দুটি ছবিই ব্লকবাস্টার হওয়ার মতো। ৩০০ কোটি রুপি করে আয়ের সম্ভাবনা আছে উভয় ছবির।
আইটেম গানেও লড়াইটা সমান। ‘রইস’-এর জন্য ১৯৮০ সালের হিট ছবি ‘কুরবানি’র ‘লায়লা ও লায়লা’ গানটি সাজানো হয়েছে নতুন আঙ্গিকে। ‘লায়লা ম্যায় লায়লা’ শিরোনামের গানটির তালে নেচেছেন সানি লিওন।
অন্যদিকে ‘কাবিল’-এর জন্য দুটি কালজয়ী গান তৈরি হয়েছে নতুনভাবে। এর মধ্যে ১৯৮১ সালের ছবি ‘ইয়ারানা’র ‘সারা জামানা’ গানের নতুন সংস্করণ ‘হাসিনো কা দিওয়ানা’র তালে নেচেছেন উর্বশী রাউতেলা। এ ছাড়া ‘জুলি’ (১৯৭৫) ছবির ‘দিল কেয়া কারে’ গানের নতুন সংস্করণ ‘কিসি সে পেয়ার হো যায়ে’ গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন হৃতিক।
রাহুল ধোলাকিয়া পরিচালিত ‘রইস’ ও সঞ্জয় গুপ্তর পরিচালনায় ‘কাবিল’ ভারতজুড়ে সমানসংখ্যক প্রেক্ষাগৃহ পেয়েছে। ফলে লড়াইটা জমবে বেশ। সবশেষ আমির খানের ‘লগান’ ও সানি দেওলের ‘গাদার-এক প্রেম কথা’র একই দিনে (২০০১ সালের ১৫ জুন) মুক্তি পাওয়ার ঘটনায় এমনটি দেখা গিয়েছিলো। কিন্তু সেই সময় ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন আমির। নতুন লড়াইয়ে শাহরুখ নাকি হৃতিক, কে জিতবেন?
‘রইস’ ও ‘কাবিল’ লড়াইয়ে কোনো ছবিকেই যে এগিয়ে কিংবা পিছিয়ে রাখা যাবে না। শাহরুখ ও হৃতিক দু’জনই হিটের জন্য মুখিয়ে আছেন। কারণ গত বছর শাহরুখের ‘ফ্যান’ ও হৃতিকের ‘মহেঞ্জোদারো’ আহামরি ব্যবসা করতে পারেনি।
পরিচালক আর নায়িকার ক্ষেত্রে শাহরুখ ও হৃতিকের নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে। রাহুল ধোলাকিয়ার পরিচালনায় শাহরুখ ও ‘শুটআউট অ্যাট ওয়াদালা’ ও ‘জাজবা’খ্যাত সঞ্জয় গুপ্তর পরিচালনায় হৃতিক আগে কাজ করেননি। এ ছাড়া ‘রইস’-এর মাধ্যমে মাহিরার অভিষেক হচ্ছে বলিউডে। আর হৃতিকের সঙ্গে প্রথমবার জুটি বেঁধেছেন ইয়ামি।
দুটি ছবিতেই আছে ভরপুর অ্যাকশন। ‘রইস’-এর গল্প গুজরাটের অবৈধ মদ ব্যবসায়ী রইস আলমকে ঘিরে। আর ‘কাবিল’-এ দেখা যাবে দৃষ্টিহীন কপোত-কপোতির প্রেম ও প্রতিশোধের গল্প।
সাধারণত শুক্রবারে ছবি মুক্তি পেলেও ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসকে (২৬ জানুয়ারি) সামনে রেখে বুধবারে মুক্তি দেওয়া হলো ‘রইস’ ও ‘কাবিল’। এখানেই মূলত লেগে গেছে সংঘর্ষ! এই অপ্রত্যাশিত লড়াইয়ের চিত্রনাট্যটা ছিলো অন্যরকম।
গত বছর রোজার ঈদে সালমান খানের ‘সুলতান’ ও শাহরুখের ‘রইস’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিলো। শেষ পর্যন্ত তা দুই পক্ষের সমঝোতার সুবাদে এড়ানো গেছে। খান বনাম খানের পরিবর্তে লড়াইটা হয়ে গেছে শাহরুখ বনাম হৃতিক।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা করা হয় পরের বছরের জুলাইয়ে মুক্তি পেতে পারে ‘রইস’। সমস্যা ছিলো, ততোদিনে ঈদ বুকিং দিয়ে রেখেছে ‘সুলতান’। তবুও ২০১৫ সালের জুনে ‘রইস’-এর প্রযোজক রিতেশ সিধওয়ানি টুইটারে জানিয়ে দেন, মুক্তির তারিখ বদলাবেন না। তবে গত বছরের এপ্রিলে নিশ্চিত করা হয় পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে ‘রইস’। শাহরুখ তখন বলেছিলেন, ‘ঈদটা সালমানের জন্য। ’
এরপর ‘রইস’ মুক্তির জন্য ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি নির্ধারণ করে চমকে দেন প্রযোজকদ্বয় ফারহান আখতার ও রিতেশ সিধওয়ানি। সাধারণত শাহরুখের নতুন ছবির জন্য দিওয়ালিকেই বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু দিওয়ালিতে করণ জোহরের ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ আসবে বলে এ উৎসবকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তার ওপর ছবিটিতে স্বল্প উপস্থিতির চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহরুখ।
এরপর ২০১৭ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসকে বেছে নেয় ‘রইস’ বাহিনী। কিন্তু দিনটি আগেই বরাদ্দ করে রেখেছিলো ‘কাবিল’ ও অজয় দেবগনের ‘বাদশাহো’। ‘রইস’ মুক্তি পাবে বলে ‘বাদশাহো’ পিছিয়ে গেলেও ‘কাবিল’ পেছায়নি। দুটি ছবির সংশ্লিষ্টরা আলোচনায় বসলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।
গত মাসে ‘কাবিল’-এর প্রযোজক রাকেশ রোশন সিদ্ধান্ত নেন, প্রজাতন্ত্র দিবসের একদিন আগে ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় মুক্তি দেবেন নিজের ছবিটি। এরপর ‘রইস’ বাহিনীও ঘোষণা দেয় ২৫ জানুয়ারি সকাল থেকেই প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে তাদের ছবি। এ কারণে ‘কাবিল’ও সকাল থেকেই চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বক্স অফিসে মুখোমুখি হলেও ব্যক্তিজীবনে শাহরুখের সঙ্গে বন্ধুত্বে চিড় ধরবে না বলে আশাবাদী হৃতিক। তবে তার বাবা রাকেশ রোশন বিষয়টি সহজভাবে নেননি। তার পরিচালনায় ‘কয়লা’, ‘করণ অর্জুন’ ও ‘কিং আঙ্কেল’ ছবির নায়ক শাহরুখের সিদ্ধান্তে তিনি নারাজ। কারণ একই দিনে মুক্তি পাওয়া বড় তারকার বিশাল বাজেটের দুটি ছবি সচরাচর হিট হয় না। একমাত্র উদাহরণ শাহরুখের ‘যব তাক হ্যায় জান’ ও অজয় দেবগনের ‘সান অব সরদার’।
বক্স অফিস সংঘর্ষে শাহরুখ ও হৃতিকের দু’জনেরই সবশেষ অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে শাহরুখের ‘দিলওয়ালে’ মুখ থুবড়ে পড়ে সঞ্জয়লীলা বানসালির ‘বাজিরাও মাস্তানি’র কাছে। আর গত বছরের আগস্টে অক্ষয় কুমারের ‘রুস্তম’ পরাস্ত করেছে হৃতিকের ‘মহেঞ্জোদারো’কে। হেরে যাওয়া দুই সুপারস্টারের মধ্যে লড়াইয়ে এবার কে জেতেন তা দেখতে মুখিয়ে সবাই।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৬
জেএইচ