আমার জন্যই দয়াল রব্বানা বলছেন, লা তাকনাতু মিররাহমাতিল্লাহ। (হে বান্দা তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়-ই না।
তাই তো আল্লাহ বলেছেন, অন্যান্য ইবাদতের প্রতিদান ফেরেশতাদের মাধ্যমে দেবেন তিনি কিন্তু রোজার প্রতিদান আল্লাহ নিজ কুদরতি মাধ্যমে বান্দার হাতে তুলে দেবেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহতায়ালা তাকে একটি কাক উড়ার বয়স থেকে বড় হয়ে মৃত্যুবরণ করা পর্যন্ত উড়তে থাকলে যতটুকু দূরত্বে পৌঁছবে ঠিক ততটুকু জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে দিবেন। (মেশকাত, মুসনাদে আহমদ)
আরও পড়ুন>>
** যে কারণে সেহরি খাই
রমজান মাসে দুটি আমল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো দিনের বেলা রোজা রাখা এবং রাতে তারাবি নামাজে দাঁড়িয়ে কোরআন তেলাওয়াত করা অথবা তেলাওয়াত শোনা। রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য কেয়ামতের দিন সুপারিশ করবে।
হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, রোজা ও কোরআন আল্লাহতায়ালার কাছে বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে আমার রব, আমি তাকে দিনের বেলায় পানাহার ও যৌনচাহিদা থেকে বিরত রেখেছি। অর্থাৎ রোজা রাখতে গিয়ে দিনের বেলা সে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থেকেছে, অতএব তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন।
আর কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলা ঘুমাতে দেইনি অর্থাৎ সে ইফতারির পর শরীরে ক্লান্তি থাকা সত্ত্বেও না ঘুমিয়ে তারাবির নামাজে কোরআন তেলাওয়াত করেছে বা কোরআন শুনেছে। শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজে কোরআন তেলাওয়াত করেছে।
অতএব আপনি তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। তাদের উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে। তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। (মুসতাদরাকে হাকেম)
রমজানের কল্যাণ ও বরকত পেতে হলে আউলিয়ায়ে কেরামদের মতে ৬টি কাজ করা আবশ্যক। এক. জিহ্বাকে সংযত রাখতে হবে। মিথ্যা, পরনিন্দা, গিবত-শেকায়েত, চোগলখুরি, অনর্থক কথাবার্তা ইত্যাদি থেকে জবানকে হেফাজত করতে হবে। দুই. দৃষ্টি সংযত রাখতে হবে। চোখ দিয়ে হারাম ও নাজায়েজ কোনো কিছুর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া যাবে না। তিন. শ্রবণ শক্তির হেফাজত করতে হবে। কান দিয়ে অন্যায়, অসত্য কোনো কিছু শোনা যাবে না। চার. শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকেও গুনাহ থেকে হেফাজত করতে হবে। পাঁচ. হালাল খাবার দিয়ে ইফতার করতে হবে। ছয়. ইফতারের সময় আল্লাহর প্রতি বিশেষভাবে মনোনিবেশ করতে হবে এবং দোয়া করতে হবে।
সর্বদা এ ছয়টি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখলে রোজা ও রমজানের ফজিলত ও বরকত লাভ করা যাবে, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহতায়ালা আমাদের সঠিকভাবে রমজানের অবশিষ্ট রোজাগুলো পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন…!
লেখক: মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৮
এমএ