ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ৩০ মে ২০২৫, ০২ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

সেবার জন্য কেউ ঘুষ চেয়ে হাত বাড়ালে থুতু দেবেন: সারজিস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩৭, মে ২৯, ২০২৫
সেবার জন্য কেউ ঘুষ চেয়ে হাত বাড়ালে থুতু দেবেন: সারজিস

লালমনিরহাট: সেবার জন্য কেউ ঘুষ চেয়ে হাত বাড়ালে থুতু দিতে বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।  

তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত ভারতের যে আচরণ বাংলাদেশের সঙ্গে, তা সন্তোষজনক নয়।

এ আচরণ দিয়ে যদি ভারত মনে করে বাংলাদেশের কাছে প্রতিবেশীর মতো সম্পর্ক তারা পাবে, সেটা তারা কখনো পাবে না।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার চৌরাঙ্গী মোড়ে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।  

তিনি আরও বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে রক্তাক্ত করা হয়েছে যার নির্দেশে, সেই খুনি হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রিত থাকবে, ততদিন বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না। সম্পর্ক স্বাভাবিক যদি করতে চায়, তাহলে প্রতিবেশীর মতো অতটুকু শ্রদ্ধা ও সম্মানের সম্পর্ক হতে হবে, সমতার সম্পর্ক হতে হবে। আগের মতো ওই রকম দাসত্বের সম্পর্ক আর বাংলাদেশের মানুষ মানবে না।

সারজিস আলম আরও বলেন, আমাদের বিজিবি অকুতোভয় সীমান্তরক্ষী। তাদের আওয়ামী লীগ জিম্মি করে রেখেছিল। তাদের যতটুকু শক্তিমত্তা, সেইটুকু প্রকাশ করতে দেয়নি। তাদের বিএসএফের কাছে ছোটো করে রেখেছিল। আমরা বিশ্বাস করি, বিজিবির সেই রকম সক্ষমতা আছে- পৃথিবীর যে কোনো সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে টেক্কা দেওয়ার। সক্ষমতা মানে শুধুমাত্র অস্ত্রের সক্ষমতা নয়, কলিজার সক্ষমতা থাকতে হবে। কলিজার সক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ছিল বলে একাত্তরে তাদের অস্ত্র না থাকার পরও স্বাধীনতা অর্জন করে এনেছিল। আমরা সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও আপনাদের বলছি, আমাদের জায়গা থেকে সচেতন থাকতে হবে।  

আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করব, দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র আপস নয়। যে কোনো ধরনের পুশ ইন, এজেন্ট পাঠানো এগুলো আমাদের দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত মনে করি। এগুলোর বিরুদ্ধে সরকার, প্রশাসন ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি, তাহলে এটার কোনো সুযোগ থাকবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি, যোগ করেন সারজিস।

তিনি আরও বলেন, পুরো বাংলাদেশ না কি বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আগামীতে না কি পরিকল্পনা হচ্ছিল বাইরে বিদ্যুৎ পাঠানোর। কিন্তু প্রকল্পের নামে বাংলাদেশ থেকে টাকা লুটপাট করা হয়েছে আর ভারতের আদানির পকেট ভারী করা হয়েছে। বিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে এ বাংলাদেশ থেকে খুনি হাসিনার পরিবার ভারতের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে লাখ লাখ কোটি টাকা পার্সেন্টেজ নিয়েছে। এভাবে তারা চুরি করে আমাদের টাকাগুলো নিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে থেকে বড় বড় চক্রান্ত করেছে। যদি তারা এ চুরি না করতো, তাহলে আওয়ামী লীগের খুনি দালালরা দেশের বাইরে এভাবে আলিশান জীবনযাপন করতে পারতো? 

দুর্নীতি প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, যদি কেউ সেবা দেওয়ার আগে ঘুষের টাকার জন্য হাত বের করে দেয়, তাহলে সেই হাতে আপনারা থুথু দেবেন। কোন থানায় ঘুষখোর পুলিশ থাকবে না। ভালো পুলিশকে সম্মান করবেন। কোনো ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। পাটগ্রামে পাথর তুলে কেউ কেউ টাকা কামাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো কোনো একদিন হঠাৎ পাটগ্রাম ডুবে যাবে।  

পথসভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা বিনা, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ, এনসিপি লালমনিরহাট জেলা কমিটির সমন্বয়ক রকিবুল হাসানসহ অনেকে।

এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।