নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কথা কাটাকাটির জেরে মো. আব্দুল্লাহ খাঁন রায়হান নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আট আসামির নাম উল্লেখসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) নিহত যুবকের বাবা মো. সামিম খান (৪২) বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলা দায়েরের পর ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার আসামিরা হলেন- মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার মৃত আলী আহম্মদের ছেলে হৃদয় ওরফে পাইটু হৃদয় (১৫), মো. মেহেদী (১৫), শুভ (১৫), আব্দুল সামাদের ছেলে মো. হৃদয় (৩০), সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল নয়াপাড়া এলাকার মো. ফারুকের ছেলে মো. সাব্বির (১৮), সিদ্ধিরগঞ্জের কাশেমপাড়া কদমতলি এলাকার দুলালের ছেলে মো. আতিক (২২), সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী নাভানা সিটি এলাকার মো. আবুল কাশেমের ছেলে মো. জাহিদ (১৮), নোয়াখালী জেলার মাইজদী থানার মনির হোসেনের ছেলে আল আমিন (২০)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরও আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন-হৃদয়, সাব্বির, আতিক ও আল আমিন।
মামলার বাদী বলেন, আমার ছেলে মো. আব্দুল্লাহ খাঁন রায়হান আমার সঙ্গে এসি সার্ভিসিংয়ের কাজ শিখে। গত ২৩ মে বিকেল পাঁচটার দিকে আমার ছেলেসহ আরও ৪-৫ জন বন্ধু দক্ষিণ কদমতলী ডিঅ্যান্ডডি লেকপাড়ে হৃদয়ের ক্লাবের ভেতরে মোবাইল ফোনে ফ্রি-ফায়ার গেমস খেলে। গেম খেলা শেষে আমার ছেলে তার বন্ধুদের নিয়ে ক্লাবের দক্ষিণ পাশের চত্বরে আড্ডা দেয়। এ সময় মো. মেহেদী ও শুভসহ অজ্ঞাতনামা একজন আমার ছেলে ও তার বন্ধুদের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মো. আশরাফুল ইসলাম (১৫) আমার ছেলেকে জানায় যে তারা একদিন আগে তাকে মারধর করেছে। তখন তাদের সঙ্গে আমার ছেলের সঙ্গে তাদের তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতি হয়।
এ ঘটনার পর মেহেদীর সঙ্গে থাকা অজ্ঞাতনামা একজন ফোন করে হৃদয় আতিক ও জাহিদসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে ডেকে নিয়ে আসে। এ সময় আমার ছেলে ও তার বন্ধুরা ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার সময় তারা আমার ছেলেকে বলে, তোমরা যেতে পারবে না, ক্লাবে এসো। তখন সবাই নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন দক্ষিণ কদমতলী ডিঅ্যান্ডডি লেকপাড়ে হৃদয়ের ক্লাবের সামনে পৌঁছালে আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা আমার ছেলে ও তার বন্ধুদের মারপিট করতে শুরু করে।
একপর্যায়ে হৃদয় তার সঙ্গে থাকা চাকু দিয়ে হত্যার উদ্দেশে আমার ছেলের বুকের বাম পাশে আঘাত করলে আমার ছেলে রক্তাক্ত জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে। তখন আমার ছেলের বন্ধুরা দ্রুত আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য সুফিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য খাঁনপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। নারায়ণগঞ্জ হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলে সেখানে আমার ছেলেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুর আলম জানান, শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এমআরপি/জেএইচ