বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাশরুর রহমান সজিবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) আতোয়ার রহমান এই সাজা দেন।
সাজাপ্রাপ্ত মাশরুর রহমান সজিব যশোর পালবাড়ি তেঁতুলতলার মিজানুর রহমানের ছেলে ও ঢাকার বাড্ডা বৈশাখি স্বরণীর বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বিশেষ পিপি আব্দুল লতিফ লতা।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৩ সালে ওই ছাত্রী যশোর শহরের একটি কলেজে ভর্তি হন। থাকতেন ফুফুর বাড়িতে। এ বাড়ির গৃহশিক্ষক হিসেবে ফুফাতো বোনকে পড়াতেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সবিজ। একপর্যায় তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
২০১৬ সালের ১৫ জুন বাড়ির সবার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে সজিব ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে তাদের সম্পর্ক উভয় পরিবারে জানাজানি হয়ে যায়।
এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সবিজ ওই ছাত্রীকে তার আত্মীয়সহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করেন। তিনি গোপনে তাদের বিশেষ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখেন। সবিজকে পরবর্তীতে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি ঘুরাতে থাকেন এবং যোগোযোগ বন্ধ করে দেন।
২০২৪ সালের ৩০ জুলাই সজিবের মাকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন সজিব ওই ছাত্রীকে বিয়ে করবেন না। শুধু তাই নয়, সজিব অন্যত্র বিয়ে করেছেন বলেও জানান তার মা।
এ ঘটনায় গত বছরের ১৭ আগস্ট যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ ধর্ষণের অভিযোগে মামলায় করেন ওই ছাত্রী।
আদালতের তৎকালীন বিচারক অভিযোগের তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দেন। অভিযোগের তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি সজিবকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসমি মাশরুর রহমান সজিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
রায় ঘোষণার সময় সজিব আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরএ