ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

ট্যুরিস্টের মাধ্যমে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সম্ভব: রাশেদ খান মেনন

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৬
ট্যুরিস্টের মাধ্যমে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সম্ভব: রাশেদ খান মেনন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শ্রীমঙ্গলের টি হ্যাভেন রিসোর্ট থেকে: ট্যুরিস্টদের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান সম্ভব বলে মনে করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

তিনি বলেছেন, একজন ট্যুরিস্টের মাধ্যমে ১১ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

তবে সবার আগে ট্যুরিস্টদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

রোববার (২৪ জুলাই) শ্রীমঙ্গলের টি হ্যাভেন রিসোর্টে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা ও সমস্যার নানা দিক নিয়ে বাংলানিউজ আয়োজিত বিশেষ আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন মন্ত্রী।

রাশেদ খান মেনন বলেন, যেসব এলাকায় ট্যুরিস্ট স্পট রয়েছে, সেসব এলাকার মানুষদের পর্যটনমনস্ক হতে হবে। একজন ট্যুরিস্ট ১১ জনের কর্মসংস্থান তৈরি করে। তাহলে এক ট্যুরিজম দিয়ে আমরা অনেকের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করতে পারি। এছাড়া ট্যুরিস্ট গাইড হিসেবে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এ সেক্টরে।  

তিনি বলেন, পর্যটন এলাকা পরিচ্ছন্ন না থাকলে ট্যুরিস্ট আসবে না। এজন্য স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দিতে হবে। তবে যেসব ট্যুরিস্ট এলাকা প্রোটেকটেড (সংরক্ষিত), সেসব এলাকাকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।

রাতারগুল, লাউয়াছড়া বনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এসব প্রোটেকটেড এলাকা রক্ষা করতে হবে। কিন্তু অনেকে অতিলোভে আমাদের প্রকৃতি ও পর্যটনকে ধ্বংস করছে। আমরা বনায়ন ধ্বংস করে ফেলছি, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে ফেলছি। আজ জাফলং, লালাখাল ধ্বংসের দিকে। আমরাই এগুলোকে ধ্বংস করে ফেলছি।

সিলেট অঞ্চলে পর্যটন বিকাশে শ্রীমঙ্গলে পর্যটন হোটেল-মোটেল করার পরিকল্পনার কথাও জানান মন্ত্রী। একইসঙ্গে আগামী এক বছরের মধ্যে কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর বিমানবন্দর চালু করার কথা বলেন তিনি। পর্যটন এলাকাগুলোকে ট্যুরিস্ট প্রোডাক্ট হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে স্থানীয়দের পর্যটনমনস্ক হওয়ারও তাগিদ দেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, শুধু শ্রীমঙ্গলের জন্যই হোটেল-মোটেল মালিকরা প্যাকেজ ট্যুর চালু করতে পারেন। যেমন- শ্রীমঙ্গলে দু’দিন-তিন রাত ভ্রমণ করলে আবাসন ব্যবস্থার সঙ্গে যাওয়া-আসা টিকেট ও খাওয়া ফ্রি। এরকম বিভিন্ন আকর্ষণীয় প্যাকেজ চালু করা যেতে পারে।  
এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন

রাশেদ খান মেনন বলেন, সিলেটের এ আয়োজনের আগে বাংলানিউজের কক্সবাজার নিয়ে আয়োজনে আমরা উপকৃত হয়েছি। আশা করি এবারের আয়োজন থেকে যেসব প্রতিবেদনে বিভিন্ন সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে কথা হয়েছে, সেগুলো একটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের কাছে তুলে দেবেন তারা। এ নিয়ে কাজ করা যাবে।

দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজের ‘বছরজুড়ে দেশ ঘুরে’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কক্সবাজারের পর  ‘সিলেটে পর্যটন’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সকাল ১০টায় স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আলোচনার সূচনা করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন।

আরও পড়ুন---পর্যটনের বিকাশ হলে তরুণরা বিপথগামী হবে না: আলমগীর হোসেন
এরপর ১০টা ০৫ মিনিট থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে করা বাংলানিউজের রিপোর্টগুলো অতিথিদের সামনে উপস্থাপন করেন সিনিয়র আউটপুট এডিটর জাকারিয়া মন্ডল ও অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর আসিফ আজিজ। এসময় ভ্রমণ ও পর্যটন সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরিতে অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন সিলেটের পর্যটন নিয়ে প্রতিবেদন করা করেসপন্ডেন্টরাও।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান সিকদার, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিশ্বজিৎ কুমার পাল, শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান, টি-হ্যাভেন রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতান মো. ইদ্রিস লেদু ও পরিচালক আবু সিদ্দিক মো. মুসা, শ্রীমঙ্গল ইন’র চেয়ারম্যান মোছায়েদ আলী, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী, মৌলভীবাজর ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র এএসপি একেএম মোশাররফ হোসেন, শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, সিলেট জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সিকান্দর আলী, ইউএসএইড-এর ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেমস অ্যান্ড লাইভলিহুডস (ক্রেল) প্রকল্পের  কমিউনিকেশনস ম্যানেজার ওবায়দুল ফাতাহ তানভীর প্রমুখ।

এছাড়া প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন বিভাগের কর্মকর্তাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলানিউজের হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন ও লাইফস্টাইল এডিটর শারমীনা ইসলাম। দুপুর সোয়া ১টায় শেষ হয় এ আলোচনা।

এর আগে, শুক্রবার (২২ জুলাই) একই রিসোর্টে সিলেটের পর্যটন সমস্যার নানা চিত্র ও সম্ভাবনা নিয়ে বিশেষজ্ঞ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রোজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় সিলেট বিভাগের চার জেলার পর্যটন নিয়ে সরেজমিনে বাংলানিউজ কর্মীদের করা বিভিন্ন প্রতিবেদন।

পর্যটন বিষয়ক এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে- হোটেল শ্রীমঙ্গল ইন, টি হ্যাভেন রিসোর্ট, ইউএসএইড এর ক্রেল প্রকল্প ও সিলেটের নির্ভানা ইন এবং এমএম ইস্পাহানি কোম্পানি লিমিটেড।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৬
এমএ/এসএ/এসএম/এসএনএস/এমজেএফ/এমআই/টিআই/এইচএ/জেডএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ