বায়ার্ন মিউনিখ আর রিয়াল মাদ্রিদের ম্যাচকে বর্ণনা করা হয়েছিল দ্য ব্যাটেল অব রয়্যালস বা অভিজাতদের লড়াই হিসেবে। যাকে বলা হচ্ছে ইউরোপিয়ান ক্লাসিকো।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদ কেন সবার চেয়ে সেরা তার নমুনা দেখা গেল প্রথমার্ধেই। শুরুর চল্লিশ সেকেন্ডেই এগিয়ে যেতে পারত বায়ার্ন মিউনিখ। হ্যারি কেইনের পা ঘুরে দারুণ বল পেয়েছিলেন লেরয় সানে। তবে দূরের পোস্টে শট নিতে গিয়েই ভুল করলেন। রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিন করেছেন দারুণ এক সেইভ। কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে বধের পর আজ আবারও রিয়ালের ত্রাতা তিনি।
শুরুর ২০ মিনিট এভাবেই ছিল খেলা। জামাল মুসিয়ালা একাধিকবার রিয়ালের বক্সে হানা দিয়েছিলেন। কিন্তু কার্লো অ্যানচেলত্তির নিখাঁদ ইতালিয়ান ডিফেন্স স্বাগতিকদের হতাশ করেছে বারবার। হ্যারি কেইন নিজে বল পেয়েও জোরালো শট নিতে পারেননি। আর সানে বাজে টাচের খেসারত দিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। এত সুযোগের অপব্যবহারের শাস্তিই যেন রিয়াল দিয়েছে ২৩তম মিনিটে এসে।
টনি ক্রুসের থ্রু বল ধরে বক্সের কাছে দৌড়াতে থাকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ডান পায়ের শটে বায়ার্ন গোলকিপারকে পরাস্ত করে প্রথম গোলটি করেছেন।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে সমতা ফেরানোর সুযোগ এসেছিল বায়ার্নেরও। সরাসরি ফ্রি কিক থেকে হ্যারি কেইন শট নিলেও বাম প্রান্ত দিয়ে সেটি চলে যায় লক্ষ্যের বাইরে।
বিরতির পর ম্যাচের দৃশ্যপট বদলাতেও সময় নেয়নি। ৫১ মিনিটে গোলের প্রথম সুযোগটি পায় রিয়াল মাদ্রিদ। জুড বেলিংহ্যামের অ্যাসিস্টে বক্সের বাম প্রান্ত থেকে শট নিয়েছিলেন টনি ক্রুস। সেটি দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন বায়ার্ন গোলকিপার। তার পর চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বায়ার্ন। তাতে বায়ার্নের সম্ভাবনাও জোরালো হয়ে ওঠে! ৫৩ মিনিটে বায়ার্নকে ম্যাচে ফেরান প্রথম মিনিটে সুযোগ হাতছাড়া করা লেরয় সানে। তাকে অ্যাসিস্ট করেছিলেন কোনরাড লাইমার। ৫৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে এগিয়েও যায় তারা। স্পট কিকটি নেন হ্যারি কেইন। রিয়াল মাদ্রিদের লুকাস ভেসকেস বক্সের মধ্যে ফেলে দেন জামাল মুসিয়ালাকে। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছেন। তাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের চলমান মৌসুমে এমবাপ্পের সমান ৮ গোল হয়ে গেছে ইংলিশ তারকার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আট গোল করা প্রথম ইংলিশ ফুটবলার এখন তিনি। পেছনে ফেলেছেন সাত গোল করা স্টিভেন জেরার্ডকে।
৮১ মিনিটে বায়ার্নের বিপদ ডেকে আনেন কিম মিন জায়ে। ডিবক্সে রদ্রিগোকে ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেন রিয়ালকে এই ডিফেন্ডার। স্পটকিক থেকে গোল করতে সমস্যাই হয়নি ভিনিসিয়ুসের (২-২)। অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনাকে আরেকবার স্তব্ধ করেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা।
ম্যাচের বাকি সময় দুই দলই খেলেছে কিছুটা রয়েসয়ে। যেন রোমাঞ্চের বাকি পর্বটা মাদ্রিদে দ্বিতীয় লেগের জন্য জমিয়ে রাখতে চেয়েছে হ্যারি কেইন-টনি ক্রুসরা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২৪
এআর