তিনি বলেন, পর্যটনের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা কাজে লাগাতে পারছি না। বিশ্বের চেয়ে আমরা পর্যটনে অনেক পিছিয়ে, সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এ খাতের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে 'উন্নয়ন ভাবনায় পর্যটন' শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
পর্যটন সচিব বলেন, পর্যটনে এতোকাল আমাদের কোনো জ্ঞানই ছিল না। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম পর্যটন বিকাশের জন্য ট্যুরিজম বোর্ড গঠন করেন। কিন্তু এরপর এতোকাল চলে গেছে, এ খাতের উন্নয়ন হয়নি।
সুন্দরবন বিশ্বের দ্বিতীয় কোথাও নেই জানিয়ে মহিবুল হক বলেন, এতো সুন্দর একটি বন, কিন্তু তারপরও আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকাশ ঘটাতে কয়েকশ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। যেখানে পর্যটকদের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
বুয়েটকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বছরের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। সরকার কোনো ব্যবসা করে না, সরকার শুধু বিনিয়োগকারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়, সুতরাং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসতে হবে।
পর্যটন সচিব বলেন, কক্সবাজার কি আছে, শুধু দিনে পানির ঢেউ, ইট কংক্রিটের ভবন। বিনোদন নেই। পর্যটক আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। মালয়েশিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি মুসলিম দেশ, কিন্তু সেখানে ক্যাসিনো আছে, আমরা ব্যাকডেটে আছি।
মন্ত্রণালয়ের সাবেক সহকর্মীদের সমালোচনা করে সচিব বলেন, আপনারা শুনলে অবাক হবেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। কিন্তু বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে অতীতে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, সত্যিকার অর্থে কেউ কাজ করেনি। বেতন নিয়েছেন, পরে অবসরে চলে গেছেন। পর্যটনে ব্যয় মাত্র গত ১০ বছরে ১০১ কোটি টাকা।
মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে মহিবুল হক বলেন, কক্সবাজারের বঙ্গপোসাগরের মোহনায় একটি স্পট চিহ্নিত করেছি, সেখানে পর্যটন স্পট গড়ে তোলা হবে। আশাকরি, সেখানে বেসরকারিখাত বিনিয়োগ করবে।
দেশের বৌদ্ধ, হিন্দু, খ্রিস্টান ও ইসলামী স্থাপনার থাকার ঐতিহ্য তুলে ধরে সচিব বলেন, অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা থাকলেও আমরা বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরা তো দূরের কথা, দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারিনি। আমাদের সম্পদ আছে, কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে না পারলে সেই সম্পদ থেকেও লাভ নেই।
‘জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান কত শতাংশ, তা-ও আমরা জানি না। এটা ব্যর্থতা আমাদের, তা স্বীকার করে নিতেই হবে। আমরা কাজ শুরু করছি, বছরে বাংলাদেশে কতজন পর্যটক আসে, সেটার পরিসংখ্যান বের করা হবে। বাংলাদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে পর্যটন তুলে ধরা হবে। ’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আতিকুল হকের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অতিরিক্ত সচিব ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস।
কর্মশালায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বেসরকারি উদ্যোক্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৯
টিএম/এএ