ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

মেঘ-পাহাড়ের অকৃপণ সৌন্দর্যের আধার খাগড়াছড়ি

শামীম হোসেন মজুমদার, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
মেঘ-পাহাড়ের অকৃপণ সৌন্দর্যের আধার খাগড়াছড়ি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খাগড়াছড়ি থেকে: ঘন সবুজে ঘেরা আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি পথ ঘুরে বাস যখন খাগড়াছড়ি শহরে প্রবেশ করে ঘড়ি বলছে ভোর ৬টা। এ শহরে তখনও ভোরের স্নিগ্ধ আলোর দেখা মেলেনি।

তাইতো গোমড়া মুখেই আমাদের স্বাগত জানালো প্রকৃতির অকৃপণ সৌন্দর্যে ঘেরা খাগড়াছড়ি।

রাজধানী ঢাকার কলাবাগান সেন্টমার্টিন পরিবহনের কাউন্টার থেকে বুধবার রাত সোয়া ১১টায় যখন বাসে উঠি তখনও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। আর ভোরে যখন খাগড়াছড়ি নামলাম তখন ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি। তবে এখানকার বৃষ্টির ছোঁয়ায় অন্য রকম এক স্নিগ্ধতা অনুভব হয়। প্রকৃতির সতেজতার স্পর্শে যেন ২৮১ কিলোমিটার দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়া ক্লান্তি ভুলে যাই। সহকর্মী ইসমাইলে হোসেন মুখে মৃদু হাসি দেখে বুঝতে পারলাম এ সতেজতা তাকেও ছুঁয়েছে।

বন-পাহাড় আর রহস্যে ঘেরা ২৭০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ জেলা পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্পট। সেটি আরও স্পষ্ট বোঝা গেলো এ শহরে পা রেখেই। বৃষ্টি ভেজা ভোরে যখন ঘুমের ঘোর কাটেনি এখানকার মানুষের তখন পর্যটকে মুখর শহর। অপেক্ষা গন্তব্যে যাওয়ার।
তবে আগে থেকে যারা জানতেন না তিন পার্বত্য জেলায় হরতাল তারা খানিকটা বিপাকে পড়েছেন। এরকম কয়েকজন পর্যটকের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেলো। ঢাকা নর্দান ইউনিভার্সিটির ছাত্র নাজমুল হক জানালেন, বন্ধুদের কাছ থেকে শুনেছি এখানে এলই চান্দের গাড়ি পাওয়া যায়। তাই আগে থেকে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। এসে তো দেখছি কোনো গাড়ি নেই।

ভূমি কমিশন আইন সংশোধন-২০১৬ বাতিলের দাবিতে তিন পার্বত্য জেলায় চলছে ২৪ ঘণ্টার হরতাল। এ কারণে প্রতিদিনের মতো পর্যটকদের বহন করার জন্য পাহাড়ের জনপ্রিয় যান চান্দের গাড়ির দেখা মিলছে না। তবে যারা আগে থেকে যোগাযোগ করে এসেছেন তাদের নির্ধারিত গাড়ি এসে দ্রুত শহর ছেড়েছে।

এ জেলার প্রকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের সবসময় কাছে টানে। অনন্য বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন এ জেলায় পর্যটকরা ছুটে আসে মেঘ-পাহাড়ের মিতালী দেখতে, সবুজের ছোঁয়া নিতে, ঝরনা ধারায় ভিজতে, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ও বৈচিত্র্যময় জীবনধারা দেখতে।

বর্ষার শেষ দিকে এখানে পর্যটকদের আনা-গোনা বেশি থাকে। শরৎ এবং শীতেও পর্যটক মুখর থাকে এ পার্বত্য জেলা। এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে, আলুটিলা গুহা, এটি শহর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত।

এছাড়াও রয়েছে আলুটিলা ঝরনা (স্থানীয়ভাবে রিছাং ঝরনা নামে পরিচিত), দেবতা পুকুর, পানছড়ি অরণ্য কুটির, বিডিআর স্মৃতিসৌধ, হাতিমাথা পাহাড়, মং রাজবাড়ি, গুইমারা, পুরাতন চা বাগান, মাতাই পুখিরি, সিন্ধুকছড়ি পুকুর, বৌদ্ধ মন্দির, রামগড় জঙ্গল, রামগড় পাহাড় ও টিলা, লক্ষ্মীছড়ি জলপ্রপাত ইত্যাদি।

কীভাবে আসবেন
ঢাকা থেকে বাসযোগে সরাসরি যারা খাগড়াছড়ি আসতে চান তাদের জন্য কলাবাগান, ফকিরাপুল, কমলাপুর, মানিকনগর, সায়েদাবাদ থেকে প্রতিদিন নন এসি বাস ছাড়ে। তবে এখানে একমাত্র সেন্টমার্টিন পরিবহনের এসি বাস আসে। একমাত্র এই এসি বাসটি কলাবাগান থেকে প্রতিদিন রাত সোয়া ১১টায় ছাড়ে। এছাড়া শ্যামলী, শান্তি পরিবহন, হানিফ, ঈগল, এস আলম, সৌদিয়া পরিবহন রাতে ও দিনে সরাসরি খাগড়াছড়ি আসে। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি বাস ভাড়া নন এসি সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০টাকা এবং এসি ৯০০ টাকা নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
এসএইচ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ