রাজবাড়ীর পাংশায় পূর্ব শত্রুতার জেরে রাশিদুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে ও হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৩ মে) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের নিভা গ্রামে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
নিহত রাশিদুল পাংশা উপজেলার পাট্টা গ্রামের কিয়ামদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক ছিলেন।
রাশিদুলের ভগ্নিপতি ফজলুর রহমান বলেন, দুই বছর আগে নিভা গ্রামের সুদের কারবারি ইসলাম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে রাশিদুল ৭ হাজার টাকা ধার নেন। দেড় বছর আগে সুদসহ সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করা হলেও ইসলাম আরও টাকা দাবি করতে থাকেন। টাকার জন্য ইসলাম এক পর্যায়ে রাশিদুলের চায়ের দোকান ও বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। এতে ভীত হয়ে রাশিদুল পরিবারসহ মাগুরার শ্রীপুরে ফজলুরের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
সাত মাস আগে রাশিদুল আবার নিজ বাড়িতে ফিরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও ইসলাম ও তার অনুসারীরা কয়েক দফায় তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন ফজলুর।
তিনি বলেন, ২২ দিন বরিশালে ধান কাটা শ্রমিকের কাজ করে শুক্রবার (২ মে) রাত দেড়টার দিকে বাড়ি ফেরেন রাশিদুল। তারা ১৮-২০ জন শ্রমিক একসঙ্গে কাজ করে মজুরি হিসেবে এক ট্রাক ধান নিয়ে ফিরেন। ধানগুলো তারা রুপিয়াট গ্রামে সঙ্গীয় এক শ্রমিকের বাড়িতে রাখেন। শনিবার সকাল ৯টার দিকে সেই ধান ভাগ করার জন্য রুপিয়াট যাচ্ছিলেন রাশিদুল। পথে নিভা গ্রামে এলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ইসলাম, রফিক, খালিদ, সিন্টু, সুমন, সাদ্দাম ও ইকবালসহ ২০ থেকে ২৫ জন তার পথরোধ করে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। স্থানীয়রা রাশিদুলকে উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে রাশিদুলের মৃত্যু হয়।
ফজলুর রহমান আরও বলেন, রাশিদুলের হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়, পিটিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় শরীরের বিভিন্ন অংশ। তাকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা মামলা করব এবং এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় খালিদ নামে অভিযুক্ত একজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআরএস