‘আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর, থাকি সেথা সবে মিলে-নাহি কেহ পর’, কবি বন্দে আলী মিয়ার লেখনীতে এভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে বাংলার মানুষ, সমাজ ও প্রকৃতির। সাহিত্যসেবায় তার অনন্য প্রয়াস সার্থক করেছে বাংলাকে।
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও একুশে পদকসহ অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে পাবনা পৌর এলাকার রাধানগরে কবি বন্দে আলী মিয়ার বাড়ি কবি কুঞ্জে বসুন্ধরা শুভসংঘের আয়োজনে মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় কবি পরিবার ও বসুন্ধরা শুভসংঘ পাবনা জেলা শাখা রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে জরুরী ভিত্তিতে বন্দে আলী মিয়ার বাড়ি সংস্কার করে যাদুঘর ও আধুনিক স্মৃতি সংগ্রহশালা করার দাবির পক্ষে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
পাবনা সদর উপজেলা জেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি ফরহানা আক্তারের সভাপতিত্বে উক্ত মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা মহিলা কলেজের অব. প্রফেসর মো. শফিকুল ইসলাম।
মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠান শেষে বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা কবির কবরস্থানসহ বাড়ি পরিষ্কার করেন এবং কবির কবর জিয়ারত করেন। এ সময় কবি পরিবারের সদস্যরাও কবর জিয়ারতে অংশগ্রহণ করেন।
মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথি প্রফেসর শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপ-মহাদেশের এত বড় একজন কবির বাড়িতে এসে এই অবস্থা দেখে সত্যিই আমার খুব খারাপ লাগছে। বসুন্ধরা শুভসংঘ কবির স্মৃতি সংরক্ষণ ও সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে তুলে ধরার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা সত্যিই খুব ভালো।
কবির বাড়িটি যদি দ্রুত সংস্কার না করা যায়, অবশিষ্ট যা আছে তাও ধ্বংস হয়ে যাবে—তাই সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি দ্রুত কবি কুঞ্জ সংস্কার করে যাদুঘর বা সংগ্রহশালা করা হোক। আমরা বসুন্ধরা শুভসংঘ পাবনা জেলা শাখা পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মাধ্যমে শুভ কাজের সূচনা করে যাচ্ছি। সকল শুভ কাজের সাথে আমরা একাত্ম আছি। ’
মতবিনিময়সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নিউজ-২৪ এর পাবনা জেলা প্রতিনিধি আহম্মেদুল হক রানা, বসুন্ধরা শুভসংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য আলী আকবর রাজু, কালের কণ্ঠ পাবনা জেলা প্রতিনিধি প্রবীর সাহা, বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শান্ত, আতাইকুলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু ইসলাম অলি, বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মারুফ সরদার, বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা সদর উপজেলা শাখার সহসভাপতি সাঈদুল ইসলাম, সদস্য আব্দুল কাদের মিঠু, মাসুদ রানা, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক শোভন রায়হান, প্রচার সম্পাদক ফিজ্জুল মাহিন প্রমুখ।
কবি বন্দে আলী পরিবারের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কবির ছোট ছেলে রামজুল ইসলাম রঞ্জু, কবির নাতি সাজ্জাদুল ইসলাম, নাতনি নূরজাহান আক্তার, নুরুন্নার আক্তার, হোমিও ডা. নাদিরা আক্তার রুনু, নাত জামাই মো. আফছার আলীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
কবির নাতি ও কবি বন্দে আলী মিয়া স্মরণ পরিষদের সদস্য সচিব সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ‘কবির সৃষ্টি, কৃষ্টি কালচার ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে রাষ্ট্রের উদ্যোগে জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করে যাদুঘর ও স্মৃতি-সংগ্রহশালা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। ’
নাতনি নূরজাহান আক্তার বলেন, ‘কবি কুঞ্জকে যাদুঘর বা পাঠাগার বা স্মৃতি-সংগ্রহশালা করার জন্য সংস্কার ও সংরক্ষণ করে আধুনিকায়ন করার দাবি জানাচ্ছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
নিউজ ডেস্ক