ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

নিরবধি বয়ে চলা 'শৈল প্রপাত'

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
নিরবধি বয়ে চলা 'শৈল প্রপাত' ছবি-সোহেল সারওয়ার

বান্দরবান থেকে: কূল কূল শব্দে বয়ে চলা জলের স্বচ্ছ ও শীতল ধারা ঠিক কতকাল এমনি করে নিজেকে সপে দিচ্ছে তার খোঁজ রাখে না কেউ।

কতকালের ব্যথা-বেদনা নাকি কোন অভিমান নিয়ে উর্ধ্ব থেকে এমনি করে নিচে আত্মহননে শৈল প্রপাত হয়ে উঠেছে এ জলধারা তার আদিঅন্ত জানতে আগ্রহী নন পর্যটক বা প্রকৃতিপ্রেমীরা।

তবুও এ জলপ্রপাতের নিরন্তর বয়ে চলা দেখতে বান্দরবানে প্রতিদিন আসছেন মানুষজন। তবে স্পটটির চারপাশের স্থাপনা জৌলুষ হারালেও আকর্ষণ আর গুরুত্ব দুই-ই বহাল আছে বান্দরবানের প্রথম পর্যটন স্পট শৈল প্রপাতের।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে বান্দরবান শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরের শৈল প্রপাতে গিয়ে দেখা মিলল পর্যটকদের।

বান্দরবান-রুমা সড়কের পাশেই ফারুকপাড়া নামে এক এলাকায় সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এ শীতল পানির প্রবাহ ঢালু পাথরের প্লেট দিয়ে গড়িয়ে নিচে পড়ছে।

প্রপাতের পানি খুবই স্বচ্ছ ও শীতল। প্রায় সারাবছরই প্রবাহ থাকলেও বর্ষাকালে এর প্রবাহ বাড়ে। তবে শীত ও বর্ষার সময়টাতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে।

এ প্রপাতের আশপাশের পাহাড়ে বসবাস বম সম্প্রদায়ের মানুষের। শৈল প্রপাতকে কেন্দ্র করে রাস্তার ধারে ও স্পটের পাশেই গড়ে উঠেছে একটি হস্তশিল্প ও কাপড়ের মার্কেট।

এখানে বম নারীদের নিজ হাতে তৈরি উলের মাফলার, কম্বল, চাদর  ও হাঁতে তৈরি টুকিটাকি পাওয়া যায়। মূল রাস্তা ও প্রপাতের সিড়ি গোড়ার একটু সমতলে এ রকম দোকান রয়েছে প্রায় ২০টি।

প্রায় সব দোকানেই বিক্রেতা বম নারী বা তরুণী।

সব পোশাকই উল ও কাপড়ের। পণ্যের মধ্যে মাফলার ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং চাদরের মূল্য ৫০০ টাকা।

এছাড়াও বম পাড়ার বয়স্কা কিছু নারী ও পুরুষকে দেখা গেলো পাহাড়ে নিজেদের উৎপাদিত বিভিন্ন ফল বিক্রি করতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এটি জেলার প্রথম টুরিস্ট স্পট। ১৯৯১ সালের ১১ নভেম্বর সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এ প্রপাতকে নিযে ৫ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয় এ স্পট।

বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৮ কিমি দূরে অবস্থিত এ শৈল প্রপাত, স্থানীয় বমদের বিশ্বাস; বগা লেক থেকেই এর উৎপত্তি। এমনটাই জানালেন, স্থানীয় বম যুবক জায়ন বম।

প্রতিদিনই এ প্রপাত দেখতে বিপুলসংখ্যক লোকজন আসেন। রাস্তার পাশেই এ ঝরনা দেখতে কোনো প্রবেশ ফি বা টিকিটের কোনো ব্যবস্থা নেই।

প্রপাত মূল সড়ক থেকে অনেক নিচে। এজন্য সিঁড়ি করে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৬০টি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে হবে প্রপাতটি দেখতে।

বান্দরবান শহর থেকে অটোরিকশা বা চান্দের গাড়ি করে আসা যাবে শৈল প্রপাতে। আর বিপুল জলরাশি বয়ে নিয়ে নিরবধি চলা এ প্রপাতের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে দিনের আলো থাকা পর্যন্ত।

তো, প্রকৃতির সৌন্দর্য পূজারী ও ঘুরতে চাওয়া উড়ু উড়ু মনের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা ঘুরে আসুন পর্যটন সম্পৃদ্ধ বান্দরবানের প্রথম পর্যটন স্পট।
 

** পানির রাজ্যে পাহাড়ের বুদ্ধ...

** প্রশান্তি বিলাতে কাপ্তাইয়ের ‘রিভার ভিউ পিকনিক স্পট’
** দেশের যে শহরে রিকশা নেই!
** খাগড়াছড়ির প্রবারণা উৎসবে…
** 'জিরাফ গলার' ঝুলন্ত সেতুর আকর্ষণও কম নয়
** রেল স্টেশনে বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি
** রাবার ড্যামে চেঙ্গী নদীপাড়ের কৃষকদের সুদিন

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
এসআর/এজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ