ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

বিকেলটা কাটুক হেরিটেজ পার্কে

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
বিকেলটা কাটুক হেরিটেজ পার্কে ছবি: আসিফ আজিজ/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খাগড়াছড়ি থেকে: প্রথম দেখায় ভালো লাগার বিষয়টি দাগ কাটবে হেরিটেজ পার্কে। খাগড়াছড়ি শহর থেকে দুই কিলোমিটার দূরত্বের পার্কটি ব-দ্বীপ বাংলাদেশকে মডেল ধরে নির্মিত।

শহর থেকে অটো ধরে পার্বত্য এ জেলার প্রাণ চেঙ্গী নদীর ব্রিজ। ডানে পর্যটন মোটেল। ব্রিজে দাঁড়িয়ে বাঁপাশে তাকালেই চোখ আটকে ধরে যে পাহাড়ি প্রকৃতি- সেটাই হেরিটেজ পার্ক।


 
আনসার বিডিপির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পাশেই এর অবস্থান। সব তত্ত্বাবধানও তাদের। ২০১২ সালে নির্মিত পার্কটিতে পাহাড়ের প্রকৃতি অক্ষত রেখে সেখানে কিছু নান্দনিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। ছোট একটি পাহাড়ে চেঙ্গী নদীর ঝিরি ঝিরি মৃদু ঠান্ডা বাতাসে সময় জুড়ি নেই হেরিটেজ পার্কের।
 
চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি রোডের কোলঘেঁষে ঠিক পর্যটন মোটেলের অপরপাশে যে সড়কটি উপরে উঠেছে সেটিই হেরিটেজ পার্কের মূল রাস্তা। পার্কে যখনই প্রবেশ করুন না কেন আঁকা-বাঁকা সর্পিল রাস্তার পাশে বাঁশ-বেত-ছনের তৈরি বিশেষ নান্দনিক স্থাপনা অভ্যর্থনা জানাবে সাদরে। রাতে এর ভেতরে আলো জ্বলে। পাশেরই সবুজ ঘাষ, বিভিন্ন ধরনের পাতা বাহার, টগর, রঙ্গন, বাগানবিলাস, জবা সঙ্গ দেয় সে আলোকে। আর দিনের আলো আরও আলোকিত হয় এসব ফুলের রূপ-গন্ধে।


 
পার্কটির বিশেষ কতগুলো বৈশিষ্ট্য আছে। পাহাড়ের মধ্যেই আবার রয়েছে চড়াই-উৎরাই। বাংলাদেশ যেহেতু ব-দ্বীপ সেহেতু পাহাড়ের ঠিক নিচে পার্কের ভেতরে মাটি কেটে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র। চারপাশে তার পানি। জেলাগুলো সাদা রঙে চিহ্নিত করা হয়েছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় একরাশ সবুজে সাদা ব্যাঙের ছাতা!


 
এখানে রয়েছে একটি খাবারের দোকান। ফাস্টফুড ছাড়া অন্য খাবার খেতে হলে অর্ডার করতে হয় আগে। তবে বিকেলটা জমে বেশি। বিকেলের পড়ন্ত আলোয় পাহাড়ি প্রাকৃতিক পরিবেশে চেঙ্গী নদীর বাতাস, প্রকৃতি আর পাখির গান শুনতে শুনতে সময় হারিয়ে যায় সময়ের গহীনে। বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জমজমাট থাকে এ পার্কটি।  
 
হেরিটেজ পার্কের তত্ত্বাবধায়ক ও জেলা আনসার বিডিবির কমান্ড্যান্ট রাজীব হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আগে ১০ টাকা টিকিট থাকলেও এখন ফ্রি। কেউ চাইলে পিকনিকের জন্য আগে থেকে বুকিং দিতে পারে। খরচ দিতে হবে জনপ্রতি ২০ টাকা। পড়ে থাকা সাধারণ জায়গায় ঐতিহ্যের বাংলাদেশকে তুলে ধরার সামান্য প্রয়াস এ পার্ক।

বিকেলেই এখানে বেশি মানুষ একটু নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটাতে আসেন। পর্যযটকদের আগমনও এখন বেড়ে গেছে। সারাদিন খাগছড়ির বিভিন্ন স্থানে ঘোরার পর সন্ধ্যায় এখানে ভালো মানের খাবার খেতে খেতে বিভিন্ন প্রজাতির পোকার গানে কাটে তাদের। ছোট ছোট তিন চারটি গোলাকার কটেজ আছে বসার জন্য। পাহাড়কে মোটামুটি অবিকৃত রেখেই নির্মাণ করা হয়েছে এ পার্ক। জানাচ্ছিলেন এ তত্ত্বাবধায়ক।
 
পর্যটকদের সন্ধ্যাকেন্দ্রিক বিনোদনের যে অভাব সমসময় রয়েছে খাগড়াছড়িতে সেটি কিছুটা হলে পূরণ করবে হেরিটেজ পার্ক। বেড়াতে গেলে যেতে ভুলবেন না!

** দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বুদ্ধমূর্তির দেশে

** পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী সব খাবার ‘সিস্টেমে’ 
 ** বাঁশের ভেতর মুরগি, পদের নাম ব্যাম্বো চিকেন
** পাহাড়ের সবুজ মাল্টায় দেশজুড়ে বিপ্লব
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ