ঢাকা: বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরায় ইতিবাচক রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার।
বিদায়ী সপ্তাহে (১২-১৬ সেপ্টেম্বর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমলেও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেড়েছে।
গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে দুই হাজার ৮২৬ কোটি টাকার লেনদেন কমেছে। এর মধ্যে ডিএসইতে দুই হাজার ৭৬৫ কোটি এবং সিএসই ৬১ কোটি টাকার লেনদেন কমেছে।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে সূচক ও লেনদেন কমাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাদের মতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা উত্থানে রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। টানা উত্থানের পর সামান্য পতন এটা বাজার সংশোধনী বলে মনে করেন তারা।
এ ব্যাপারে মা সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে সূচকের উত্থান রয়েছে পুঁজিবাজারে।
শুধু তাই নয় হাজার কোটি টাকার লেনদেন দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকায় ছাড়িয়েছে। সুতরাং বিদায়ী সপ্তাহে সূচক ও লেনদেন কমাটা বাজার সংশোধনী বলে তিনি মনে করেন।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী ডিএসইতে ১১ হাজার ১২২ কোটি ৩৯ লাখ ৪৫ হাজার ৮০৬ টাকার লেনদেন হয়েছে।
আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১৩ হাজার ৮৮৮ কোটি ১৮ লাখ ২৪ হাজার ৬৮৬ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন দুই হাজার ৭৬৫ কোটি ৭৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮৮০ টাকা বা ১৯ দশমিক ৯১ শতাংশ কমেছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ২২৮ দশমিক ৩১ পয়েন্টে।
অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৫ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৭৭ দশমিক ১০ পয়েন্টে।
আর ডিএসই-৩০ সূচক ২৭ দশমিক ৪১ পয়েন্ট ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৬৭৪ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩১৮ কোটি ৯৫ লাখ ৬১ হাজার টাকায়। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৪৭৫ কোটি ৩৪ লাখ ৫১ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ১১ হাজার ৮৪৩ কোটি ৫১ লাখ ১০ হাজার টাকা বা ২ দশমিক ০২ শতাংশ বাজার মূলধন কমেছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭৮টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৪টির, কমেছে ২৮২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ২১ দশমিক ১৬ পয়েন্টে। যা সপ্তাহ শেষে ২০ দশমিক ৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও শূন্য দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ কমেছে।
বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সাইফ পাওয়ার টেক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, লাফার্জাহোলসিম বাংলাদেশ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪০৬ কোটি ৫০ লাখ ৬১ হাজার ২৪৩ টাকার।
আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪৬৮ কোটি ১৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৭৪ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৬১ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার ১৩১টাকা বা ১৩ শতাংশ কমেছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ১৪১ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩৪৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৪টির দর বেড়েছে, ২৫০টির কমেছে এবং ৯টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১
এসএমএকে/এএটি