ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩২, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৬

সারাদেশ

বীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান, প্রমাণ মিলেছে দুর্নীতি-অনিয়মের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
বীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান, প্রমাণ মিলেছে দুর্নীতি-অনিয়মের বীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালাচ্ছে দুদক

চিকিৎসাসেবা প্রদানে হয়রানি ও অবহেলাসহ নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এছাড়াও স্টাফদের অনিয়ম-দুর্নীতি, আয়ের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেওয়ায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছে দুদকের কর্মকর্তারা।

একইসঙ্গে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করায় ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করারও সুপারিশ করা হয়েছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ‌

দুদক দিনাজপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী ইসমাইল হোসেন এ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় দুদকের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা দিতে হয়রানি ও দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অনিয়ম ও দুর্নীতিরসহ নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেন দুদকের কর্মকর্তারা। এ সময় তারা হাসপাতালটিতে সেবা নিতে আসা রেগীদের থেকে বিভিন্ন অভিযোগ এবং ফি বাবদ টাকা সরকারি কোষাগারে পূর্ণ জমা না হওয়ার তথ্য পান।

 

হাসপাতাল ল্যাবে কর্মরত কর্মচারী আল আমিন ও আরেফিন আগন্তুক রোগীদের কাছে পরীক্ষার নামে বিনা রশিদে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা এবং ল্যাব, এক্সরেসহ বিভিন্ন খাত থেকে যে পরিমাণে ফি আদায় হয় তা সম্পূর্ণ সরকারি কোষাগারে জমা না হওয়ার বিষয়টিও তদন্তে উঠে আসে। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান উন্নত, খাবারের মান উন্নত ও সার্বিক বিষয়ে নজরদারি করার জন্য দুদকের টিম উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে পরামর্শ দেন।

একটি তথ্যে জানা যায়, হাসপাতালের ল্যাব থেকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ফি আদায় হয়, যা মাসে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা, এক্সরে থেকে প্রতিদিন ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা আদায় হয় যা মাসে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা। কিন্তু মাস শেষে সরকারি কোষাগারে জমা হয় নামমাত্র।

প্রতিদিনের আয়ের টাকা সরকারি রাজস্ব কোষাগারে জমা না দিয়ে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অপরাধে হিসাবরক্ষক আব্দুল মাওলা, ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট আল আমিন ও মহিবুল আরেফিন, এক্সকে অপারেটর (মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট রেডিওগ্রাফি) মনোরঞ্জন দেবশর্মা ও শাহনেওয়াজ আকতারের বিরুদ্ধে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে দুর্নীতি দমন কমশন (দুদক)।

একইসঙ্গে রোগীদের নিম্নমান এবং কম পরিমাণ খাদ্য সরবরাহ করায় ঠিকাদার সৈয়দ শরিফুল হোসেনের কার্যাদেশ বাতিল করার সুপারিশসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রতিবেদন করার কথা জানিয়েছে দুদক দিনাজপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন।

দুদক দিনাজপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল হোসেন জানান, কর্মরত কর্মচারীদের বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্নীতি প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া ২০২২-২০২৩ এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছু নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে এবং পর্যালোচনা করে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. আফরোজ সুলতানা লুনা বলেন, দুদক অভিযান চালিয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হয়েছে। সব বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে লিখিত ভাবে জানানো হবে, তিনি পদক্ষেপ নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৫

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।