বরিশাল: বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের দেড় শতাধিক ইন্টার্ন চিকিৎসক তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগদান করেছেন।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধি নাজমুল হুদা ও সৌমিক আহমেদ।
তারা জানান, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে একমত পোষণ করেই শেবাচিম হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সাত দফা দাবি পেশ করেছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই আন্দোলনের নামে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে হাসপাতালের চিকিৎসক, ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের ওপর হামলা এমনকি হাসপাতাল ভবনেও হামলা চালানোর মতো ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বিকেল থেকে হাসপাতালের দেড় শতাধিক ইন্টার্ন চিকিৎসক কর্মস্থলে নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে কর্মবিরতিতে চলে যান। এরপর ইন্টার্ন চিকিৎসকের পক্ষ থেকে চিকিৎসক দিলীপ রায় ও হাসপাতালে হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও উসকানি দাতাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসক নাজমুল হুদা বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে আমরা গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি পুলিশ এরই মধ্যে হামলাকারীদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করেছে এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছে। সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষও হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। তাই সার্বিকভাবে রোগীদের কথা চিন্তা করে মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে চিকিৎসাসেবা প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
এদিকে দুপুরে সভা শেষে শেবাচিম হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মাজহারুল রেজওয়ান (রেজা) জানান, হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণির স্টাফদের যে আল্টিমেটার ছিল ৪৮ ঘণ্টার তার ২৪ ঘণ্টা এখনও বাকি আছে। এরই মধ্যে সরকারসহ হাসপাতাল ও পুলিশ প্রশাসন আমাদের আল্টিমেটামের দাবির বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে। আমরা শুনতে পাচ্ছি এরই মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, যদি হাসপাতালে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত হয়, তাহলে কর্মবিরতিতে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা সবসময় রোগীদের সেবা দিতে চাই। আপাতত ইন্টার্নরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছেন আর আমাদের বিষয়টি আগামী ২৪ ঘণ্টা পরে জানানো হবে। তবে হাসপাতালে এখন পর্যন্ত সেবা কার্যক্রম বন্ধ নেই।
এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টায় বান্দরোডে নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে মানববন্ধনে করেছেন হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী, চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণির স্টাফরা। যেখানে একাত্মতা প্রকাশ করে দ্বিতীয় দিনের ন্যায় ক্লাস ও ওয়ার্ড বর্জন করে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। তারা জানান, চিকিৎসকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন, দাবি আদায় হলে তারাও ক্লাসে ফিরে যাবেন।
এমএস/আরআইএস