ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় ইতিকাফে রোজাদাররা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৭
আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় ইতিকাফে রোজাদাররা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় ইতিকাফে রোজাদাররা

শুক্রবার চলতি রমজানের মাগফিরাতের শেষ দিন। আজকের সন্ধ্যা থেকে শুরু হবে নাজাতের শেষ দশক। হাদিস শরীফে এ দশককে জাহান্নাম থেকে মুক্তির দশক বলা হয়েছে।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিনের ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের শেষ দশকে ইবাদত-বন্দেগির কাজে এত কষ্ট স্বীকার করেছেন, যা অন্য সময় করতেন না।

 

এ দশকের বিশেষ আমল হলো- ইতেকাফ। ইতেকাফের মূল উদ্দেশ্য হলো- রমজানের শেষ দশকে শবেকদরের অনুসন্ধান করা।  

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে ইতেকাফ করেছেন, সাহাবায়ে কেরামও করেছেন। মাহে রমজানের মর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে কদরের রাতপ্রাপ্তির সুনিশ্চিত প্রত্যাশা এবং আল্লাহতায়ালার একান্ত সান্নিধ্য লাভের জন্য রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফকে সুন্নত করা হয়েছে।

রমজানের ইতিকাফ সুন্নত আমল। এই সুন্নত পালনের জন্য ২০ রমজানের সূর্য ডোবার আগমুহূর্ত থেকে শাওয়াল মাসের চাঁদ ওঠা পর্যন্ত মসজিদে ইতিকাফ করতে হয়। কোনো গ্রাম বা মহল্লাবাসীর পক্ষে কোনো এক বা একাধিক ব্যক্তি ইতিকাফ করলে সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যাবে। আর কেউ ইতিকাফ না করলে সবাই গোনাহগার হবেন।  

রমজান মাসের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে-  লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির মাধ্যমে মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্য লাভ।

ইতিকাফের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম (রহ.) বলেছেন, ‘আল্লাহর প্রতি মন নিবিষ্ট করা, তার সঙ্গে নির্জনে বাস করা এবং স্রষ্টার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি থেকে দূরে অবস্থান করা যাতে করে তার চিন্তা ও ভালোবাসা মনে স্থান করে নিতে পারে। ’

আল্লামা হাফেজ ইবনে রজব (রহ.) বলেছেন, ‘ইতিকাফের উদ্দেশ্য হলো-  সৃষ্টির সাথে সাময়িকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং স্রষ্টার সাথে সম্পর্ক কায়েম করা। আল্লাহর সাথে পরিচয় যত দৃঢ় হবে, সম্পর্ক ও ভালোবাসা ততো গভীর হবে এবং তা বান্দাকে পুরোপুরি আল্লাহর কাছে নিয়ে যাবে। ’

ইতিকাফ একটি ফকিলতপূর্ণ ইবাদত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে একদিন ইতিকাফ করে, আল্লাহ সেই ব্যক্তি ও দোজখের মধ্যে ৩ খন্দক পরিমাণ দূরত্ব সৃষ্টি করেন। ’

ইতিকাফের জন্য শর্ত হলো- মুসলমান হওয়া, পাগল না হওয়া, বালেগ হওয়া, নিয়ত করা, ফরজ গোসলসহ হায়েজ-নেফাস থেকে পবিত্র হওয়া, মসজিদে ইতিকাফ করা ও রোজা রাখা।

নারীরাও ইতিকাফ করতে পারেন। ঘরের যে অংশে সাধারণত নামাজ পড়া হয় সেই রকম কোনো অংশকে ইতিকাফের জন্য নির্দিষ্ট করে দশ দিন কিংবা কম সময়ের জন্য ইতিকাফের নিয়ত করে সেই জায়গায় বসে ইবাদাত-বন্দেগি শুরু করবেন। শরয়ী কোনো ওজর ছাড়া সেখান থেকে উঠে অন্যত্র না যাওয়া। (রাতে সেখানেই ঘুমাবেন)। ইতিকাফ অবস্থায় যদি মহিলাদের মাসিক শুরু হয়ে যায় তাহলে ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।