ময়মনসিংহ: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের জন্য সরকারের পূর্ণ পস্তুতি রয়েছে। নির্বাচন কমিশনও তাদের যা যা কর্ম, তা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন, সে অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। আমি মনে করি, সরকারের কাজ হচ্ছে নির্বাচন দেওয়া, সরকারের অঙ্গিকার ছিল নির্বাচন দেওয়া। ফলে সরকারের যে ঘোষণাটা রাজনৈতিক দলগুলো চেয়েছে, সে অনুযায়ী ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কে, কী বললো- এনিয়ে কোনো মন্তব্য করব না, যোগ করেন উপদেষ্টা।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বার্ষিক গবেষণা অপ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন শীর্ষক এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় দেশের মৎস্য সম্পদ প্রসঙ্গে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আরও বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের ট্যুরিজমের কারণে মাছের ক্ষতি হচ্ছে। তাই যেখানে মাছ থাকবে, সেখানে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। হাওরের অর্ধেক সময় পানি আর অর্ধেক সময় কৃষির চাষাবাদ হয়। ফলে কৃষি ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক ব্যবহারের প্রভাব থেকে যায়। মেঘনা, পদ্মা নদীর, পানি দূষণ, ডুবোচরের কারণে ইলিশ মাছের উৎপাদন কমেছে। জিআই তালিকায় হালদার রুই, কাতলা যাতে অন্তর্ভুক্ত হয়, সেজন্য আরও গবেষণা করতে হবে। পরিবেশের তালিকায় যেমন বিপন্ন তালিকা রয়েছে, তেমনি মাছেরও বিপন্ন তালিকা থাকা দরকার। এজন্য প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। কোনো মুক্ত জলাশয় যাতে তাকে ইজারা দেওয়া যাবে না। শুধু যারা মৎস্য ব্যবস্থাপনায় জড়িত তাদের ইজারা দিতে হবে।
কর্মশালায় ফরিদা আখতার আরও বলেন, বাংলাদেশের মাছ বৈচিত্র্যপূর্ণ, এক সময় মুক্ত জলাশয়ে মাছ ছিল ৬০ শতাংশ আর বদ্ধ জলাশয়ে ৪০ শতাংশ। সেই চিত্র এখন উল্টো হয়েছে। তাছাড়া পরিবেশ ও স্বাদের দিক থেকেও একেক এলাকার মাছ, একেক রকম। এসব মাছের গবেষণায় বিজ্ঞানীদের ভূমিকা রাখতে হবে।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু জাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, মাছের খাদ্য মূল্য কেন বেশি, তা যথাযথভাবে এনবিআরের কাছে তুলে ধরতে হবে। যাতে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা যায়। সেই সঙ্গে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন এবং নদ-নদীর দূষণরোধে মৎস্য বিজ্ঞানীদের গবেষণায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
কর্মশালায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ফারাহ শাম্মী বলেন, গবেষণার মাধ্যমে মৎস্য খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে হবে। তবেই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বার উন্মোচিত হবে।
এসময় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র বলেন, এ কর্মশালায় ৪৯টি গবেষণা পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে মাছের রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন উৎপাদনে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফসহ বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং মৎস্য খামারিরা। এর আগে কর্মশালার শুরুতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম গবেষণা পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এসআই