ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

সরকার ব্যবসায়ীদের ওপর হস্তক্ষেপ করবেন না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৪
সরকার ব্যবসায়ীদের ওপর হস্তক্ষেপ করবেন না ছবি: রাশেদ/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশে ব্যবসায়ীদের নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে সরকার কাজ করছে। সরকার তাদের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ করবেন না বলে জানিয়েছেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।


 
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ডিএসই’র নেক্সট জেনারেশন অটোমেটেড ট্রেডিং সিস্টেম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
 
অর্থপ্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকের এদিনে ডিএসই একটা নতুন যুগে প্রবেশ করলো। এ সিস্টেম চালুর ফলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন। আমাদের সরকার প্রধানের নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন করতে চাই।
 
অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন করে আধুনিক, বিজ্ঞানসম্মত এবং ন্যায় বিচার নির্ভর সমাজ গড়তে চাই। এ জন্য জনগণের সমর্থন দরকার। অতীতেও জনগণ আমাদের সঙ্গে ছিলেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন।
 
মান্নান বলেন, সরকার জানেন অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া দেশ এগোবে না। এ জন্য অর্থনীতির যে ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন আমরা তা করছি।
 
তিনি আরো বলেন, আমরা শুধু ব্যবসায়ী বান্ধব না, আমরা ভোক্তা বান্ধবও। ভোক্তাদের নিরাপত্তা ও স্বার্থ নিশ্চিত করাও আমাদের দায়িত্ব। আমরা সে উদ্দেশ্যে কাজ করছি।
 
ডিএসই’র অটোমেশন সরকারের ডিজিটাল প্রতিশ্রুতির অংশ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার আগে ডিজিটাল দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আজ এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আরো একধাপ এগিয়ে গেলো। আমরা ব্যবসায়ীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখবো। দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
 
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেন বলেন, আমরা শেয়ারবাজারের উন্নয়নে অনেক দিনধরে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। যার মধ্যে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন, স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
 
তিনি আরো বলেন, বাজারে কারসাজি সনাক্ত করতে আমরা আধুনিক প্রযুক্তির সার্ভিলেন্স সফটওয়্যার ব্যবহার করছি। দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জও উন্নত সফটওয়্যার ব্যবহার করছে।
 
বিএসইসি’র চেয়ারম্যান বলেন, ডিএসই’র এ অটোমেশনের মাধ্যমে লেনদেন আরো দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে হবে।
 
তিনি বলেন, দেশের শেয়ারবাজার স্থিতিশীল হওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আমাদের বাজারে ঝুঁকছেন। তারা আমাদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন।
 
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ডিএসই চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, নাসডাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. রবার্ট ফোরজ, বিএসই’র কমিশনাররা এবং ডিএসই সাবেক সভাপতিরাসহ প্রমুখ।

নতুন স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে ২৪ নভেম্বর থেকে ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউসগুলোর প্রায় ৪০০টি ট্রেডিং ওয়ার্ক স্টেশন থেকে একযোগে পরীক্ষামূলক লেনদেন (মক ট্রেডিং) চালু হয়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। পরীক্ষামূলক লেনদেনে যে সব ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয়েছে। ফলে নতুন এ প্রক্রিয়া সফলভাবে উদ্বোধন করা সম্ভব হবে বলে মনে করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। ডিএসইতে নতুন এ ব্যবস্থা চালু হলে দীর্ঘ দিনের লট প্রথা বাতিল হয়ে যাবে।

এর আগে গত ২১ মার্চ অটোমেটেড ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম চালুর জন্য নাসডাক ওএমএক্স ও ফ্লেক্সট্রেড সিস্টেমসের সঙ্গে চুক্তি সই করে ডিএসই। ফলে নয় মাসের মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তির অটোমেটেড ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম চালু করছে ডিএসই।

নতুন স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থার মধ্যে নাসডাক ওএমএক্স সরবরাহ করছে ম্যাচিং ইঞ্জিন ও ফ্লেক্সট্রেড সরবরাহ করছে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস)। নতুন অটোমেটেড ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে ডিএসই ট্রেকহোল্ডার প্রতিনিধি, সব ব্রোকিং হাউজের অনুমোদিত প্রতিনিধি, আইটি বিভাগের প্রধান এবং ক্রেডিট অ্যাডমিনিসট্রেটরদের ধারণা দিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্যোগ নেয় ডিএসই। যা তিন মাসব্যাপী পর্যায়ক্রমে চলে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, নাসডাক ওএমএক্স ও ফ্লেক্সট্রেড ব্যবহারকারীদের (ব্রোকার এবং বিনিয়োগকারী) জন্য সহজ এবং নিরাপদ হবে। তবে নতুন ব্যবস্থায় কোনো বিনিয়োগকারী নিজ ব্রোকারেজ হাউসের যে কোনো অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ বা শাখা থেকে শেয়ার কেনা-বেচা করতে পারবেন না। প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর জন্য একটি ব্রোকারেজ হাউসের শাখা ও একজন বা একটি গ্রুপভুক্ত অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ নির্দিষ্ট থাকবে। কোনো বিনিয়োগকারীকে ওই নির্দিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস ও নির্দিষ্ট বা গ্রুপভুক্ত অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভের মাধ্যমে শেয়ার কেনা বা বেচার অর্ডার দিতে হবে। এতে একসঙ্গে অনেক কোম্পানির শেয়ারের ওঠানামা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন তারা।

নতুন লেনদেন ব্যবস্থায় একদিনে বিপুল পরিমাণ শেয়ার লেনদেন করার ক্ষমতা থাকায় মার্কেট লট বলে কিছু থাকবে না। অর্থাৎ আইপিওতে শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে লট (নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ার) থাকলেও সেকেন্ডারি শেয়ারবাজারে লেনদেনের ক্ষেত্রে ক্রেতা বা বিক্রেতা পূর্ণ সংখ্যার যে কোনো পরিমাণ শেয়ার কিনতে বা বিক্রি করতে পারবেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।