ঢাকা: আমাদের বহু স্থাপনা আছে ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়া ও খেলা পরিচালনা না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এজন্য স্টেডিয়াম বা স্থাপনাগুলোতে ঠিকভাবে পরিচর্যার পাশাপাশি সেখানে নিয়মিত খেলার আয়োজনের মধ্যে দিয়ে সেটি টিকিয়ে রাখতে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন।
রোববার (০৩ মার্চ) রাতে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৪ এর প্রথম দিনের চতুর্থ অধিবেশনে যুব ও ক্রিয়া মন্ত্রণালয়ের কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
এ সময় সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি) উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক জেলায় স্টেডিয়াম আছে কিন্তু নানা ধরনের সংকট রয়েছে। স্টেডিয়ামগুলো পরিত্যক্ত রয়েছে এসব বিষয়ে ডিসিদের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ডিসিদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাবনা এসেছে, তার মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন জেলায় সুইমিংপুল দরকার, স্টেডিয়াম দরকার এবং ট্রেনিংব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করা কথা বলেছেন। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি বিষয়গুলো নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের আরও বলেছি আমাদের স্থাপনাগুলো আছে সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়মিত যাতে খেলা হয় সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। অনেক স্থাপনা আছে অনেক দিন খেলাধূলা হয় না দেখে নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য সেসব স্থানে নিয়মিত খেলা চালিয়া যাওয়া ও রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। আর সুইমিংপুল নির্মাণটা ব্যয় সাপেক্ষ। স্থাপনা শুধু করলেই হয় না, এটা পরিচর্যা করতে হবে। আমরা আধুনিক স্থাপনা করলাম কিন্তু সেটা ঠিকমতো পরিচর্যা করা হলো না তখন কিন্তু সেটা করে কোনো লাভ নেই।
এছাড়া ট্রেনিং এর বিষয়ে আমরাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় চিন্তাভাবনা করছে এটাকে আরও কিভাবে আরো যুগোপযোগী করা যায়। হয়তো এখানে কিছু পরিবর্তন আসবে।
পাপন বলেন, আমাদের বহু স্থাপনা রয়েছে, সেই স্থাপনাগুলো আমাদের ঠিকভাবে রক্ষনাবেক্ষণ করতে হবে। স্থাপনাগুলো পরিচর্যার পাশাপাশি সেখানে নিয়মিত খেলার আয়োজনের মধ্যে দিয়ে সেটি টিকিয়ে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা ডিসিদের বলেছি যে ক্রিকেটতো একটা অবকাঠামোর মধ্যে চর্চা হচ্ছেই। কিন্তু অন্যান্য যেই খেলার মধ্যে জনপ্রিয় খেলা রয়েছে যেমন ফুটবল, হা-ডু-ডু'র মতো জনপ্রিয় খেলাগুলো ঠিকভাবে চালিয়ে যেতে হবে এবং জোর দেওয়া হচ্ছে।
গ্রাম পর্যায়ে মাঠগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে যুব ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক উপজেলায় শেখ রাসেল স্টেডিয়াম আমরা করছি। এরমধ্যে ১২৫টি স্টেডিয়াম হস্তান্তর করা হয়েছে। আরও ১৮৬টির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরপর আরও ১৭৬টি করা হবে। কথা হচ্ছে মাঠ শুধু করলেই হবে না, সেটা দেখাশোনা, মাঠের পরিচর্যা এবং সেখানে নিয়মিত খেলা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়গুলো নজরে রাখতে হবে। এখন থেকে এগুলো নজরদারিত্বে না আনলে আস্তে আস্তে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। এসব মাঠের পরিচর্যা, দেখভাল করা নিয়মিত খেলা হচ্ছে কিনা এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের দিক থেকে যেকোনো ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে চেষ্টা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এরআগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে চারদিনের জেলা প্রশাসক(ডিসি) সম্মেলন-২০২৪ এর উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সম্পর্কিত কার্য-অধিবেশনে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানিযোগ্য পণ্য বহুমুখীকরণ, চামড়াজাত শিল্পের উন্নয়ন ও চামড়া রপ্তানির বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া, রোজার মাস সামনে রেখে তেল, চিনি ও চালের দাম নিয়ন্ত্রণ, প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করা এবং সার্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।
এবারের সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে থাকছে ৩৫৬ প্রস্তাব। প্রস্তাবগুলোর জনসেবা বৃদ্ধি, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনেন বিকাশ, আইন- কানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২২টি প্রস্তাব পড়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে। সম্মেলনে সর্বমোট অধিবেশন ৩০টি। এর মধ্যে কার্য-অধিবেশন ২৫টি (১টি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, ১টি স্পীকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময় এবং ১টি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সদয় নির্দেশনা গ্রহণ এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানিকতা ২টি। এছাড়া অংশগ্রহণকারী কার্যালয়: ১টি (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)।
এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। এজন্য সম্মেলনের প্রথম দিন (রোববার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘উন্নয়নে মাঠ প্রশাসন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২৪
জিসিজি/জেএইচ