ফেনী: ফেনীতে দুই কিশোরের বিরুদ্ধে কবুতর ও মুরগি চুরির অভিযোগ এনে শত শত মানুষের সামনে তাদের মাকে হেনস্তা করে নাকে খত দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতে ফেনী সদর উপজেলের পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের খালুর দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে পুলিশ বলছে, এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, সম্প্রতি খালুর দোকান সংলগ্ন জাহাঙ্গীরের বাড়ি থেকে কবুতর ও মুরগি চুরির অভিযোগ উঠে স্থানীয় দুই কিশোরের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে ১ মে রাতে সালিশের আয়োজন করে ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর। সালিশে অভিযুক্ত কিশোরদের মারধর করে পুলিশে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা শুনে এলাকা থেকে পালিয়ে যায় কিশোররা। রাতে সালিশে কিশোরদের না পেয়ে তাদের মাকে ডেকে সবার সামনে নানাভাবে হেনস্তা করে নাকে খত দেওয়ানো হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাকে খত দেওয়ার ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রাতের বেলায় বহু লোকজনের সামনে লাঠি নিয়ে দুই কিশোরের মাকে নাকে খত দিতে মাটিতে দাগ দেওয়া হয়। ভয়ে বাধ্য হয়ে বোরকা পরা দুই নারী মাটিতে লুটে নাকে খত দিচ্ছেন।
কিছুক্ষণ পরই এ ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। এরপর কিশোর অপরাধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে গ্রামে সালিশের আয়োজন করে তাদের মায়েদের হেনস্তা করা ও নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশিষ্টজনরা। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ফেনীবাসী৷
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত দুই কিশোরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে সালিশের আয়োজন করা ষড়যন্ত্রমূলক। ওই সালিশে কিশোরদের অপরাধে তাদের মায়েদের মধ্যযুগীয় কায়দায় হেনস্তা করা আইনগত অপরাধ। এর বিচার হওয়া উচিত।
ফেনীর জজ কোর্টের এজিপি অ্যাডভোকেট রহিমা খাতুন হেলপী বলেন, একজনের অপরাধে অন্যজন শাস্তি পেতে পারে না। জনসম্মুখে এমন নির্যাতন অপরাধ।
জানতে চাইলে ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। বিয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএইচডি/আরবি