পাতায়া, থাইল্যান্ড থেকে ফিরে: পর্যটকদের জমজমাট বাজার পাতায়া। আর থাইল্যান্ডের এ সমুদ্র শহরে প্রতি ১০ জনে ৩ জনের বেশি স্থানীয় মানুষ পাওয়া সম্ভব নয়।
পাতায়ার বিচ রোডের সই-৩ এ জনির ইন্টারন্যাশনাল বেইসপক টেইলরিং প্রানো ফ্যাশন। তার প্রকৃত নাম পবন চৌধুরী। এক সময়ে টেইলরের ভারতীয় মালিক মনে রাখার সুবিধার্থে তার নাম রাখেন জনি। এখন পাতায়াতে জনি নামেই পরিচিত সেই পবন চৌধুরী।
বাবার চাকরির সুবাদে ২০০১ সালে শখ করে থাইল্যান্ড যান পবন। সেখানে কিছুদিন থেকে ভাল লেগে যায়। এক ভারতীয় টেইলরিং শপে কাজ নেন। বছর খানেক চাকরির পর নিজেরই কিছু একটা শুরুর ইচ্ছে জাগে। সেখান থেকে চালু করেন প্রানো ফ্যাশন। ছোট পরিসরে শুরু করলেও এখন বেশ জমজমাট জনির টেইলরিং ব্যবসা।
২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় প্রানো ফ্যাশনে কথা হয় জনির সঙ্গে। কথার মধ্যেই এক ইউরোপীয়ান গ্রাহকের প্রবেশ। কথোপকথনে বোঝা গেলো পুরনো গ্রাহক, জনির সেবাতেও বেশ খুশি তিনি।
পাতায়াতে বাংলাদেশির সংখ্যা খুব বেশি নয়। জনি জানান, সব মিলিয়ে ১৩০ জনের মতো পেশাজীবী রয়েছেন। যার মধ্যে মাত্র ১৮ থেকে ২০ জন হবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী। তবে বাকিরা সবাই উদ্যোক্তা। এর মধ্যে বেশিরভাগেরই টেইলরিং ব্যবসা। আর গুটি কয়েকজনের রয়েছে রেস্টুরেন্ট।
টেইলরিং ব্যবসায় বাংলাদেশিদের বেশি সম্পৃক্ততার কারণ হিসেবে জনি বলেন, এখানে মূলত ভারতীয় ব্যবসায়ীরা টেইলরিংয়ে বেশি জড়িত ছিল। আর সে সময় এখানে অন্য কাজের সুযোগ বেশি ছিল না। এসব দোকানে কাজ করতে করতে এক সময় বাংলাদেশিরাও এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।
ঢাকার প্রেক্ষাপটে পাতায়ার টেইলরিংয়ের মান নিয়ে তিনি বলেন, এখানে সবচেয়ে বড় বিষয় সময়। আমরা এক দিনেই কমপ্লিট স্যুট তৈরি করতে পারি। আমাদের মাপটা ভাল হয়। এটা কাজের অভিজ্ঞতা। অনেক সময় ফিতায় মাপ না নিয়েও শুধু চোখের দেখায় মাপ করে ফেলি। আর এখানে কারিগররাও খুব দ্রুত কাজ করতে সক্ষম। সেলাই থেকে শুরু করে ওয়াশ সব কিছু এক দিনেই হয়ে যায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে এখানে কাপড়ের দামটা কম। আর মানও ভাল। খুব সস্তার মধ্যেই স্যুট তৈরি করা যায়। অনেক সময় পর্যটকদের জরুরি প্রয়োজনে একদিনে এই ডেলিভারি দেয়া সম্ভব করে তুলি।
২০১০ সালে থাই কণ্যাকেই বিয়ে করেন জনি। দোকান থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে বাসা। মোটরসাইকেলেই চলাচল করেন।
দেশে পরিবারের তেমন কেউ নেই, তাই দেশেও আসা হয় কম। পরিবারের অন্য সদস্যরা আমেরিকা প্রবাসী।
জনি বলেন, থাইল্যান্ডে এক সময় শক্তিশালী বাংলাদেশ কমিউনিটি ছিলো। পহেলা বৈশাখ, একুশে ফেব্রুয়ারি ও ১৬ ডিসেম্বর ব্যাংককের হাই কমিশনের উদ্যোগেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতো। তবে সময়ের সঙ্গে সেটি বিলীন হয়েছে। এখন সবাই নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৫
এমএন/জেডএম