ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তারার ফুল

শুটিং লোকেশন থেকে

‘আমি পুরুষ মানুষ এখন খুব ভয় পাই’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৫
‘আমি পুরুষ মানুষ এখন খুব ভয় পাই’ ‘রেইনবো’ টেলিছবির সেটে রিচি, স্বাগতা ও প্রভা / ছবি: নূর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চিত্রনাট্যের পরপর কয়েকপাতা জুড়ে পুরোপুরি ডার্ক। কিছুটা গতানুগতিকতাও।

অন্ধকার রাত। এক মেয়ে লাফিয়ে পড়তে চায়, আত্মহত্যা করতে চায়। পৃথিবীর যাবতীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটানো ছাড়া কোনো উপায় আপাতত দেখছে না সে। আরেকজন নারী তাকে সাহস জুগিয়ে, খানিকটা ধমকে, ফিরিয়ে আনে। ‘রেইনবো’ এভাবে শুরু হচ্ছে।

তারপর আরও খানিকটা ভেতরে ডুব দিলে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে যেন! মনে হবে, ‘নাহ, আর পারা যাচ্ছে না। ’ কিন্তু মাহমুদ দিদার এমনভাবে গল্পকে টেনে-হিঁচড়ে, সাজিয়ে সামনে এনেছেন; উঠে যাওয়াও চলবে না। খুব দ্রুত, অনেকগুলো প্রশ্ন, পরপর ছুটে আসবে। প্রশ্নের তোপে বিধ্বস্ত হতে হতে নচিকেতার লাইন মনে এসে আরও খোঁচা দেবে কেবল, ‘এ গান (পড়তে হবে, এ কাহিনী) না ভালো বলে, উঠে যদি যাও চলে, পারবে কি এড়াতে বিবেকের হাত। ’

মাহমুদ দিদার যদিও বলেছিলেন, এটি ‘নারী স্বাধীনতা, আত্মনির্ভরশীলতা এবং পুরুষের আধিপত্য স্বীকার না করা’র গল্প। কিন্তু নারী স্বাধীনতার গল্প শোনানোর আমন্ত্রণ জানিয়ে এভাবে পত্রিকার পাতায়, বিজ্ঞাপনে, গান, সিনেমায় নারীকে পণ্য বানানো, আধিপত্যবাদী ‘পুরুষ’-এর কদর্য চেহারা, ভেতরে ভেতরে নারীর ফুঁসে ওঠার চিত্র দেখিয়ে দেবেন; সেটা কিন্তু প্রথমে কেউ ঘুণাক্ষরে আঁচও করতে পারবেন না।
prova
‘রেইনবো’ টেলিছবির ম্যাজিকটা সেখানেই। নির্মাতা মাহমুদ দিদার রিচি সোলায়মান, সাদিয়া জাহান প্রভা ও স্বাগতাকে নিয়ে যেদিন দৃশ্যধারণ শুরু করলেন; সেদিনই বাংলানিউজের ক্যামেরার সেখানে হাজির। প্রভা, কাহিনীতে যে নারী মাতাল স্বামীর অত্যাচারে পিষ্ট হয়ে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন, তাকে ধমকাচ্ছেন রিচি। রিচি এখানে সাংবাদিক, আত্মনির্ভরশীল, স্বাধীনচেতা নারী। প্রভাকে সাহস নিয়ে লড়াইয়ের জন্য, প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুত হতে বলছেন রিচি। জবাবে প্রভা কেবল কাঁদছেন। কণ্ঠে কান্না জড়িয়ে বলছেন, ‘ও আমাকে এখানেও দেখে ফেলেছে। ...আমি এখন পুরুষ মানুষ খুব ভয় পাই। ’

গল্পের আরও একজন যিনি, স্বাগতা, তার কাজ ছিলো বিকেলের একটু পরে। পরপর কয়েকরাত ঘুমাতে পারেননি, প্রচন্ড মাথাব্যথা। মেকাপরুমে বসে ঝিমুচ্ছিলেন, গল্প করছিলেন। আধাঘণ্টার জন্য বাড়ি থেকে ঘুরেও এলেন একফাঁকে। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন যখন, হাতে গিটার ঝুলিয়ে; একেবারেই চরিত্রে ডুব। মনেই হয়নি এই মেয়েটা একটু আগে পরিচালককে অনুরোধ করছিলেন, ‘আমার কাজটা কি কালকে করে নেয়া যায়? আজকে মাথাব্যথা। কাল খুব সকালেই চলে আসবো। ’

একটা দৃশ্যের কাজ শেষ হচ্ছে যখন, একজন খানিকটা অবসর পেয়ে চায়ে ঠোঁট ডুবিয়ে শরীর এলিয়ে দিচ্ছেন; সঙ্গে সঙ্গে হাজির হচ্ছেন সহকারি পরিচালক। হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন একটা পৃষ্ঠা। ও পৃষ্ঠা জুড়ে ছন্দ। অনুপ্রেরণা। বাঁচার নেশা। বন জভির ‘ইটস মাই লাইফ’-এর লিরিক। গল্পের শেষে, তিনজনই যখন গাড়িতে চড়ে, জীবনের সমস্ত জটিলতা থেকে মুক্ত হয়ে, শহর ছাড়ার পথ ধরবে; তখন তারা গাইবে ‘বেটার স্টান্ড টল, হোয়েন দে আর কলিং ইউ আউট, ডোন্ট বেন্ড, ডোন্ড ব্রেক, বেবি, ডোন্ট ব্যাক ডাউন...। ’ ‘রেইনবো’ গল্পের মুক্তি এখানেই।

জানিয়ে রাখা ভালো, টেলিছবি ‘রেইনবো’ প্রচার হবে আগামী কোরবানির ঈদে, বাংলাভিশনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৫
কেবিএন/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ