ঢাকা: করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে ইতিহাসের কঠিনতম একটি অর্থনৈতিক মন্দার বছর পার করলো বাংলাদেশ। অর্থনীতির এমন কোনো খাত নেই যা এ বছর আক্রান্ত হয়নি।
প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই আবার নতুন করে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ লেগেছে বিশ্বজুড়ে। এমন নেতিবাচক খবরের মধ্যেই আবার আশার আলো দেখিয়েছে রেমিট্যান্স, বৈদেশক মুদ্রার রিজার্ভ ও কৃষি খাতে।
এদিকে বছরের শুরুতে দেশের অর্থনীতি থমকে দাঁড়ালেও সব শ্রেণির মানুষের কর্মস্পৃহা ও সরকারের চেষ্টায় দ্রুততম সময়েই আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনীতি। তবে বৈশ্বিক করোনার গতিপথ কোন দিকে যায়, তার ওপরই নির্ভর করছে আগামীর অর্থনীতি। যদিও এ সময়ের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে গেছে দারিদ্র্যের হার। প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষের আয় কমে গেছে। শিল্প খাতে নেমে এসেছিল স্থবিরতা। বড় বড় শিল্পের মালিক থেকে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এখনো ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। পাশাপাশি ধস নেমেছে বিদেশি বিনিয়োগ নিবন্ধনে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী। বিদেশফেরত কর্মীদের নিয়েও দিশাহারা সরকার। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ অর্থনীতির সংকট সামলাতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। এজন্য অর্থনীতির গতি ফেরাতে দ্বিতীয় প্রণোদনা নিয়েও ভাবছে সরকার। বিশ্বমন্দার এই সময়ে স্থবির হয়ে পড়া ব্যবসা-বাণিজ্য আগামী দিনগুলোতে আরো অনিশ্চয়তায় পড়বে এমন আশঙ্কা রয়ে গেছে। তাই বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থান তৈরি করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উৎপাদন ও সরবরাহের অনেক খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু অর্থনীতির চাহিদার দিকে সেভাবে উন্নতি দেখা যায়নি। রাজস্ব আয়, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান এখনো নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। সে কারণে অর্থনীতি স্বাভাবিক গতিতে ফেরাতে আরো ৬ মাসের মতো সময় লাগবে। এর মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে নতুন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ জন্য কার্যকরভাবে করোনা মোকাবেলায় দ্রুত টিকা আনা, ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোয় নীতি সহায়তার পরিধি বাড়ানো, ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি অবহেলিত খাতের জন্য নতুন প্রণোদনা দেওয়ার দরকার বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, করোনা এই বছর অর্থনীতিতে স্বল্প ও মধ্যকালীন একটা নেতিবাচক ছাপ রেখে গেছে। স্বল্পকালীনের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি এই সবকিছুর মধ্যেই একটা ছাপ ছিলো। মোটামুটি সার্বিক অর্থনীতির সব সূচকেই করোনার প্রতিফলন দেখা যায়। এছাড়া আয় ও ভোগ বৈষম্যসহ উপান্তজনরা প্রান্তজনে পরিণত হয়েছেন। আর প্রান্তজনরা তস্যপ্রান্তজনে পরিণত হয়েছেন। তবে ২০২০ সালে একটি বিষয়ে ইতিবাচক ছিলো সেটা হলো আমাদের কৃষি, কৃষক ও খাদ্য নিরাপত্তা ও সরবরাহ আমরা সচল রাখতে পেরেছি।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে চারটি বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে গেছে। যেমন, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য, মানবিক ও খাদ্য। তবে বাংলাদেশ শেষের বিপর্যয়ে পড়েনি। এজন্য আমাদের ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে যেতে হবে। ই-কর্মাসে অনেক সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য আমাদেন ইন্টারনেটের সম্প্রসারণ, দাম কমানো ও মান বাড়াতে হবে এবং দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। মধ্যমেয়াদি যে সমস্যাগুলো হয়েছে সেগুলোর মধ্যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে বিচ্যুতি ঘটছে তার একটা পদচিহ্ন সামনে থাকবে। এ বছরটা আমাদের বড় বিচ্যুতির মধ্য দিয়ে গেছে এটা কাটানোর জন্য বিশেষভাবে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। আর আগামী বছর আমরা এই চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে এগোতে হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগে একটা স্থবিরতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিদেশি বিনিয়োগ কমে গেছে। ফলে সরকার আরো বেশি ঋণগ্রস্থ হচ্ছে। সেখানে আমাদের ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগকে চাঙ্গা করতে হবে। এছাড়া কর্মসংস্থানেও প্রভাব পড়ছে। শ্রম বাজারে একটা বড় ধাক্কা আসছে। কিন্তু সরকার ৫ বছরে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ঘোষণা দিয়েছিল সেখানে প্রভাব পড়বে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সিএসএমই খাতে। তারা যাতে বিনিয়োগ করতে পারে ও ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে হবে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উতকর্ষতা সাধন ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে অর্থনীতির প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি এটা এখন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বাংলানিউজকে বলেন, চলতি বছরটা অর্থনীতির জন্য ও সারা পৃথিবীর জন্য খারাপ একটা বছর গেছে। সেটা ভুলে যাওয়াটাই ভালো। সব খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের অনেক অর্জন বিপর্যস্ত হয়েছে। যেমন, দারিদ্য বিমোচন, স্বাস্থ্য খাতে ঝুঁকি, শিক্ষা ব্যবস্থা পুরো থমকে গেছে গত একটা বছর। আমাদের অর্থসূচকগুলোতেও প্রভাব পড়েছে শুধু রিজার্ভ দিয়ে কোনো লাভ হবে না।
আমাদের আমদানি কমে গেছে। সবমিলিয়ে আমরা সংকটের মধ্যে আছি আগামী ছয় মাস আরো সংকটে থাকবো। এজন্য আগামী নতুন বছরের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। করোনার দ্বিতীয় ওয়েভের জন্য এসএমইখাতসহ রপ্তানিতে সহায়তা দিতে হবে। দ্বিতীয় ধাক্কা সমালাতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকার নতুন প্রণোদনা দিলেই চলবে।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সংক্রমণ মোকাবেলায় ২৬ মার্চ থেকে টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। অঘোষিত এই লকডাউনে জরুরি সেবা, কাঁচাবাজার, নিত্যপণ্য ও ওষুধের দোকান ছাড়া সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে অর্থনীতি বাঁচাতে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট, শপিং মল খুলে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু হয় গণপরিবহন। করোনাভীতি কাটিয়ে মানুষ শামিল হয় জীবিকার মিছিলে। আর নিষেধাজ্ঞা শিথিল ও প্রণোদনা প্যাকেজের কারণে ক্রমেই গতি ফিরতে থাকে ব্যবসা-বাণিজ্যে। অর্থনীতি সচল রাখার যুদ্ধে বড় ভূমিকা রাখে কৃষি খাত ও প্রবাসী আয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে একের পর এক রেকর্ড হতে থাকে। শক্তিশালী কৃষি খাত তুলনামূলক শক্ত অবস্থানে থেকে অর্থনীতিকে সহায়তা দেয়। এখন ধীরে ধীরে কাটছে অনিশ্চয়তার মেঘ। এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে।
দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে দেখা যাচ্ছে, করোনা সংকটের মধ্যেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয় ও বৈদেশিক ঋণ সহায়তার ওপর ভর করে রিজার্ভ এই উচ্চতায় পৌঁছেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়াকে নির্দেশ করে।
করোনাকালে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে কৃষি। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ১৫.৪৪ শতাংশ অবদান কৃষি ও সেবা খাতের। কর্মসংস্থানেও বড় ভূমিকা রাখছে খাতটি। আয় কমে যাওয়ায় শহরত্যাগী মানুষগুলোকেও ধারণ করেছে গ্রামীণ অর্থনীতি।
ইপিবি হিসাব অনুযায়ী বেড়েছে রপ্তানি আয়: চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সার্বিকভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৯৩ শতাংশ। এ সময় রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৫৯২ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের (১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) পণ্য। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫৭৭ কোটি ৭১ লাখ ডলারের পণ্য। এর মধ্যে নভেম্বর মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ৭৬ শতাংশ।
তবে সরকারি লক্ষ্য অনুযায়ী রপ্তানি আয় করতে হলে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে হবে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছর শেষে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের (৪ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা) রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য অর্জন চ্যালেঞ্জের মুখে। এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সার্বিকভাবে পণ্য আমদানি কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ।
অন্যদিকে করোনায় বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মাঝেও ভালো অবস্থায় আছে দেশের পুঁজিবাজার। এশিয়া ফ্রন্টিয়ার ক্যাপিটালের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে পুঁজিবাজারের উত্থানে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশ। এমনকি ২৪.৪ শতাংশ উত্থানের মধ্য দিয়ে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো করেছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার।
রেমিট্যান্সে স্বস্তি: করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত রেখেছেন। গত নভেম্বরে তারা ২০৭ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। সব মিলিয়ে ১ জানুয়ারি থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে এসেছে ২ হাজার ৫০ কোটি ডলার (১ লাখ ৭৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকা), যা ২০১৯ সালের পুরো সময়ের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। এর আগে এক বছরে বাংলাদেশে এত রেমিট্যান্স আর কখনো আসেনি। ২০১৯ সালে ১ হাজার ৮৩৩ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
তবে বিদেশি বিনিয়োগ, বৈদেশিক বাণিজ্য, রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি— এসব ক্ষেত্রে নেতিবাচক ধারা চলছে।
বিদেশি বিনিয়োগে ধাক্কা: বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে করোনার কারণে। ২০২০ সালের প্রথম তিন মাস, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে কিছু বিনিয়োগ এলেও পরের দুই মাস এপ্রিল ও মে বিনিয়োগশূন্য থাকে। সে সময় চলা লকডাউনের কারণে সারা বিশ্বই কার্যত অচল হয়ে যায়। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ হয় ৫৮ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আর চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দেশে ৫৪ কোটি ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৭১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এই হিসাবে এই তিন মাসে মোট এফডিআই কমেছে ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতি: এবারের বাজেটে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নানামুখী পদক্ষেপ থাকলেও লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে আদায়ের ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এনবিআর রাজস্ব আদায় করেছিল ২ লাখ ১৮ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জন্য ৫১ শতাংশ বাড়িয়ে এনবিআরকে আদায় করতে হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে রয়েছে ২৫ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা।
কমেছে রপ্তানি আদেশ: বাংলাদেশের রপ্তানির প্রায় ৮৪ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। করোনার প্রথম ধাক্কা কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল। এর মধ্যেই যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনা শনাক্তের খবরে উদ্বেগ আরো বেড়েছে। করোনার প্রথম ধাক্কায় মার্চ থেকে রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমলেও জুলাই থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছিল। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকার পর অক্টোবর থেকে ফের কমতে শুরু করে তৈরি পোশাক রপ্তানি। বিজিএমইএর হিসাব অনুযায়ী, চলতি ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে এ খাতের রপ্তানি কমে গেছে সোয়া পাঁচ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, ডিসেম্বর শেষে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ, যদিও কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের পথ এখনো রুদ্ধ। দ্রুত বাড়ছে বেকার ও দারিদ্র্যের হার। নতুন কর্মসংস্থান প্রায় বন্ধ। বিদেশেও নতুন করে যাচ্ছে না কোনো কর্মী। তবে প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বছরের শুরুতে ভাটা পড়লেই পরবর্তী সময়ে তা আবার ঘুরে দাঁড়ায়। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নতুন নতুন রেকর্ড হয়েছে সংকট সত্ত্বেও। ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে রিজার্ভ। এছাড়া করোনার কারণে বিশ্বের অর্থনীতি এই বছরে অন্তত ৩ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই কারণে চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতি ৫.৬ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাড। চলমান করোনা মহামারি মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে ১৩ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
জিসিজি/এজে