‘পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ'। ইসলাম ধর্মের ৫টি রুকনের মধ্যে অন্যতম পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে একত্রিত হন, সেখানে মসজিদে ব্যবহার্য উপকরণসমূহের প্রয়োজন হয় প্রতিনিয়ত। বেলকুচি শুভসংঘের বন্ধুরা মসজিদে মুসল্লিদের ইবাদত-বন্দেগীর কিছু অনুষঙ্গ উপহার হিসেবে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়।
'শুভ কাজে, সবার পাশে' এই স্লোগানে উজ্জীবিত হয়ে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বেলকুচির সমেশপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে উপজেলার ১০টি মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।
উপহার সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে গামছা, সাবান, টিস্যু, টুপি, তসবি, আতর ও মিসওয়াক।
মসজিদে নামাজ আদায়ের পূর্বে ওযুর সময়ে ব্যবহৃত উপকরণ সমূহ মুসুল্লিদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শুভসংঘের এমন ব্যতিক্রমী চিন্তা ও আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ।
সমেশপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের পেশ ইমাম মওলানা জাহিদুল ইসলাম বলেন, মসজিদে বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসুল্লিরা নামাজ আদায় করতে আসেন। ওযুখানায় চাহিদা অনুযায়ী মিসওয়াক, সবান, টিস্যু সবসময় সেভাবে থাকে না।
ফলে মুসুল্লিদের নামাজের প্রস্তুতিতে একটু সমস্যা তো হয়ই। তবে শুভসংঘ এই প্রয়োজনীয়তা যেভাবে উপলব্ধি করেছে এর জন্য সকলকে মোবারকবাদ জানাই। মসজিদে যে উপহার সামগ্রী প্রদান করছে এটা ভালো উদ্যোগ। আল্লাহ তা'আলা আপনাদের মেহনতকে কবুল করুক।
সমেশপুর বাজার মসজিদের ইমাম মুফতি শিবলী জামান জানান, বেলকুচির যমুনার চরাঞ্চলে অনেক মসজিদ রয়েছে সেগুলোর সেভাবে উন্নয়ন কাজ হয়নি।
সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতায় একটু একটু করে কাজ চলমান রয়েছে। চরাঞ্চলের মসজিদ ও মাদ্রাসাগুলোর পাশে থাকার জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান। মসজিদের মুসল্লিদের ব্যবহারের জন্য যে উপহার দেওয়া হয়েছে সেজন্য বসুন্ধরা শুভসংঘকে ধন্যবাদ। আগামীতে শুভসংঘ আরো বিভিন্ন মসজিদকে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক সেই দোয়া করি।
মসজিদে উপহার সামগ্রী প্রদান ইভেন্ট নিয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ বেলকুচি শাখার সভাপতি হাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ শুভ জানান, বেলকুচি চরাঞ্চল পরিবেষ্টিত উপজেলা, এখানে বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে মানুষরা সর্বত্র হারায়, নদীগর্ভে বিলীন হয় ঘর-বাড়ি, মসজিদ,মাদ্রাসা ও স্কুল। বিভিন্ন সামাজিক সমস্যায় জর্জরিত মানুষদের পাশে থাকার প্রবল ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা শুভসংঘের প্রতিটি সদস্যদের মধ্যে রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এই ইভেন্টের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যে বিষয়টা মাথায় এসেছে আমাদের সেটা হচ্ছে মুসুল্লিরা প্রতিদিন নামাজ আদায় করতে মসজিদে যায় তাদের নিত্য ব্যবহার্য উপকরণগুলো সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা জরুরি। আমরা ছোট বড় বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে অনেকসময় দৃষ্টিগোচর হয়েছে হয়তো ওযুখানায় সাবান, টিস্যু নাই বা গামছা বা তোয়ালেও নাই! আবার মসজিদে বেশ কিছু টুপি, তসবি থাকাটা প্রয়োজন যেন মুসুল্লিরা নামাজ বা ইবাদতে ব্যবহার করতে পারে। সেই চিন্তাধারা থেকে আমরা আজকে বেশকিছু মসজিদকে উপহার সামগ্রী প্রদান করলাম। আমরা একটা সমাজ ও মহল্লার মানুষদের কাছে এই বার্তাটা পৌঁছাতে চেয়েছি, মসজিদ যেমন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের তেমনি মসজিদের প্রয়োজনীয়তা রক্ষা করাও আমাদের কর্তব্য। ইনশাআল্লাহ আগামীতেও শুভসংঘের ভালো কাজের ধারা অব্যাহত থাকবে।
উক্ত আয়োজনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ বেলকুচি শাখার সহ-সভাপতি, খন্দকার মোহাম্মাদ আলী, নুর হোসেন আকন্দ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মোহাম্মদ নাসিম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, সেলিম রেজা, ক্রীড়া সম্পাদক, মোহাম্মদ আল আমিন, নারী বিষয়ক সম্পাদক, খাদিজা খাতুন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, তানভীর আহমেদ সিহাব , কার্যকরী সদস্য, আকাশ আহমেদ, পিয়াস হোসেন প্রমুখ। উপহার সামগ্রী প্রদান শেষে শুভসংঘের বন্ধুরা পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময়ে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক