ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শেয়ারবাজার

শীর্ষে জ্বালানি, ধকল কাটেনি ব্যাংকের

সাঈদ শিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৫
শীর্ষে জ্বালানি, ধকল কাটেনি ব্যাংকের

ঢাকা: ২০১২ সালে বেরিয়ে আসা কেলেঙ্কারির পর থেকেই শেয়ারবাজারে লেনদেনে নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে ব্যাংক খাত। সর্বশেষ বছরে (২০১৪ সাল) মোট লেনদেনে এ খাতের অবদান মাত্র ৯ শতাংশ।

অথচ ব্যাংক কেলেঙ্কারির আগের বছরেও লেনদেনের ৩০ শতাংশই ছিলো ব্যাংক খাতের দখলে।
 
এদিকে ২০১৩ সালের শুরু থেকেই লেনদেনে প্রাধান্য বিস্তার করতে শুরু করে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। এরই ধারাবাহিকতায় বস্ত্র খাতকে সরিয়ে ২০১৪ সালে লেনদেনের শীর্ষ স্থান দখল করে জ্বালানি খাত। বছরটিতে মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৮৯ শতাংশই ছিলো এ খাতের দখলে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ১৭ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা।
 
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শেয়ারবাজারের প্রাণ হিসেবে পরিচিত ব্যাংক খাত ২০১২ সাল শেষেও লেনদেনের শীর্ষে ছিলো। বছরটিতে ব্যাংক খাতের শেয়ারের মোট লেনদেন হয় ১৫ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা। যা মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
 
এর আগের বছর ২০১১ সালে ব্যাংকিং খাতের লেনদেনের পরিমাণ ছিলো ৩৯ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। যা ওই বছরের লেনদেনের ২৫ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ। আর ২০১০ সাল পর্যন্ত মোট লেনদেনে ৩০ শতাংশের উপরে ছিলো ব্যাংক খাতের লেনদেন।
 
সর্বশেষ বছরে অর্থাৎ ২০১৪ সালে ব্যাংক খাতের শেয়ারের মোট লেনদেন হয়েছে ১১ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা। যা মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ।
 
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনা বেরিয়ে আসার পর ২০১২ সাল থেকেই ব্যাংক খাতে নানা অস্থিরতা কাজ করেছে। ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত সুদে আমানত সংগ্রহ করতে হয়েছে। আমানত সংগ্রহের পর মোটা অঙ্কের টাকা অলস পড়ে রয়েছে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ না হওয়ায় কমে গেছে ব্যাংকের ঋণ বিতরণের পরিমাণ। এসব কারণেই সামগ্রিক ব্যাংক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
 
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৪ সালে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা। যা আগের বছরের তুলনায় ১৭ হাজার ৫১২ কোটি টাকা বেশি।
 
২০১৪ সালে লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। মোট লেনদেনে এ খাতের অবদান ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বছরটিতে এ খাতের ১৬ হাজার ২১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। আগের বছর যা ছিলো ৯ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ১৪ শতাংশ।
 
এর পরের স্থানেই রয়েছে প্রকৌশল খাত। এ খাতের অবদান ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ। বছরজুড়ে লেনদেনের পরিমাণ ১৪ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে এ খাতের শেয়ারের মোট লেনদেন হয় ৮ হাজার ২৫৫ কোটি টাক, যা মোট লেনদেনের আট দশমিক ৬৭ শতাংশ।
 
২০১৩ সালে শীর্ষে থাকা বস্ত্র খাতের অবদান দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে ২০১৪ সালে এ খাতের শেয়ারের মোট লেনদেনের পরিমাণ ১১ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে বস্ত্র খাতের শেয়ারের মোট লেনদেন হয় ১৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা যা মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
 
২০১৪ সালে টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানিগুলোর মোট ৬ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর্থিক খাতের দেনদেনের পরিমাণ ৬ হাজার ১৭ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ।
 
বিমা খাতে ৫ হাজার ১৫০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সিমেন্ট খাতের কোম্পানির ৭ হাজার ১৫৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।
 
খাদ্য খাতের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। বিবিধ খাতের শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা টাকা, যা মোট লেনদেনর ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ।
 
অন্য খাতগুলোর শেয়ারের লেনদেনের পরিমাণ ২ শতাংশের নীচে। এর মধ্যে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে লেনদেন ২ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
 
মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। সিরামিক খাতের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৮৯ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের দশমিক ৮৩ শতাংশ।

আইটি খাতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। সেবা খাতের শেয়ারের লেনদেন ২ হাজার ১৪২ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
 
পাট (জুট) খাতের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৬ কোটি টাকার, যা মোট লেনদেনের মাত্র দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। কাগজ ও মুদ্রণ খাতে লেনদেন হয়েছে ৭১৭ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের দশমিক ৬০ শতাংশ।
 
মোট লেনদেনে ট্যানারি খাতের অবদান ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। ২০১৪ সালে এ খাতে মোট ১ হাজার ৫৪২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বছরটিতে বন্ডের মোট লেনদেন হয় ১৬ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের মাত্র দশমিক শূন্য এক শতাংশ।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।