ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

সেই পরিচালক অপসারণে শাহজালাল ব্যাংকের ইজিএম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৯ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০১৪
সেই পরিচালক অপসারণে শাহজালাল ব্যাংকের ইজিএম

ঢাকা : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকিং খাতের শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ সোলায়মানকে পর্ষদ থেকে অপসারণ করতে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আহবান করা হয়েছে।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।



এতে জানানো হয়, আগামী ১১ আগস্ট রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে এই ইজিএম করবে ব্যাংকটি। এজন্য রেকর্ড ডেট ১৬ জুলাই।

চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল নগরীর কোতোয়ালি থানায় শাহজালাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মোহাম্মদ সোলায়মানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। মামলাটি পরে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সিডিউলভুক্ত হয়।

গত ২৬ জুন ওই মামলায় সোলায়মানকে ঢাকার বিজয়নগরের আকরাম টাওয়ার থেকে গ্রেফতার করে দুদক।

২০১১ সালের ২০ নভেম্বর শাহজালাল ব্যাংকের চট্টগ্রামের জুবিলী রোড শাখার গ্রাহক এসকে স্টিলের নামে ১৪০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে পরিচালনা পষর্দ। ঋণ অনুমোদনের পর্ষদ বৈঠকে মোহাম্মদ সোলায়মান উপস্থিত না থাকলেও তা পাসে তিনি পরোক্ষ ভূমিকা রাখেন বলে দাবি পর্ষদের চেয়ারম্যানসহ একাধিক পরিচালকের। এমনকি তিনি ঋণের অর্থ আদায়ে নিশ্চয়তাও দেন বলে দাবি পর্ষদের।

কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় গত বছর ঋণটি খেলাপি হয়ে যায়। এ অবস্থায় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ তা আদায়ে সোলায়মানকে চাপ দেয়। এ সময় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে বেরিয়ে আসে, জুবিলী রোড শাখার ব্যবস্থাপক আ ন ম জাহাঙ্গীর ওই শাখার তত্কালীন ব্যবস্থাপক, যিনি পরিচালক মোহাম্মদ সোলায়মানের আত্মীয়। ঋণের অর্থের মধ্যে প্রায় ১৯ কোটি টাকা পরিচালক সোলায়মানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্যারাডাইজ করপোরেশনের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর হয়েছে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মো. সোলায়মান। পরিচালক মোহাম্মদ সোলায়মান দাবি করেন, এসকে স্টিলকে ঋণ প্রদানের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হয়ে একে আজাদ শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। তার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে গ্রেফতার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন ব্যাংকটির পরিচালক সোলায়মান।      
                 
গ্রেফতারের পর ব্যাংকটির পরিচালক দুদকের ভেতরে প্রবেশ করতে করতে বলেন, ‘আমি একে আজাদের ষড়যন্ত্রের শিকার। তার বিরুদ্ধে বলায় আমার এ অবস্থা। ’

গ্রেফতারের পর গাড়ি থেকে দুদকের ভেতরে প্রবেশ করার সময় দুদকে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের বলেন, একে আজাদ শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে একক কর্তৃত্ব চান। ব্যাংকের পর্ষদ থেকে তিনি আমাকে অপমান ও অপসারণের অপচেষ্টা করছেন। তার কারণেই শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তির ব্যাংকটি ক্রমেই দুর্বলতার দিকে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ভুয়া সার্টিফিকেটধারী একে আজাদের বোন ও কয়েকজন পরিচালকের আত্মীয়ের তথ্য বের করা এবং বোর্ডে ভুয়া বিলের বিরোধিতা করায় আমাকে এ অবস্থায় পড়তে হয়েছে। ব্যাংকটি থেকে তার আত্মীয়-স্বজনকে খেয়াল খুশিমতো ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করছেন একে আজাদ। তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, একে আজাদ তার মালিকানাধীন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ও সমকাল পত্রিকায় ব্যাংকের সব বিজ্ঞাপন বেশি করে দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন। আমি বলেছি সব মিডিয়ায় সমানভাবে পাবে। আমার এমন কথায় তিনি আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতেন। বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিরোধিতা করায় তিনি আমার বিরুদ্ধে আত্মসাতের মিথ্যা মামলা সাজিয়েছেন।

সোলায়মানের কাছে এসময় সাংবাদিকরা জানতে চান- আপনি কি মনে করছেন একে আজাদ দুদককে ব্যবহার করেছে? এসময় তিনি বলেন, আমি দুদকের বিষয়ে কিছু বলবো না। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।

বাংলাদেশ সময় : ১১৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।