ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

বাইক্কা বিলের অতিথি পাখিরা

জাকারিয়া মন্ডল, সিনিয়র আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৬
বাইক্কা বিলের অতিথি পাখিরা ছবি: নূর ও মুজিবুর

বাইক্কা বিল (শ্রীমঙ্গল ঘুরে): বাইক্কা বিল ও হাইল হাওরের প্রধান আকর্ষণ পাখি। দেশি পাখিগুলো বছরভরই বিচরণ করে হাওরের শাপলা-পদ্মবনে, কচুরিপানার দঙ্গল ‍আর নলখাগড়ার ঝোপে।

তবে শীত এলে অতিথি পাখিতে ছেয়ে যায় হাওরের জলা আর আকাশ। সব মিলিয়ে ১৬০ প্রজাতির লাখো পাখির সমাবেশ বসে বাইক্কা বিল আর হাইল হাওরে।

হাইল হাওরের পূর্বদিকে বাইক্কা বিলের এক কোণায় ৩১ ফুট উঁচু যে পর্যবেক্ষণ পোস্টটি গড়া হয়েছে তাতে ছবিসহ হাইল হাওর ও বাইক্কা বিলের কিছু পাখির বিবরণ প্রর্দশনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু অতিথি পাখির বিবরণ বাংলানিউজ পাঠকদের জন্য ছবিসহ তুলে ধরা হলো।

জল মোরগ
এদের শরীর কালচে খয়েরি। শরীরের দুই পাশে সাদা দাগ আর লেজের নিচে সাদা পালক আছে। জলজ উদ্ভিদের মধ্যে এরা সাঁতরে বেড়ায়। জলজ কীট এদের প্রধান খাদ্য। শীতকালে এরা এই হাওরে আসে। এরা ৩১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। স্থানীয়ভাবে এরা পাতি পানমুরগি নামে পরিচিত।

লালচে বক
শীতের আগন্তুক এই বক এখন হাইল হাওরের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে উঠছে। এরা লম্বায় ৭৮ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এদের পালক গাঢ় রঙের। গলা অত্যন্ত সরু ও লম্বা। শরীর লালচে, পেট খয়েরি। এরা লুকিয়ে থাকে ঘন জলজ উদ্ভিদের মধ্যে।

ভুবন চিল
বর্জভুক এই পাখি পনির ওপর থেকে মরা মাছ তুলে খায়। এদের কিছুর স্থায়ী আবাস বাইক্কা বিল, কিছু উড়ে আসে শীত মৌসুমে। এরা ৫৫ থেকে ৬৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এদের শরীর কালচে খয়েরি। লেজ লম্বা, চেরা। শীতকালে হিমালয় আর তিব্বত থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসতে শুরু করলে বাইক্কা বিলে বেড়ে যায় ভুবন চিলের সংখ্যা।

সরালী
শরীর চকোলেট রঙের। লেজের নিচে সাদা। মধ্য এশিয়া আর দক্ষিণ সাইবেরিয়া থেকে এরা হাইল হাওরে আসে ডিম পাড়তে। পানির নিচে ডুব দিয়ে শামুক ধরে খায়।

ল্যাঞ্জা হাঁস
পুরুষ হাঁসগুলোর মাথা চকোলেট রঙের। গলা সাদা, লম্বা লেজ। মেয়ে হাঁসের রঙ মেটে। সাইবেরিয়া থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার উড়ে আসে এরা। এই টাওয়ারের দক্ষিণ ও পশ্চিমে ঘণ শ্যাওলার ঝোপে এদের ঝাঁক দেখা যায়। এরা জলজ উদ্ভিদ খেয়ে বাঁচে।

কাদা খোঁচা বা পাতি চ্যাগা
মাত্র ২৬ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের এ পাখি শীতের অতিথি। মেটে আর খয়েরী দাগে কালো শরীর ঢাকা বলে মাটিতে ঘাপটি মেরে বসে থাকলে এদের সহজে চোখে পড়ে না। ঘাসবন থেকে হঠাৎ উঠে পানির একটু উপর দিয়ে উড়তে দেখা যায় এদের। পাতি চ্যাগার ডানার প্রান্তে মেটে দাগ আছে যা ল্যাঞ্জা চাগার নেই।   দু’জাতের পাখির লম্বা ঠোঠ দিয়ে নরম কাদার ভেতর থেকে পোকা ধরে খায়। গ্রীষ্মকালে প্রজননের জন্য সাইবেরিয়া চলে যায় এরা।

কালামাথা কাস্তেচরা
শীতের এই অতিথি পাখির মাথা কালো, বিশাল বাঁকানো ঠোঁঠ। শরীর সাদা। সারা বিশ্ব থেকেই এই পাখি এখন বিপন্ন প্রায়। বৃক্ষবাসী এই পাখির প্রধান খাদ্য শামুক, ঝিনুক আর মরা মাছ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৬
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ