ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশে পুঁজিবাজারে বেহাল দশা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৪
নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশে পুঁজিবাজারে বেহাল দশা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কিছু নির্দেশনার কারণে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।
 
সোমবার সিএসই’র ঢাকা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিমত ব্যক্ত করেন সিএসই চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ।


 
সংবাদ সম্মেলনে সিএসই চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক তালিকাভুক্ত ব্যাংকের মোট মূলধনের ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা আরোপ করে। পরবর্তীতে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগ ২০১৬ সালের মধ্যে কমিয়ে আনার নির্দেশ দেয় সংস্থাটি। অপর দিকে অধিকাংশ ব্যাংকের ২৫ শতাংশের উপরে বিনিয়োগ রয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলো নতুন করে বিনিয়োগ করতে পারছে না।
 
এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রতি মাসের পুঁজিবাজরের বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য মাস শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনার কারণে গত কয়েক মাস ধরে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বাজারে লেনদেন প্রবাহ কমে গেছে।
 
ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একক গ্রাহক ঋণসীমা কমিয়ে আনার কারণে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানেগুলোর একক গ্রাহক ঋণসীমা কমিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে। এতে পুঁজিবাজারে তাদের বিনিয়োগ হ্রাস পাবে। এ সিদ্ধান্তও পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
 
বিএসইসির সিদ্ধান্তের বিষয়ে আবদুল মজিদ বলেন, জুলাই মাসে মার্জিন লোন পুনর্বিন্যাস করে ১:২ থেকে কমিয়ে ১:০.৫ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারে তারল্য কমিয়ে ফেলেছে। এ সিদ্ধান্তের কারণে যারা পূর্বের হারে লোন প্রদান করেছে তারাও লোন সমন্বয়ের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বে।
 
তিনি বলেন, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তা বাস্তবায় করা যাবে কি যাবে না বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। মার্জিন লোন দেওয়ার সময় বিবেচনা করা হয়নি কারা লোন নিতে পারবেন আর কারা পারবেন না। যা লোন গ্রাহক ও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অধিকহারে মার্জিন লোন দেওয়ার কারণে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়েছে। ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো এখন বিনিয়োগে যেতে পারছে না।
 
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত বাজারের জন্য ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুদ্রানীতিতে বাণিজ্যিক ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের কারণে যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল তা মোকাবেলা করার জন্য একটি প্রভিশনিং পদ্ধতি রাখা হয়েছে যা বাজারের জন্য ইতিবাচক।
 
আর আইপিও আবেদনের সময় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কারণে বিএসইসি সম্প্রতি দুটি কোম্পানির সংশ্লিষ্ট ইস্যু ম্যানেজারকে শাস্তি দিয়েছে। এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে। একই ভাবে বিএসইসি সেপ্টেম্বর থেকে আইপিও আবেদনের জন্য পাইলট প্রজেক্ট চালুর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পুঁজিবাজারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্তও ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন সিএসই চেয়ারম্যান।
 
আবদুল মজিদ জানান, সিএসই বাজারে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য এসএমই, গ্রোথ ও স্বল্পমূলধনী কোম্পানির জন্য বিকল্প বাজার সৃষ্টির জন্য কাজ করছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রেজেন্টেশনও বিএসইসিকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মার্কেট মেকারের মাধ্যমে বাজারে গভীরতা ও তারল্য সৃষ্টির জন্য সিএসইর পক্ষ থেকে বিএসইসির কাছে বিদ্যমান মার্কেট মেকার রেগুলেশন কিছু পরিবর্তন আনার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি এখন বিএসইসির অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে বলে জানান আবদুল মজিদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৪/আপডেটেড : ১৪১৮ ঘণ্টা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।