ঢাকা: লা লিগায় নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে মোটামুটি হতাশ রিয়াল মাদ্রিদ। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠার সুযোগ নিয়ে মালাগার বিপক্ষে মাঠে নেমে কোনো গোল আদায় করতে পারেনি রোনালদো-ইসকো-জেসে-বেনজেমারা।
ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রায় সাড়ে ৭৫ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে রিয়ালকে হতাশায় ডোবান মালাগার গোলরক্ষক কামেনি। ডজনখানেক জোরালো শট রুখে দেওয়া কামেনির চমকে স্বাগতিক হিসেবে খেলতে নেমেও গোলের দেখা মেলেনি রিয়ালের। কামেনির দারুণ পারফর্মে বেনজেমা-রোনালদোর চোখের পানি ফেলাই বাকি ছিল। সিআর সেভেন খ্যাত রোনালদো যেন গোলবার খুঁজেই পাচ্ছিলেন না এ ম্যাচে। হাফ-ডজনবার গোলপোস্টের বাইরে বল মারেন তিনি।
রিয়ালের কোচ রাফায়েল বেনিতেজ শুরুর একাদশে মাঠে নামান নাভাস, কারভাজাল, ভারানে, নাচো, মার্সেলো, মদ্রিচ, টনি ক্রুস, ইসকো, জেসে, বেনজেমা আর রোনালদোকে।
শুরু থেকেই অতিথিদের চেপে ধরে রিয়াল। ম্যাচের ২৮ মিনিটে রোনালদোর একটি গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। দুই মিনিট পর ইসকোর বাড়ানো বলে শট নেন বেনজেমা। ফরাসি তারকার শটটি রুখে দেন মালাগার গোলরক্ষক কামেনি। যদিও অফসাইটের বাঁশি আগেই বেজে উঠে।
একের পর এক আক্রমণ করা রিয়ালের হতাশা বাড়িয়ে তোলেন মালাগার ক্যামেরুনের গোলরক্ষক কামেনি। ৩৪ মিনিটে হুয়ান কার্লোস আর ৩৬ মিনিটে রোনালদোর দুটি জোড়ালো শট রুখে দেন তিনি। ৪০ মিনিটের মাথায় রোনালদোর একটি শট গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
প্রথমার্ধে মালাগার ডি-বক্সে ডিফেন্ডারদের ব্যস্ত রাখলেও গোলের দেখা মেলেনি লা গ্যালাকটিকোদের। ফলে, গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় রিয়াল-মালাগা।
বিরতির পর ম্যাচের ৫০ মিনিটে লিড নেওয়ার সুযোগ এসেছিল মালাগার। রেসিওর একটি জোরালো শট রুখে দেন রিয়ালের গোলরক্ষক নাভাস। এর ৫ মিনিট পর রোনালদো-বেনজেমার ওয়ান-টু-ওয়ান পাস থেকে গোলের সুযোগ তৈরি হয় অতিথিদের। বেনজেমার শট নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন কামেনি।
৬০ মিনিটের মাথায় জেসের একটি নিয়ন্ত্রণহীন শট গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ৬৫ মিনিটে জেসের বাড়ানো বলে আবারো শট নেন রোনালদো। এবারো গোলবারের বাইরে দিয়ে বল চলে যায়। একই মিনিটে লাফিয়ে উঠা বলে তিনি হেড করলেও জালে বল জড়াতে পারেননি।
৭১ মিনিটে আবারো বেনজেমার শট, আবারো হতাশ রিয়াল, আবারো চমক কামেনির। পরের মিনিটে মালাগার আমরাবাত চারজন রিয়াল ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে শট নেন। গোলরক্ষক নাভাসও চেয়ে চেয়ে দেখেছেন আমরাবাতের শটটি। গোলবারের কিছুটা বাইরে দিয়ে বল চলে যায়। গোলবারের ডানপাশ দিয়ে বলটি চলে না গেলে মালাগাই প্রথম লিড নিতে পারত।
ম্যাচের ৭৬ মিনিটে ঘটে যায় সবচেয়ে ঘটনাবহুল বিষয়টি। ফের একবার বেনজেমা মালাগার পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন। রুখে দেন কামেনি। বল পান ইসকো। তিনিও শট নেন। এবারে মালাগার নায়ক কামেনিকে ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় জালের দিকে। ঠিক লাইন ক্রস করার আগে তা ক্লিয়ার করেন দলের আরেক ডিফেন্ডার। ক্লিয়ার করা বল পান আমরাবাত। প্রায় একাই বল নিয়ে রিয়ালের ডি-বক্সে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন তিনি। মার্সেলো বাধা দিলে কনুইয়ের গুঁতো দেন আমরাবাত। আর তাতেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় মালাগার এ তারকা ফুটবলারকে।
দশ জনের দল নিয়ে খেলতে থাকে মালাগা। ম্যাচের ৮২ মিনিটে মার্সেলোর দূরপাল্লার শট উড়ন্ত কামেনি ফিরিয়ে দিলে তা পান ইসকো। তিনি তা তুলে দেন কারভাজালকে। ব্যর্থ হয় কারভাজালের শট। বল পান রোনালদো। পর্তুগিজ তারকার নেওয়া শট চলে যায় আবারো গোলবারের বাইরে।
ম্যাচের ৮৭ মিনিটে রোনালদো আবারো সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন মাঠের বাইরে বল পাঠিয়ে দিয়ে। ৮৯ মিনিটে মদ্রিচ অফসাইটের ফাঁদে পা দিয়ে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে কারভাজাল বল তুলে মারেন রোনালদোকে উদ্দেশ্য করে। হেড করেন রোনালদো। এবারো বল গোলবারের বাইরে। পরের মিনিটে মার্সেলোর ক্রস থেকে বল পান পর্তুগিজ অধিনায়ক। এবারো গোলবারের উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে নিজের হতাশা প্রকাশ করেন রোনালদো। শেষ মিনিটে আবারো রোনালদোর শট। আবারো গোলবারের বাইরে দিয়ে বল চলে যেতে দেখে মালাগার গোলপোস্টকে প্রথমে লাথি মারেন তিনি, পড়ে কনুই দিয়ে সজোরো একটি ঘুসিও মারেন রোনালদো। ফলশ্রুতিতে হলুদ কার্ড দেখতে হয় সিআর সেভেন খ্যাত রোনালদোকে।
নির্ধারিত সময় শেষে গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। ৬ ম্যাচ খেলা রিয়ালের সংগ্রহ দাঁড়ালো ১৪ পয়েন্ট। সমান ম্যাচ খেলা বার্সার পয়েন্ট ১৫।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৭ ঘণ্টা, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫
এমআর