ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ জুলাই ২০২৫, ২৬ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

৫ লাখ টাকা দিলেই মামলা থেকে নাম বাদ, ঘুষ দাবির অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৪০, জুন ৩, ২০২৫
৫ লাখ টাকা দিলেই মামলা থেকে নাম বাদ, ঘুষ দাবির অভিযোগ

নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুরে আমেরিকা প্রবাসী রাসেল হোসাইনকে মারামারির একটি মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়। অভিযোগ ওঠেছে, ওই মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক গোলাম রাব্বির কাছে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন গুরুদাসপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর মৃধা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা নাটোরের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ সুপার মো. আমজাদ হোসাইন জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, গত ১৫ মে গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজার এলাকায় ইটভাটা ব্যবসায়ী ফরিদ মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লাকে দুর্বৃত্তরা মারধর করে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকা প্রবাসী রাসেল হোসাইনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী। এরপর ১৬ মে রাসেল হোসাইনকে প্রধান আসামি করে গুরুদাসপুর থানায় মামলা দায়ের করেন ফরিদ মোল্লা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু জাফর মৃধা এরপর থেকেই রাসেল হোসাইনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে তার ম্যানেজার গোলাম রাব্বির কাছে ঘুষ দাবি করতে থাকেন। সর্বশেষ ২ জুন মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মামলার নাম বাদ দেওয়ার শর্তে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন এবং ঈদের আগে এক লাখ টাকা দিতে বলেন। এই ফোনালাপের অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

গোলাম রাব্বি বলেন, রাসেল ভাইয়ের ব্যবসা-বাণিজ্য আমি দেখাশোনা করি। একটি ভিত্তিহীন মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে আসামি করা হয়েছে। এসআই আবু জাফর মৃধা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। সোমবার রাতে ফোন করে মামলার নাম বাদ দেওয়ার শর্তে তিনি পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন এবং ঈদের আগে এক লাখ টাকা দিতে বলেন।

এ বিষয়ে প্রবাসী রাসেল হোসাইন জানান, তার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি প্রবাসে থেকেও দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে দুটি ব্যবসা পরিচালনা করছেন। অথচ একটি মিথ্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে, যেখানে তিনি দেশে পর্যন্ত নেই।  

তিনি জানান, ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো—এসআই মো. আবু জাফর মৃধা সরাসরি ঘুষ দাবি করেছেন। তিনি হতবাক ও আতঙ্কিত। তিনি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসন, মানবাধিকার সংগঠন এবং সাংবাদিকদের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চান।  

এসআই আবু জাফর মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, টাকা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে ফাঁসাতে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি। তবে যাই ঘটুক, ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।

নাটোরের পুলিশ সুপার মো. আমজাদ হোসাইন বলেন, ঘুষ দাবির বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (সিংড়া সার্কেল) তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর দ্রুত বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।