ইরফান সাজ্জাদ নিজের কাজ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে।
বাংলানিউজ: ঈদ কেমন কাটালেন?
ইরফান সাজ্জাদ: আলহামদুলিল্লাহ্, ঈদ ভালো কেটেছে।
বাংলানিউজ: এবার ঈদের জন্য কতোগুলো নাটকে কাজ করেছেন?
ইরফান সাজ্জাদ: যদি ঈদের জন্য বলেন, তাহলে ১৮-১৯টা নাটকের শুটিং করেছি। আগের কাজ মিলিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে ২০-২২টা। এরমধ্যে আমার ভালোলাগার কাজ আছে ১২টার মতো। যেগুলো আমি নিজেই চাই মানুষ দেখুক।
বাংলানিউজ: দর্শক সাড়া পাচ্ছেন কেমন?
ইরফান সাজ্জাদ: আমার যারা দর্শক আছেন বা যারা আমাকে পছন্দ করেন তাদের কাছে আমার বেশিরভাগ কাজ ভালো লাগবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সব দর্শকদের কথা চিন্তা করলে বিষয়টা ভিন্ন হয়। তবে এবার মানুষ ঈদের কাজগুলো কিছুদিন পরে দেখবেন। কারণ এখন বিশ্বকাপ চলছে। যেমন ঈদের দিন বাংলাদেশের খেলা ছিল। সেদিন আমার তিনটা কাজ প্রকাশ পেয়েছে, কাজগুলো খুব ভালো ছিল। তবে এগুলো নিয়ে দর্শকদের মধ্যে আলোচনা কম ছিল, কারণ সবাই এখন খেলা নিয়ে ব্যস্ত। সব আলোচনা খেলাকে ঘিরে। তবে সময় করে দর্শক ঠিকই কাজগুলো দেখে নেবেন এবং ফিডব্যাক দেবেন। বাংলানিউজ: নিজের দিক থেকে কাজগুলোকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
ইরফান সাজ্জাদ: এবার আমি কাজ করেছি একদম নিজস্ব জায়গা থেকে। যতগুলো কাজ করেছি আমি বেশিরভাগ কাজ করেই সন্তুষ্ট। আলাদা আলাদা সব মিষ্টি গল্প, অনেকগুলো রোমান্টিক-কমেডি আবার কয়েকটা ছিল থ্রিলার। এছাড়া উপন্যাস নিয়েও কাজ করেছি। বলতে পারেন নিজের শান্তির জন্য কাজ করেছি। আমার বিশ্বাস দর্শক যখন কাজগুলো দেখবেন তখন পছন্দ করবেন।
বাংলানিউজ: আগের চেয়ে আপনার চাহিদা অনেক বেড়েছে। এর রহস্য কী?
ইরফান সাজ্জাদ: ২০১৬ সালের শেষ থেকে আমি ধারাবাহিক নাটক করি না। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমার মাসে ২৮-৩০ দিনই কাজের অফার থাকে। হয়তো আমি কাজ করি ২৬ দিন। আমি শুধু সিঙ্গেল নাটক করি। আলাদা আলাদা গল্পে কাজ করার দিকে মন দেই। আমি এমন একটা কাজ করার চেষ্টা করেছি, মানুষ যেন আমাকে নিজেদের মনে করেন। তারা যেন বলতে পারেন, এই ছেলেটা নায়ক নয়, আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ।
আমি সবসময় চেয়েছি মানুষ আমাকে তাদের নিজেদের একজন ভাবুক। ফেসবুকসহ সবক্ষেত্রেই আমি মানুষের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করি। সবসময় ভাবি আমি তাদের মতই একজন, তাদের প্রতিনিধি হিসেবে মিডিয়াতে কাজ করছি। হয়তো বা এই বিষয়গুলো আমার কাজে প্রকাশ পেয়েছে এবং মানুষ নিজেদের মনে করছেন। তাই নির্মাতাদের কাছেও আমার চাহিদা বেড়েছে।
বাংলানিউজ: কোন ধরনের চরিত্র করতে উপভোগ করেন?
ইরফান সাজ্জাদ: আমি ঘরোয়া চরিত্রে বেশি কাজ করতে পছন্দ করি। অতিরিক্ত ভাঁড়ামো পছন্দ করি না, কাজও করা হয় না। অতি নাটকীয় কিছু আমি কখনো করার চেষ্টা করিনি। হয়তো এ কারণে মানুষের কাছেও গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।
বাংলানিউজ: সাধারণত সবাইকে কম-বেশি জুটি বেঁধে কাজ করতে দেখা যায় যায়। কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে এটা কম দেখা যায় কেন?
ইরফান সাজ্জাদ: সত্যি কথা বলতে গেলে আমি আমার সহ-শিল্পী সবার কাছে সমান থাকতে চাই। যেন মানুষের কাছে আমরা একঘেঁয়ে না হয়ে যাই। আমি এমন একটা চরিত্র হতে চাই- যেন আমি যার সঙ্গেই কাজ করি না কেন, দর্শক আমাকে সে চরিত্রেই বিশ্বাস করতে পারেন। কিন্তু আমি যদি একজনের সঙ্গে জুটি হিসেবে রেডি হয়ে যাই, তখন অন্যজনের সঙ্গে নেওয়াটা মানুষের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। তবে যদি কখন জুটি করি, সেটা হবে সিনেমায়। কিন্তু নাটকে জুটি করতে চাই না।
বাংলানিউজ: বছরকয়েক হলো সিনেমায় কাজ করেছেন না। নতুন সিনেমার কোনো খবর আছে?
ইরফান সাজ্জাদ: সিনেমা নিয়ে আসলে আমার খুব শক্ত একটা পরিকল্পনা রয়েছে। মন থেকে সিনেমাটা করতে চাই। সিনেমা যদি করি একেবারে ভেতরে লালন করে করতে চাই। আমি সিনেমায় এসে আবার চলে যেতে চাই না। বাংলানিউজ: তাহলে কি বলতে পারি নতুন করে প্রস্তুতি নিয়ে আবার সিনেমায় আসছেন?
ইরফান সাজ্জাদ: আমি এখন প্রস্তুত। সিনেমা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় কথা হচ্ছে। ইনশাল্লাহ ঈদের পর পর সব ঠিক থাকলে ভালো একটা খবর আপনাদের দিতে পারবো।
বাংলানিউজ: আগেও আপনি কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে ‘ভালোবাসা এমনই হয়’ কিংবা ‘ইউ-টার্ন’র মতো সিনেমা। বিরতি ভেঙে কোন ধরনের সিনেমায় অভিনয় করতে চান?
ইরফান সাজ্জাদ: এখন সহজ গল্পের একটা সিনেমা দিয়ে শুরু করতে চাই। আপাতত কঠিন কোনো গল্পে কাজ করতে চাই না। শুরুতে এজন্য বলছি, কারণ আমি যখন প্রথম সিনেমায় কাজ করি তখন মিডিয়ায় আমার বয়স ছিল এক থেকে দেড় বছর। তখন আমি প্রস্তুত ছিলাম না। আমার পারফরম্যান্সের জায়গা থেকেও আমি রেডি ছিলাম না। যদিও সেটা আমার জন্য একটা সুযোগ ছিল। তবে সবকিছু আমার জন্য এক্সপেরিমেন্ট ছিল। যার কারণে এতো বড় একটা গ্যাপ দেওয়া। যেন আমি নিজেকে নতুন করে পুরোপুরি প্রস্তুত করে আবার বড় পর্দায় হাজির হতে পারি। আর এই সিনেমায় আসার জন্যই আমি ধারাবাহিক নাটক বন্ধ করেছি, মানুষ যেনো আমাকে প্রতিদিন টিভিতে না দেখতে পায়।
বাংলানিউজ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ইরফান সাজ্জাদ: বাংলানিউজকেও ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৯
জেআইএম/এইচএ/