প্রযুক্তির দৌড়ে ইন্টারনেটের গতি যত বাড়ছে, ভুয়া নিউজ তারও চেয়ে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বময়। দেখে নেওয়া যাক এবছর ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমনকি নিউজ পোর্টালগুলোতে রাজত্ব করা কয়েকটি ভুয়া নিউজ-
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি হতে চাওয়া মেয়েটি
চলতি বছর ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে একটি মেয়ের অদ্ভুত কিছু ছবি।
১৯ বছর বয়সী ওই বালিকা কি আসলেই এরকম করেছেন কিনা তা নিয়ে অনেকের মনেই ছিল সংশয়। রহস্য খোলাসা হলো তার একটি ইন্টারভিউতে। তিনি জানান, অ্যাঞ্জেলিনা জোলির মতো হওয়ার কোনোই শখ নেই তার। ৫০ বার সার্জারির তথ্যটিও সত্য নয়।
ছবিগুলোর সবই মেকআপ ও ফটোশপের কারসাজি। আর এতে চেহারা অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে মিলে যাওয়াটা ছিল কাকতালীয়।
বিবেকানন্দের মুণ্ডহীন মূর্তি
অক্টোবরে স্বামী বিবেকানন্দের একটি মুণ্ডহীন ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দাবি করা হয়, এটা কট্টর মুসলিমদের কাজ। ভারতীয় কিছু লোকাল সংবাদেও ছাপা হয় খবর। ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।
কিন্তু এটা আসলে গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়। একজন ব্যক্তি মজা করে ছবিটা শেয়ার করেছিলেন টুইটারে। আর তাতেই জন্ম নেয় গুজবের বিভিন্ন শাখা-উপশাখা।
হারিকেন ইরমার ভুয়া ভিডিও
সেপ্টেম্বরে হেনরি ডুরান নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে একটি ঝড়ের ভিডিও শেয়ার করেন। ক্যাপশনে লেখা- ‘হারিকেন ইরমা’। মুহূর্তেই ভিডিওটি বিশ্বময় ভাইরাল হয়, ভিউ হয় সাড়ে তিন কোটি।
হেনরি ডুরানের শেয়ার করা ভিডিও ক্লিপটি ছিল ভুয়া। ভিডিওটি আরও এক বছর আগেই ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়। অনেকের মতে তা ২০১৬ সালে উরুগুয়েতে আঘাত হানা টর্নেডোর ভিডিও।
জি-২০ সম্মেলনের ভুয়া ছবি
চলতি বছর জার্মানিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের একটি ছবি বিশ্বজুড়ে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছিল। ছবিতে দেখা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোগান বিচিত্র মুখভঙ্গি করে কিছু জানতে চাইছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে। কিন্তু পুতিন জবাব দেওয়ার বদলে উদাস হয়ে বসে আছেন।
ছবিটা নিয়ে শুরু হয় নানা রকম কৌতুক। তবে ছবিটা আসলে ভুয়া। আসল ছবিতে পুতিনের উপস্থিতি ছিল না। সবই ফটোশপের কারসাজি। এজন্যেই বলা হয়, ইন্টারনেটের সব কথা বিশ্বাস করতে নেই।
চিতা ও হরিণের হৃদয়স্পর্শী ছবি
দু’টি চিতা একটি হরিণকে আক্রমণের একটি ছবি এ বছর ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। ছবিটি ভাইরাল হওয়ার কারণ, চিতার আক্রমণে হরিণের বিচিত্র প্রতিক্রিয়া এবং এর পেছনের গল্প। বলা হয়েছিল, হরিণটি তার শাবককে চিতার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য নিজেকে বলি দিয়েছে। আর ছবিটা ফ্রেমবন্দির সময় ফটোগ্রাফার নিজেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
এমন হৃদয়স্পর্শী গল্প-ওয়ালা ছবি ভাইরাল হওয়াটাই স্বাভাবিক। অনেক সংবাদমাধ্যমেও গল্পটা প্রকাশিত হয়। তবে দুঃখের বিষয় গল্পটা ভুয়া। সত্যি গল্পটা প্রকাশ করলেন ফটোগ্রাফার নিজেই।
ফটোগ্রাফার অ্যালিসন বাটিগিগ তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, হরিণটি আসলে চিতার আক্রমণে ভয়ে জমে গিয়েছিল। তাই হরিণটির এমন বিচিত্র প্রতিক্রিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
এনএইচটি/এএ