শুরুতেই বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং বিপর্যয়। সেখান থেকে দলকে লড়াই করার জন্য সম্মানজনক স্কোর এনে দিলেন তাওহিদ হৃদয়।
দুবাইয়ে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৪ বলে ২২৮ রান তুলে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০০ রান করেছেন হৃদয়। তাছাড়া হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন জাকের আলি। ভারতের হয়ে ৫৩ রানে ৫ উইকেট শিকার করেছেন মোহাম্মদ শামি। জবাবে খেলতে নেমে ৪৬ ওভার ৩ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।
ম্যাচে মাত্র ২২৮ রানের পুঁজি নিয়েও লড়াই চালিয়ে গেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। জয়ের জন্য ২২৯ রানের টার্গেটের সামনে একটা পর্যায়ে ১৪৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ভারত। জমে ওঠে ম্যাচ। তবে এই চাপ আর ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা। প্রান্ত আগলে রেখে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন ওপেনার শুভমন গিল। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন লোকেশ রাহুল।
উদ্বোধনী জুটিতে ৬৯ রান তোলে ভারত। দশম ওভারে রোহিত শর্মাকে রিশাহ হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ৩৬ বলে ৪১ রানে ফেরেন রোহিত। রোহিত ফেরার পর ভারতের রানের লাগাম টেনে ধরেন রিশাদ হসেন-মেহেদি হাসান মিরাজরা। উইকেটে এসে শুরু থেকেই দেখে-শুনে খেলছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু এই টপ অর্ডার ব্যাটার থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না। ইনিংসের ২৩তম ওভারে রিশাদের বলে স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা সৌম্যের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন কোহলি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৮ বলে ২২ রান।
সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন শ্রেয়াস আইয়ার। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম ম্যাচেই ব্যর্থ হলেন। চারে নেমে ১৫ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। এই মিডল অর্ডার ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ২৮তম ওভারে ফিজের অফ-কাটার বুঝতে না পেরে বৃত্তের মধ্যেই ক্যাচ দিয়েছেন আইয়ার।
উইকেটে থিতু হলেও ইনিংসকে বড় করতে পারেননি বিরাট কোহলি। ২২ রানে রিশাদ হোসেনের বলে সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হন কোহলি। তবে গিল থোকেন অবিচল। মিডল অর্ডারে চটজলদি শ্রেয়াস আয়ার (১৫) ও অক্ষর প্যাটেল (৮) ফিরে গেলেও দলকে নিরাপদ রাখেন গিল।
ম্যাচে ফেরার একটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের বলে ব্যক্তিগত ১০ রানের মাথায় সহজ ক্যাচ দেন রাহুল। কিন্তু সহজ ক্যাচ মুঠোবন্দি করতে পারেননি জাকের। এই সুযোগ ভালোভাবে কাজে লাগায় ভারত। গিল-রাহুল জুটি শেষ করে দেন ম্যাচ। পঞ্চম উইকেটে ৮৭ রান যোগ করেন দুজনে। গিল অপরাজিত থাকেন ১০১ রানে। ২১ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় ভারত।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই চরম বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৩৫ রানেই ৫ উইকেটে হারিয়ে ফেলে তারা। আসা-যাওয়ার মিছিলে যুক্ত হন ওপেনার সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, ওপেনার তানজিদ তামিম ও মুশফিকুর রহিম। পাওয়ার প্লেতে রান হয় মাত্র ৩৯।
এ অবস্থায় বাংলাদেশের স্কোর শতরান পেরুবে কি না তা নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। এ অবস্থায় খাদের কিনার থেকে দলকে টেনে তোলেন হৃদয় ও জাকের আলী অনিক। ষষ্ঠ উইকেট ২১৭ বলের জুটিতে ১৫৪ যোগ করেন দুজনে। এটা চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। জাকেরের আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে ভাঙে এই জুটি। ১১৪ বলের ইনিংসে ৬৮ রান করেন জাকের। ইনিংসটি সাজান চার বাউন্ডারির সমাহারে।
জাকের বিদায় নেওয়ার পর লড়াইটা পুরোপুরি নিজের কাঁধে তুলে নেন হৃদয়। শারিরক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন তিনি। তবু কোনো কিছুই দমাতে পারেনি হৃদয়কে। সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই মাঠ ছাড়েন। হৃদয়ের আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ৪৮.৪ ওভারে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। তাকে শিকারে পরিণত করেন হার্ষিত রানা। ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া হৃদয়ের ইনিংসটিতে ছয় চারের সঙ্গে দুটো ছক্কার মার।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
এআর