ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

আইপিও’র ২২শতাংশ অর্থ ব্যবহারে ব্যর্থ ইয়াকিন পলিমার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
আইপিও’র ২২শতাংশ অর্থ ব্যবহারে ব্যর্থ ইয়াকিন পলিমার

ঢাকা: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে নেওয়া ২০ কোটি টাকার ২২ শতাংশ অর্থ (সাড়ে ৪ কোটি টাকা) ব্যয় করেনি ইয়াকিন পলিমার লিমিটেড। বিষয়টি স্বীকারও করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

কোম্পানির পক্ষ থেকে গত ৩১ অক্টোবর ডিএসইকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ চিত্র দেখা গেছে।

কোম্পানিটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা ভঙ্গ করেছে।

যা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার সামিল বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উচিৎ বিষয়টি বিনিয়োগকারী সুরক্ষা আইনের আওতায় এনে কোম্পানিটিকে শাস্তি দেওয়া। ভবিষ্যতে যেন তারা বা অন্য কোনো কোম্পানি এসব করতে না পারে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতার কারণেই কোম্পানির এমন নাজুক দশা।

তিনি বলেন, কোম্পানির ভবিষৎ নির্ভর করে কোম্পানির সুদক্ষ পরিচালনার ওপর। কিন্তু সেটা করতে তারা অক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই)র তথ্য মতে, গত বছর তিনটি খাতে ব্যয়ের জন্য মোট ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করে বাজারে তালিকাভুক্ত হয় কোম্পনিটি। কথা ছিলো, চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আইপিও’র এ অর্থ ব্যয়ের কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারীদের পেছনে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৮৯ হাজা ১৮০ টাকা ব্যয় করেনি। শতাংশের হিস‍াবে যা ২২ দশমিক ১৯ শতাংশ।

কোম্পানির তথ্য মতে, আইপিও’র মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসার সময়  কোম্পানিটি আইপিও বাবদ ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং কোম্পানির বিল্ডিং সংস্কার বাবদ ৫ কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুসারে এ দুই খাতে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকারও ব্যয় করেছে।

কিন্তু মেশিনারিজ ক্রয় বাবদ ১৩ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্ধারিত সময়ে এই খাতের ৮ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ৮৬৩ টাকা ব্যয় করেছে কোম্পানিটি। অর্থাৎ এখনো ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার ১৮০ টাকার ব্যয় করেনি কোম্পানিটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানি সচিব আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন,‘আইপিও’র সব টাকা ব্যয় হয়েছে কিন্তু অডিটে আসেনি। ’ অর্থাৎ খাতা কলমে এখনো সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় হয়নি।

তার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘কোম্পানির মেশিনারিজগুলো এখনো কোম্পানিতে এসে পৌঁছায়নি, বন্দরে রয়েছে। তাই এই টাকার অব্যবহৃত দেখিয়েছি। ’ কিন্তু আইপিও’র টাকা ব্যয় হয়েছে।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নির্ধারিত সময় আইপিও’র অর্থ ব্যবহার না করার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখা হবে। এরপর স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অবহিত করা হবে।

বিএসইসি’র একাধিক কর্মকর্তারা জানান, কিছু কোম্পানি যে সময় মতো আইপিও টাকা কাজে লাগাচ্ছে না তা কমিশনের পর্যবেক্ষণে আছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কমিশন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
এমএফআই/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।