়ে, অথচ পর্দায় সেটাই করতে হয়েছে। এ চরিত্রে কাজ করার অভিজ্ঞতা সত্যি মনে রাখার মতো।
বাংলানিউজ: ঈদুল আজহার জন্য কাজ করবেন না?
মিথিলা: কোরবানি ঈদের নাটক নিয়ে কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তবে এখনও কাউকে পাকা কথা দেইনি। কারণ রোজা ও কোরবানি ঈদের মাঝে খুব অল্প সময় থাকে। আমি ফুলটাইম অফিস করি, পড়াশোনা আছে। পরিচালকদের কথা দেওয়ার আগে ভাবতে হয় অফিস, পড়াশোনা, সংসার সামলে নাটক করার সময় পাবো কি-না।
বাংলানিউজ: তাহলে এবার আরও কম কাজ করবেন?
মিথিলা: আগে অনেক কাজ করতাম। এখন কাজ কমিয়ে দিয়েছি। ভবিষ্যতে আরও কম কাজ করবো ভাবছি। নারী হিসেবে আমার প্রথম পরিচয় হওয়া উচিত আমি একজন কন্যা, একজন স্ত্রী ও একজন মা। তারপর আমার অন্যান্য পরিচয়। কিন্তু আমার মনে হয়, বাকি পরিচয়গুলো কন্যা, স্ত্রী ও মায়ের পরিচয়কে ছাপিয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয়, খুব বেশি কাজ করে ফেলছি। তাই কাজ আরও কমাবো। বেশি কাজ মানে বেশি দায়িত্ব। দায়িত্বকে কোনোভাবে এড়ানো যায় না। তাই কাজ কমিয়ে ফেলতে হবে। আমি ব্যক্তি মিথিলাকে হারাতে চাই না।
বাংলানিউজ: ঈদের দুটি নাটকে আপনার গান শুনলাম...
মিথিলা: রোজার ঈদে দুটি নাটকের শিরোনাম-গান গেয়েছি তাহসানের সঙ্গে। এগুলো হলো ‘প্রেম কেবলই একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া’ ও ‘কথোপকথন’। ছোটবেলা থেকে গান শিখেছি। গান আমার ভালো লাগা। তাই মাঝে মধ্যে ভালো লাগলে গাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
টিএস/জেএইচ