ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০০ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

হাসিনাকে ‘হত্যাচেষ্টার’ মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাসপ্রাপ্ত বিএনপি নেতার মৃত্যু

উপজেলা করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ৯:২৮ পিএম, এপ্রিল ২৭, ২০২৫
হাসিনাকে ‘হত্যাচেষ্টার’ মামলায়  মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাসপ্রাপ্ত বিএনপি নেতার মৃত্যু বীর মুক্তিযোদ্ধা এ,কে,এম, আক্তারুজ্জামান আকতার: ফাইল ফটো

পাবনা (ঈশ্বরদী): শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাসপ্রাপ্ত পাবনার ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ,কে,এম, আক্তারুজ্জামান আকতার (৭৪) মারা গেছেন।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে ঈশ্বরদী শহরের উপজেলা পরিষদ সড়কের পিয়ারপুর ঈদগাহ ময়দানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার শেষে তার জানাজা হবে।

পরে পিয়ারপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।  

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি নেতা আকতারের বড় ছেলে ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এ,এ,এম, সাজেদুজ্জামান জিতু।  

সোমবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারপুর নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হলে দ্রুত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। তিনি ৪ ছেলে নাতি-নাতনিসহ অসংখ্যা গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বিএনপি নেতা আকতার ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ৩ নং ওয়ার্ডের পিয়ারপুর মোড় এলাকার মৃত ওয়াজেদ হোসেনের চতুর্থ সন্তান।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স খারিজ করেন এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল মঞ্জুর করে চলতি বছরে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব–উল ইসলাম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

২০১৯ সালের ৩ জুলাই এ মামলায় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডের রায় দেন পাবনার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩–এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. রুস্তম আলী।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার ৪৭ নেতাকর্মীর সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান আকতার খালাস পান। তার আগে পাঁচ বছর কারাভোগের পর ১১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ,কে,এম, আক্তারুজ্জামান আকতারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু,  ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু ও ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জুয়েল।

১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা উত্তরাঞ্চলে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে ট্রেনে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশের সময় ট্রেনবহরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় ট্রেনে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলার অভিযোগে ঈশ্বরদী জিআরপি (রেলওয়ে পুলিশ) থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির নেতা জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলা করার পরের বছর পুলিশ কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র জমা দেয়। কিন্তু আদালত সে অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে অধিক তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান।  

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলাটির পুনঃতদন্ত হয়। ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল পুলিশ ঈশ্বরদীর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনের নামে আদালতে আবার অভিযোগপত্র জমা দেয়। বিচার শেষে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডের রায় দেন। চলতি বছরে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মামলাটি খারিজ করে দিয়ে বেকসুর খালাস পান।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৫
জেএইচ 

বাংলাদেশ সময়: ৯:২৮ পিএম, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ /

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।