ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে চুরির ঘটনার পর শঙ্কায় রয়েছে শেয়ারবাজারের ৩২ লাখ বিনিয়োগকারী। তারা বলছেন, অব্যাহত দরপতনের মূলধন হারানোর পাশাপাশি তাদের কোডের শেয়ার হ্যাকের মাধ্যমে বিক্রি করে টাকা তুলে নিতে পারে।
এমন আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীর শেয়ার সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে গত সপ্তাহে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ইলেক্ট্রনিক শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপজিটরী বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএস) নির্দেশ না দিয়েছে।
পাশাপাশি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছে কমিশন। প্রতিষ্ঠান দু’টির আইটি বিভাগকে আরো প্রযুক্তি নির্ভর হতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএসইর সাবেক পরিচালক খুজিস্তা নূর-ঈ নাহরীন বাংলানিউজকে জানান, অব্যাহত দরপতনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি নতুন করে আর্থিক খাতে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় শঙ্কায় রয়েছেন বিনিয়োগকারী ও শেয়ার ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উচিৎ তাদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা।
বিএসইসি থেকে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সিডিবিএল ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার বা সিকিউরিটিজের হিসাব সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তার স্বার্থে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করে যথাযথ মনিটরিং অব্যাহত রাখা জরুরি, যাতে সিস্টেম ও অপারেশন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
তাই সাইবার নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সচেতনতা ও মনিটরিং জরুরি। এ প্রেক্ষাপটে সিডিবিএলের সাইবার নিরাপত্তায় নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কমিশনকে অবহিত করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে সিডিবিএলের ব্যবস্থা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম সামাদ বাংলানিউজকে জানান, সিডিবিএল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিনিয়োগকারীদের শেয়ার সংরক্ষণ করছি। তারপরেও আমরা রুটিনওয়ার্ক হিসেবে সিকিউরিটি সিস্টেম পর্যবেক্ষণ করে থাকি।
সম্প্রতি বিএসইসি সিডিবিএলকে একটি নির্দেশনা দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিডিবিএলে যেহেতু টাকা থাকে না, সেহেতু হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ হ্যাকাররা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারবে না। আশা করি প্রতিষ্ঠানটি হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে।
তারপরও চিঠির আলোকে প্রযুক্তিবিদ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক কায়কোবাদের নেতৃত্বে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম গঠন করা হয়েছে। এ টিম নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে বেশ কিছু আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুপারিশ করেছে। আমার সেই সুপারিশ অনুসারে কাজ করছি। বিএসইসিকে ২ থেকে ৩দিনের মধ্যে চিঠির উত্তরও দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৬
এমআই/এসএইচ