ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

পর্যটনের বিকাশ হলে তরুণরা বিপথগামী হবে না: আলমগীর হোসেন

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৬
পর্যটনের বিকাশ হলে তরুণরা বিপথগামী হবে না: আলমগীর হোসেন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শ্রীমঙ্গলের টি হ্যাভেন রিসোর্ট থেকে: হতাশা থেকে তরুণরা বিপথগামী হচ্ছে উল্লেখ করে বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন বলেছেন, তরুণদের ঘোরাঘুরির মধ্যে ব্যস্ত রাখলে তারা বিপথগামী হবে না। এ কারণে পর্যটনকে গুরুত্ব দিতে হবে।

রোববার (২৪ জুলাই) শ্রীমঙ্গলের টি হ্যাভেন রিসোর্টে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা ও সমস্যার নানা দিক নিয়ে বাংলানিউজ আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

পর্যটনে উন্নতি ও সমৃদ্ধি লাভ করেছে এমন দেশের উদাহরণ তুলে ধরে আলমগীর হোসেন বলেন, সিলেটের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোকে নিয়ে পর্যটনের বিকাশ হতে পারে। এখানকার খাসিয়া পল্লীতে ঘোরাঘুরি এবং মনিপুরীদের তৈরি তাঁতকাপড় পর্যটকরা কিনে নিয়ে যান। পর্যটন বিকাশের জন্য ব্রুশিয়ারের মাধ্যমে কিছু করলে সেটা থাকবে না। অনলাইনে করলে সেটা থাকবে এবং যে কেউ পাবে।

এডিটর ইন চিফ বলেন, জেলা প্রশাসন চাইলে বাংলানিউজে আমরা একটি কর্নার রেখে দিতে পারি। যেন পর্যটকরা তাদের মোবাইলফোনে পর্যটনের সব বিষয় জানতে পারেন।

‘আমাদের অভিজ্ঞতাগুলো আমরা লিখিতভাবে প্রকাশ করছি। যেকেউ যেকোনো সময় সেটা দেখতে পারছেন। ’

আলমগীর হোসেন বলেন, সিলেটে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী সবাই আছেন। এখানে ট্রেনের টিকিটের অনেক চাহিদা। কিন্তু টিকিট পাওয়া যায় না।

বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ বলেন, এখনকার জেনারেশনের হাতে অর্থ আছে। ছেলেমেয়েরা আয় করছে। তারা ঘুরতে চায়। এজন্য ডমেস্টিক প্লেনগুলোতে জায়গা পাওয়া যায় না।

শ্রীমঙ্গলের পর্যটনের বিকাশে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এই এলাকায় টি গার্ডেনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকাশ হতে পারে। বর্ষার সময় টি গার্ডেন দেখার মতো। এসব প্রচারের কাজে এখানকার প্রশাসন এবং হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে আসতে হবে। নিরাপত্তার বিষয়ে মোটিভেট করতে হবে পর্যটকদের।

আলমগীর হোসেন আরও বলেন, তরুণদের হতাশা কেটে যাবে, যদি তারা ঘোরাঘুরির মধ্যে থাকে।  

বিদেশে সপ্তাহান্তে ছুটি কাটানোর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ব্যবস্থা ভালো হলে বৃহস্পতিবার ঢাকাও খালি হয়ে যাবে, আবার শনিবার ঢাকা-ই হয়ে যাবে।

এক্ষেত্রে শ্রীমঙ্গল রুটে বিআরটিসির বাস চালুর পরামর্শ দিয়ে এডিটর ইন চিফ বলেন, বিআরটিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢাকা-শ্রীমঙ্গল সরাসরি এসি বাস চালু করা যেতে পারে। চট্টগ্রাম-শ্রীমঙ্গল রুটেও এটা চালু হতে পারে। বাস চালু হলে প্যাকেজ ট্যুর করা যাবে। বিদেশেও এরকম আছে।  

প্রায় ৪৫ বছর আগের জাফলং ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আলমগীর হোসেন বলেন, ৪৫ বছর আগেই মনে হয় জাফলং সড়ক ভালো ছিলো। তখন রাস্তা ছোট ছিলো। এতো খারাপ ছিলো না।

‘অথচ ভারতীয় অংশেও পাথরের ট্রাক চলে রাস্তায়, সেখানে তো রাস্তা খুব ভালো। পাথর কেটে তারা খুবই সুন্দর রাস্তা করতে যদি পারে, আমরা কেন পারবো না?’

রোববার (২৪ জুলাই) সকাল ১০টায় এ আলোচনা শুরু হয়। চলে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত।

এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

আরও অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান সিকদার, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বিশ্বজিৎ কুমার পাল, শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান, টি হ্যাভেন রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতান মো. ইদ্রিস লেদু ও পরিচালক আবু সিদ্দিক মো. মুসা, শ্রীমঙ্গল ইন’র চেয়ারম্যান মোছায়েদ আলী, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী, মৌলভীবাজর ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র এএসপি একেএম মোশাররফ হোসেন, শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, সিলেট জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সিকান্দর আলী, ইউএসএইড-এর ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেমস অ্যান্ড লাইভলিহুডস (ক্রেল) প্রকল্পের কমিউনিকেশন্স ম্যানেজার ওবায়দুল ফাতাহ তানভীর প্রমুখ।

আলোচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলানিউজের হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন ও লাইফস্টাইল এডিটর শারমীনা ইসলাম।

সভাপতির স্বাগত বক্তৃতায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পর গত এক সপ্তাহ ধরে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে করা বাংলানিউজের প্রতিবেদনগুলো অতিথিদের সামনে উপস্থাপন করেন সিনিয়র আউটপুট এডিটর জাকারিয়া মন্ডল ও অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর আসিফ আজিজ। এসময় ভ্রমণ ও পর্যটন সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরিতে অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন সিলেটের পর্যটন নিয়ে প্রতিবেদন করা করেসপন্ডেন্টরাও।

এর আগে, শুক্রবার (২২ জুলাই) একই রিসোর্টে সিলেটের পর্যটন সম্ভাবনা ও এর নানা সমস্যার চিত্র নিয়ে বিশেষজ্ঞ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।  

এতে প্রোজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় সিলেট বিভাগের চার জেলার পর্যটন নিয়ে সরেজমিনে বাংলানিউজ কর্মীদের করা বিভিন্ন প্রতিবেদন।

পর্যটন বিষয়ক এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে হোটেল শ্রীমঙ্গল ইন, টি হ্যাভেন রিসোর্ট, ইউএসএইড এর ক্রেল প্রকল্প ও সিলেটের নির্ভানা ইন এবং এমএম ইস্পাহানি কোম্পানি লিমিটেড।


বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৬
এমএ/এসএ/এসএম/এসএনএস/এমজেএফ/এমআই/এইচএ/

**সিলেটের পর্যটন সম্ভাবনা সবসময় তুলে ধরবে বাংলানিউজ
**নিরাপত্তার বিষয়ে পর্যটকদের মোটিভেট করতে হবে
**শ্রীমঙ্গলে পর্যটনের মৌসুম বর্ষাকাল: আলমগীর হোসেন
**তরুণদের আকৃষ্ট করতে হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে আসতে হবে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ