ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ পৌষ ১৪৩১, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ রজব ১৪৪৬

সালতামামি

বছরের আলোচিত ১০ সংলাপ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪
বছরের আলোচিত ১০ সংলাপ

বিদায়ী ২০২৪ সাল নানা কারণেই ছিল আলোচিত। নির্বাচন থেকেগণঅভ্যুত্থান— নানা ইস্যু এই বছরে ছিল আলোচনায়।

এসব ইস্যুতে নানা সংলাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছিল চর্চায়। প্রেক্ষাপট মিলে গেলেই এসব সংলাপ ব্যবহার করেন নেটিজেনরা। এর বাইরেও বন্ধুদের আড্ডা কিংবা কর্মস্থল, নানা স্থানে এসব সংলাপ মুখে মুখে শোনা যায়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিদায়ী সালের আলোচিত সেই সংলাপগুলো।

মুরুব্বি, উহুউহু
একটি ওয়াজ মাহফিলে বয়ান দিচ্ছিলেন মাওলানা মোস্তাক ফয়েজী। হঠাৎ মাহফিল ছেড়ে একজন উঠে চলে যেতে চাইলে তিনি বয়ানের মাঝেই বলে ওঠেন, ‘মুরুব্বি, উহু উহু। ’ পরে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর মোস্তাক ফয়েজীর ‘এই সোনামণি, বসো, উহু উহু’ সংলাপও নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায়।

হাউন আংকেল
গণঅভ্যুত্থান-পূর্ব বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ। কেউ কোনো সমস্যায় পড়লেই তার শরণাপন্ন হতেন। এই ‘মুশকিলে আসান’ হারুনকে নিয়েও একটি সংলাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

চলতি বছর একটি সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় উঠতি শিশু তারকা সিমরিন লুবাবা সাবেক ডিবি প্রধান হারুনকে ‘হাউন আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করে। এতে লুবাবা নেট দুনিয়ায় বেশ সমালোচনার মুখে পড়ে। গণঅভ্যুত্থানের সময়ে হারুনকে অনেকটা ব্যঙ্গ করেই ‘হাউন আঙ্কেল’ বলতে থাকেন।

শেখ হাসিনা পালায় না
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে এক পর্যায়ে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবর নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তিনি তখনো পালাননি। পরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানো হয়েছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। কিন্তু বলে দিতে চাই, শেখ হাসিনা পালায়নি, পালায় না। ’ 

পরে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ সংলাপটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। গণঅভ্যুত্থানের সময়ে দেয়ালে দেয়ালেও তার এই সংলাপ লেখা হয়।

পালাব না, কোথায় পালাব
‘আমরা এই দেশে জন্মেছি, এই দেশে মরব, পালাব না। কোথায় পালাব! পালাব না, প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠব’—বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে এক সময় এ কথা বলেছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

গণঅভ্যুত্থানের পর গা ঢাকা দিলে তার ‘পালাব না, কোথায় পালাব’ সংলাপটি বেশ আলোচনায় আসে। নেটিজেনদের অনেকেই তাকে মজা করে আরও কিছু নামেসম্বোধন করেন এবং এই সংলাপ জুড়ে দিয়ে প্রশ্ন রাখেন তিনি কোথায়।

আওয়ামী লীগের পতনের পর ওবায়দুল কাদেরের ‘শি হ্যাজ মেইড আস...’, ‘একটু অপেক্ষা করা যায় না, ‘বলব না, একটা শব্দও বলব না’, ‘মাসুদ তুমি কি কোনোদিনই ভালো হবে না’— সংলাপগুলোও দেয়ালে দেয়ালে দেখা যায়। আর সামাজিক মাধ্যমেও বেশ আলোচনায় চলে আসে।

নাটক কম করো পিও
‘নাটক কম করো পিও’ কুমিল্লার এক কিশোরের এই সংলাপ পুরো বাংলাদেশেই আলোচনার জন্ম দেয়। গণঅভ্যুত্থানের আগে থেকেই নেটিজেনরা এই সংলাপ ব্যবহার করছিলেন। পরে শেখ হাসিনার সঙ্গেও জুড়ে যায় এই সংলাপ। এ ছাড়া প্রেক্ষাপট মিলে গেলেই এই সংলাপ ব্যবহার করেন নেটিজেনরা।  

র্যা টস আসিফ নামের একজন শিল্পীর আঁকা ‘নাটক কম করো পিও!’ শিরোনামের একটি কার্টুন যে কতটা জনপ্রিয়তাপায়, তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢুঁ মারলেই বোঝা যায়।

গত অক্টোবরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় ছাত্র আন্দোলন ঘিরে আঁকা গ্রাফিতি ঘুরে দেখেন। শেখ হাসিনার একটি কার্টুনের সঙ্গে লেখা ছিল ‘নাটক কম করো পিও। ’ এই গ্রাফিতি দেখেহাসছিলেন তিনি।

প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও
গ্রামের এক শিশুর ‘প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও’ সংলাপও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনায় ছিল। প্রেক্ষাপট মিলে গেলেই নেটিজেনরা সংলাপটি ব্যবহার করতেন। এই সংলাপ নিয়ে অনেকে টিকটক ভিডিও ও শর্টসও তৈরি করেন। এমনকি এটি নিয়ে ডিজে গানও তৈরি হয়।

আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি
চট্টগ্রামে নৃশংস এক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বেরিয়ে আসে, শ্বশুরকে খুন করেন তার পুত্রবধূ। হত্যায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমে তিনি বলছিলেন, ‘আমি দোষী, আমি কি আপনাদের একবারও বলেছি আমি নির্দোষ। তখন আমার আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি। ’ তার এই আবেগ-বিবেক কাজ করার সংলাপও নেটিজেনদের মধ্যে বেশ ছড়িয়ে পড়েছিল।

নাইস অ্যান্ড অ্যাট্রাকটিভ
চলতি বছর সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে সাংবাদিক ও গায়িকা নবণীতা চৌধুরীর একটি ছবির নিচে ‘নাইস অ্যান্ড অ্যাট্রাকটিভ’ লিখে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। তার এই মন্তব্য অনলাইন-অফলাইন দুই মাধ্যমেই আলোচনায় ছিল। কারো সম্পর্কে ইতিবাচক কোনো মন্তব্য করতে গেলেই ‘নাইস অ্যান্ড অ্যাট্রাকটিভ’ জুড়ে দিতেন নেটিজেনরা।

দেখেন যা ভালো মনে করেন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ চর্চিত বাক্য। এটি বেশি ছড়ায় অভ্যুত্থানের সময়। তখনসোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা কোনো বিষয়ে পর্যবেক্ষণ বা পর্যালোচনা দিয়ে পরে লিখে দেন ‘দেখেন যা ভালো মনে করেন’। অভ্যুত্থানের পরও এই মন্তব্যটির ব্যবহার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।