মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে এক মাসে ৩৩৭ জনকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যেই এসব বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।
উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর, দক্ষিণ শাহবাজপুর ও পাল্লাথল সীমান্ত, জুড়ী উপজেলার রাজকি সীমান্ত, কুলাউড়া উপজেলার মুরইছড়া সীমান্ত, কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই, বাগীছড়া ও চাম্পাছড়া সীমান্ত দিয়ে এসব অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।
গত ৭ মে থেকে অবৈধভাবে মৌলভীবাজার জেলায় পুশ ইনের ঘটনায় ৩৩৭ জন বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন। তার মধ্যে বড়লেখা উপজেলা দিয়ে ২৫১ জন, জুড়ী উপজেলা দিয়ে ১০ জন, কুলাউড়া উপজেলা দিয়ে ২১ জন ও কমলগঞ্জ উপজেলা দিয়ে ৫৫ জন। এছাড়া আরও কয়েক শতাধিক লোক সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করলেও বিজিবি বা স্থানীয় প্রশাসন তাদের আটক করতে পারেনি।
আটকদের মধ্যে পুরুষ, নারী ও শিশু ছিল। এদের বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল, চট্টগ্রাম, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।
কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শীব নারায়ণ শীল বলেন, আমরা যাদের আটক করি তাদের কাছে জানতে পারি তারা দীর্ঘ পাঁচ বছর থেকে ভারতের আসামে বসবাস করে আসছিলেন। হঠাৎ করে ভারতীয় পুলিশ তাদের বাড়িঘর ভেঙে হেলিকপ্টারে ত্রিপুরার মানিক ভান্ডারে নিয়ে এসে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। পরে বিএসএফ কয়েকজনকে ধলই সীমান্ত দিয়ে গেট খুলে পুশ ইন করলে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তবে অন্যদের কোন সীমান্তে নিয়ে গেছে তারা বলতে পারেননি।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী এম এ হামিদ বলেন, সীমান্ত দিয়ে হাজারের বেশি মানুষ অনুপ্রবেশ করেছে। এসব ক্ষেত্রে বিজিবি কয়েকশ লোককে আটক করলেও অধিকাংশদের আটক করতে পারেনি। এদের অনেকেই স্থানীয় দালাল বা অন্য কোনো মাধ্যমে গাড়িতে করে নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের কেউ অ্যাম্বুলেন্সে, কেউ সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা অন্য গাড়িতে করে নিজ নিজ গন্তব্যে গেছেন। কারও কাছে টাকা না থাকলেও তারা বাড়িতে পৌঁছে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দিয়েছেন। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা ছিল বলে জানান তিনি, যারা স্থানীয় লোকদের সহায়তায় চট্টগ্রামে চলে গেছে।
৫২-বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান ও ৪৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া বলেন, আটকদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিবিবি/আরএ