ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

পর্যটন

সুন্দরবনের কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজম সেন্টারের বাড়তি আকর্ষণ ৩ কুমির

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২
সুন্দরবনের কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজম সেন্টারের বাড়তি আকর্ষণ ৩ কুমির

সাতক্ষীরা: সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজম সেন্টারের সংরক্ষিত পুকুরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে পর্যটকদের জন্য ছাড়া হয়েছে তিনটি কুমির। যা সুন্দরবন ভ্রমণে আসা পর্যটকদের বাড়তি আনন্দের খোরাক যোগাচ্ছে।

সেই সঙ্গে ইকো ট্যুরিজম সেন্টারে পৌঁছাতেই বানর ও হরিণের অভ্যর্থনা এবং ফুট ট্রেইলে হেঁটে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ তো আছেই।

দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় গত ১ সেপ্টেম্বর। এরপর থেকে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে ভ্রমণে আসতে শুরু করেছেন পর্যটকরা।

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কিছুদিন ভ্রমণের সুযোগ থাকলেও মৎস্য প্রজনন মৌসুমের কারণে পুনরায় তিন মাস বন্ধ থাকায় বর্তমানে কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজম সেন্টার নতুন রূপে ধরা দিচ্ছে পর্যটকদের কাছে।

এ দীর্ঘ সময়ে বদলেছে কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজম সেন্টারের চিরচেনা রূপ। কাঠের ফুট ট্রেইলের বদলে কংক্রিটের ট্রেইল, পুকুরটির চারপাশে ওয়াক ওয়েসহ প্রাচীর আর ওয়াচ টাওয়ার তো আছেই।

কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজম সেন্টারে বেড়াতে আসা তরুণী অদ্রি বলেন, বন্ধ থাকার কারণে অনেক দিন সুন্দরবনে আসা হয়নি। এবার এসে অনেক কিছু নতুন দেখলাম। বিশেষ করে এখানে কুমির দেখার সুযোগ ছিল না। এবার এসে কুমির দেখে অবাক হয়েছি।

ফাহাদ হোসেন বলেন, সুন্দরবন আমার পছন্দের জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম। তবে এবার এলাম অনেক দিন পর। এবার এসে কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজম সেন্টারকে নতুন নতুন লাগছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এখানকার প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে।

তবে সামগ্রিক খরচ বৃদ্ধির কারণে সুন্দরবনের পর্যটন খাতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি প্রবেশমূল্যসহ ট্রলার ভাড়া ও যাতায়াত খরচ বাড়ায় অনেকেই সুন্দরবন ভ্রমণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ কার্যালয় সূত্র জানায়, আগে সুন্দরবনে প্রবেশমূল্য ছিল মাথাপিছু ২৩ টাকা। যা বাড়িয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ ৪৬ টাকা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে ট্রলার ভাড়াও।

নীলডুমুর ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম জানান, তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে স্বাভাবিকভাবেই ট্রলার ভাড়া বেড়েছে। আগে নীলডুমুর থেকে কলাগাছিয়া পর্যন্ত যাওয়া-আসার ভাড়া ছিল ১৫০০ টাকা। এখন তা বেড়ে ১৭৫০ টাকা হয়েছে। এছাড়া মুন্সীগঞ্জ থেকে কলাগাছিয়া যাওয়া-আসার ভাড়া ছিল ছোট ট্রলার প্রতি ২৫০০ টাকা, এখন ৩৫০০ টাকা এবং বড় ট্রলার ৩০০০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০০০ টাকা হয়েছে। একই সঙ্গে সড়ক পথে বাস ভাড়াও বেড়েছে। এজন্য পর্যটকদের ওপর আর্থিক চাপ বেড়েছে। ফলে অনেকেই উৎসাহ হারাচ্ছেন।

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) একেএম ইকবাল হোছাইন চৌধুরী বলেন, পদ্ম সেতু হওয়ার কারণে এখন সহজেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকরা সুন্দরবনে আসছেন। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য ইকো ট্যুরিজম প্রকল্পের আওতায় কলাগাছিয়ায় সংরক্ষিত পুকুরের চারপাশে ওয়াক ওয়েসহ প্রাচীর নির্মাণ করে তিনটি কুমির ছাড়া হয়েছে। এছাড়া রাজস্ব খাতের পরিচালন ব্যয়ের আওতায় কংক্রিটের ফুট ট্রেইল (হাঁটার পথ) নির্মাণ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণে আসবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।