পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর পদ্মার পাড় বিনোদনপ্রেমীদের জন্য দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। শীত কিংবা বর্ষা সব মৌসুমেই পদ্মার সৌন্দর্য দেখতে পদ্মার পাড়ে ভিড় জমায় দূর-দূরান্তের মানুষ।
জানা গেছে, পদ্মাসেতু পার হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাশেই গড়ে উঠেছে বাহারি রেস্টুরেন্ট ও বিনোদনকেন্দ্র। পদ্মারপাড়ে ঘুরতে আসা ভ্রমণপ্রেমীদের একটু বিশ্রাম নেওয়া, নিরিবিল পরিবেশে বসে সন্ধ্যা বা রাতের খাবার ডিনারের জন্য এসব রেস্টুরেন্টের কদর দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়াও পদ্মার পার সংলগ্ন এক্সপ্রেসওয়ের পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য খিচুড়ির দোকান। রয়েছে নানান রকম মুখরোচক ভাসমান খাবারের দোকানও। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় থাকে ভ্রমণপ্রেমীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় এসব এলাকা ছিল অজপাড়াগাঁ! এক্সপ্রেসওয়ে এবং পদ্মাসেতু হওয়ার পর এসব এলাকায় উন্নয়নের ঢেউ লাগে। হু-হু করে বাড়তে থাকে ফসলি জমির দামও। এক্সপ্রেসওয়ের পাশেই গড়ে উঠতে শুরু করে একের পর এক রেস্টুরেন্ট। পদ্মাসেতু হওয়ার পর পদ্মার পাড় এলাকা দর্শনার্থীদের জন্য অন্যরকম এক আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়। দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকায় এসব এলাকায় বাড়তে থাকে বাহারি রেস্টুরেন্ট ও বিনোদন কেন্দ্রের।
পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে ঘুরতে আসা মানুষেরা সন্ধ্যার পর পরই ঢুঁ মারেন এসব রেস্টুরেন্টে। পদ্মাসেতু পার হয়ে জাজিরা টোল প্লাজার পর থেকেই এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগ সড়ক ঘেঁষে ছোট-বড় একাধিক রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। রয়েছে মিনি চাইনিজ, সাধারণ রেষ্টুরেন্ট আবার খিচুরির দোকান। পদ্মার তীরবর্তী এলাকার খিচুরির দোকানগুলো দীর্ঘদিনের পরিচিত!
ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পদ্মার পাড়ে ঘুরতে আসা মানুষ এসব রেস্টুরেন্টের অন্যতম গ্রাহক। রেস্টুরেন্টগুলোতে বাচ্চাদের খেলাধুলার পর্যাপ্ত জায়গা থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানেও সময় কাটান অনেকে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সাথে এসব রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠায় কর্মসংস্থানেরও ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে।
জাজিরা থেকে ঘুরতে আসা শাহনাজ আক্তার বলেন, পরিবারের সঙ্গে বিকেলে পদ্মার পাড়ে ঘুরতে এসেছিলাম। সন্ধ্যার পর হাইওয়ের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেলাম। এখানে বেশ কয়েকটি সুন্দর রেস্টুরেন্ট আছে। এ ছাড়া রাস্তার পাশে অসংখ্য মুখরোচক খাবারের দোকান আছে। বিকেল থেকে একপ্রকার মেলা বসে যায় এখানে।
আহসান হাবীব নামে এক ব্যক্তি বলেন, ভাঙ্গা থেকে ঘুরতে এসেছিলাম। পরে হাইওয়ের পাশের একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। এখানে বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য আলাদা ব্যবস্থাও আছে। রাতে পদ্মার পাড়ের খিচুড়ি খাওয়ার ইচ্ছা আছে। এখানকার খিচুড়ির বেশ নামডাক শুনেছি।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মাসেতু এবং এক্সপ্রেসওয়ে হওয়ার পর এই এলাকার চিত্র বদলে গেছে। আগে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ ছিল। পদ্মাসেতুর সাথে এই এলাকা এখন আধুনিক হয়ে উঠছে। রাস্তার পাশে ভালোমানের রেস্টুরেন্ট হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসছে। এই এলাকার মানুষের কর্মক্ষেত্রও তৈরি হয়েছে।
বিকেলে সূর্যাস্ত দেখতে পদ্মার পাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের যেমন ভিড় নামে, সন্ধ্যার পর রেস্টুরেন্টগুলোতেও বাড়ে ভিড়। পদ্মার পাড়ের খিচুড়ির রয়েছে আলাদা সুনাম। ধোঁয়া উঠা গরম খিচুড়ির সাথে গরুর মাংস, ইলিশ মাছের ডিম এক অনন্য স্বাদ এনে দেয়। তরুণ-যুবকেরা ঝুঁকছেন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্রও।
এএটি