ঢাকা: ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটির প্রতিপক্ষ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আসরে গ্রুপপর্বের ম্যাচে মাঠে নেমেছিল জার্মানির ক্লাব বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখ। স্বাগতিক হিসেবে এ ম্যাচে ম্যানসিটিকে আতিথ্য দেয় জার্মান ক্লাবটি।
‘ডি’ গ্রুপে থাকা দুটি দলই নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছিল। ফলে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি আসরে প্রথম পয়েন্ট পেতে লড়াই চালায় স্বাগতিক-অতিথিরা। তবে, দুই আর্জেন্টাইন তারকা নিকোলাস অতামেন্ডি আর সার্জিও আগুয়েরোর গোলে ২-১ গোলের ব্যবধানে জয় পায় ম্যানসিটি। স্বাগতিকদের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন লার্স স্টিনদল।
ম্যাচের প্রথম লিড নিতে পারতো বরুশিয়া। খেলার ১৭তম মিনিটে পেনাল্টি লাভ করে দলটি। তবে, রাফায়েলের নেওয়া পেনাল্টি শট রুখে দেন ম্যানসিটির গোলবারের নিচে চীনের প্রাচির হয়ে দাঁড়ানো জো হার্ট। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রাফায়েলের শট প্রতিহত করেন হার্ট। ফলে, এ যাত্রায় পিছিয়ে পড়ার হাত থেকে বেঁচে যায় ইংলিশ জায়ান্টরা।
২১ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত অতিথিরা। আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরো দলকে লিড পাইয়ে দিতে পারতেন যদি না প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোলবারের বাইরে শট না নিতেন।
৩৬ মিনিটে আরেকবার লিড নেওয়ার সুযোগ পায় বরুশিয়া। এবারেও রাফায়েলের হাত ধরে গোল আসতে পারত। হার্টের দারুণ পারফর্মে গোলবঞ্চিত হতে হয় স্বাগতিকদের। ৪২ মিনিটে আগুয়েরোর বানানো বলে হেড করেন ডেভিড সিলভা। তবে, প্রস্তুত ছিলেন বরুশিয়ার গোলরক্ষক সুমার। দুই মিনিট পর ডি ব্রুইন গোলবারের অনেক উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দিলে কোনো গোলের দেখা মেলেনি ম্যানুয়েল পেল্লেগ্রিনির শিবিরে।
প্রথমার্ধে গোলশূন্য অবস্থা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
ম্যানসিটির হয়ে এ ম্যাচে শুরুর একাদশে মাঠে ছিলেন জো হার্ট, সাঙ্গা, দেমিসিলিচ, অতামেন্ডি, কোলারভ, ইয়াইয়া তোরে, ফার্নান্দিনহো, ডি ব্রুইন, ডেভিড সিলভা, রাহিম স্টারলিং এবং সার্জিও আগুয়েরো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তোরের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন ফার্নান্দো।
৪৭ মিনিটে আরেকবার রাফায়েলের জাদু। প্রায় মধ্যমাঠ থেকে উড়ে আসা বল নিয়ে ম্যানসিটির বক্সে প্রবেশ করেন তিনি। তবে, এবারো তার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় জো হার্ট। রাফায়েলের নেওয়া জোরালো শট ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন তিনি।
৫৪ মিনিটে প্রথম লিড নেয় জার্মান দলটি। গতিময় ফুটবলের দারুণ ছন্দ দেখিয়ে দলগতভাবে গোল আদায় করে নেয় বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখ। জুলিয়ান ক্রবের ডিফেন্স চেঁড়া পাসে বল পান লার্স স্টিনদল। ম্যানসিটির পেনাল্টি এরিয়ায় দাঁড়িয়ে জোরালো শট নেন তিনি। এবারে আর হার্ট বল রুখে দিয়ে দলকে বাঁচাতে পারেননি। ফলে, ১-০ তে এগিয়ে যায় বরুশিয়া।
৬৫ মিনিটে সমতায় ফেরে ম্যানসিটি। আর্জেন্টাইন তারকা নিকোলাস অতামেন্ডির গোলে ম্যাচের ফল দাঁড়ায় ১-১। কর্ণার কিক থেকে উড়ে আসা বলে দেমিসিলিচ শট নেন, সেটি ঠিকমতো না হওয়ায় হাঁটুতে লাগে অতামেন্ডির। আর তাতেই বল বরুশিয়ার জালে প্রবেশ করে। তবে, স্বাগতিকদের এক ডিফেন্ডার হাফভলি করে বল ফিরিয়ে দিলেও তা গোললাইন অতিক্রম করে।
খেলার ৭৫ মিনিটে বরুশিয়ার ডি-বক্সে জটলা পাকিয়ে গোল আদায় করার সুযোগ পায় ম্যানসিটি। তবে, জটলা থেকে ফার্নান্দো শট নিলেও তা প্রতিহত করেন স্বাগতিক গোলরক্ষক সুমার। পরের মিনিটেই আগুয়েরো সুযোগ পান দলকে প্রথমবার লিড এনে দেওয়ার। তবে, তার শটটিও রুখে দেন ‘সুপার’ সুমার।
৭৭ মিনিটে ডি ব্রুইনের শট গোলবারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। ৮১ মিনিটে তার থেকে বল পেয়েও আগুয়েরো গোল আদায় করতে পারেননি। ৮৫ মিনিটে নাভাসের তুলে মারা বলে হেড করেও গোলবঞ্চিত হন স্টারলিং। গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায় লিভারপুলের সাবেক তারকার হেড থেকে যাওয়া বল।
৮৯ মিনিটে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে বল নিয়ে প্রবেশ করেন আর্জেন্টাইন তারকা স্ট্রাইকার আগুয়েরো। তাকে অবৈধ বাধা দিয়ে ফেলে দিলে পেনাল্টি লাভ করে ম্যানসিটি। সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আগুয়েরোই দলকে ২-১ এ এগিয়ে নেন।
ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংলিশ জায়ান্ট দল ম্যানসিটি।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪২ ঘণ্টা, ০১ অক্টোবর, ২০১৫
এমআর