ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

অনাস্থা ও তারল্য সংকটে পতনের বৃত্তে পুঁজিবাজার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৮
অনাস্থা ও তারল্য সংকটে পতনের বৃত্তে পুঁজিবাজার

ঢাকা: পুঁজিবাজারে চলছে দরপতন। চলমান এ দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অনাস্থা। আর এতে প্রকট হচ্ছে তারল্য সংকট। ফলে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন ৩শ’ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে।
 

ডিএসইর তথ্য মতে, সবশেষ সপ্তাহের মোট ৫ কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৭৩ কোটি ৪৪ লাখ ৩৬ হাজার ৭৯৮ টাকা। যাতে দিনের গড় লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৩৭৪ কোটি টাকায়।

অথচ আগের সপ্তাহে দিনে ৫৫৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়ে দাঁড়িয়েছিলো ২ হাজার ২৩১ কোটি ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৩ টাকা।
 
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলো ১১৪ কোটি ২১ লাখ ৯ হাজার ২৯৭ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলো ১৩৭ কোটি ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৮০৫ টাকা। লেনদেনের পাশাপাশি উভয় বাজারে কমেছে সূচক ও বাজার মূলধন।
 
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আসন্ন মুদ্রানীতি, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যাংক ঋণ-আমানতের অনুপাত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সিদ্ধান্ত এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) শেয়ার বিক্রিকে কেন্দ্র করে দরপতন হচ্ছে।
 
তারা বলছেন, তিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে একটি চক্র বাজারে বিভিন্ন রকমের গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে কৃত্রিমভাবে দরপতন সৃষ্টি করছে। আর এ দরপতনে অতিভয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন।
 
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তাক হোসেন সাদেক বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলো রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান আইসিবির কাছে আমানতের একটি অংশ জমা রাখে। আর আইসিবি সেই অর্থ দিয়ে শেয়ার কেনে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলারে বলা হয়েছিলো, সিঙ্গেল পার্টি এক্সপোজার কমাতে হবে। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন কোনো আলোচনা নেই। কিন্তু হঠাৎ করেই আইসিবির কাছে থাকা ডিপোজিট ফেরত চাইতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক আইসিবির কাছে টাকা চাওয়ায় আইসিবি শেয়ার বিক্রি করছে। প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে দিতে হয়েছে। যার জন্যই বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার তুলে নিতে অর্থমন্ত্রণালয় ও গভর্নরের কাছেও যাবেন বলে জানান তিনি।
 
তিনি বলেন, কম সুদে ঋণ দিয়ে ব্যাংকের কাছে এখন তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকের কাছে টাকা নেই। যার জন্য বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করছে ব্যাংক। সঞ্চয়পত্রেরও সুদের হার বেশি, ১২ শতাংশ। তবে মানুষ কেন পুঁজিবাজারে আসবে? অনেকে আবারো ব্যাংক আমানত রাখতে ছুটছে। এক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমাতে হবে। আর বেশি সুদে ব্যাংকের আমানত গ্রহণও বন্ধ করতে হবে।
 
সিএসইর পরিচালক ছায়েদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আইসিবি শেয়ার বিক্রির চাপ ও আসন্ন মুদ্রানীতিকে কেন্দ্র করে বাজারে দরপতন হচ্ছে। তিনি বলেন, আসছে মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের জন্য যেন কোনো নেতিবাচক বিষয় না আসে সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ জানিয়েছি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০,২০১৮
এমএফআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।